কাল্লুজীর বিয়ে
ডঃ জি০ সি০ ভট্টাচার্য, বারাণসী, উত্তর প্রদেশ,
আমার পরীর দেশের রাজকুমার অপরূপ সুন্দর তেরো বছরের ভাইপো
চঞ্চলকে সেদিন রাতে গল্প শোনাবার আগে একটা শ্লোক জিজ্ঞাসা
করেছিলাম।
‘বলো তো চঞ্চল যো মে প্রতিবলো…পুরো শ্লোকবাক্যটা কী? কিসের
শ্লোক? তাৎপর্যই বা কী?’
বেশী বুদ্ধিমান ছেলেদের এমনিধারা প্রশ্ন করতেই হয় বিশেষ করে তাকে
গল্প শোনাবার কথা থাকলে আর সেই ইচ্ছে না থাকলে বা কোন গল্প
মনে না পড়লে।
এমনি আর একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম ‘দেবা ন জানন্তির…’ পুরো
শ্লোক আর তার অর্থ।
অপরূপ সুন্দর হেসে চঞ্চল বলেছিল-‘কাকু, তোমার প্রশ্ন কিন্তু আউট
অফ সিলেবাস, সুতরাং ন্যায় সঙ্গত নয়। তবে উত্তরটা আমি দিতে পারি
আমাকে একটা ভারী ভয়ের বা ভূতের গল্প শোনালে।
আমি রাজী হতে চঞ্চল বলেছিল –‘স্ত্রিয়া চরিত্রং,পুরুষস্য ভাগ্যং, দেবা
ন জানন্তি কুতো মনুষ্যাঃ’ অর্থাৎ…’
সে কথা থাকগিয়ে।
আজকের কথাটাই আগে বলি । সে গল্প না হয় পরে বলা যাবে একদিন
আর পরাজিত হয়ে আমার শোনানো অতি ভারী জলের, মার্ডারের জন্য
অপপ্রযোগের কথাও। ভৌতিক অপরাধী নাম ছিল সে গল্পের।
সে রাতে নেমন্তন্ন খেয়ে বাড়ী ফিরতে আমাদের রাত দশটা বেজে
গিয়েছিল।
কাল্লুজীর ছেলে লাল্লুর মুন্ডন সংস্কার ছিল সেদিন। তাই নেমন্তন্ন।
শীতকালে দশটাই অনেক রাত। তার ওপরে আবার টিপটিপ করে বৃষ্টি
পড়া শুরু হতেই আমি পালিয়ে আসবার পথ পাইনি। তাও অটো তে
এলে কি হবে? গলির মধ্যে তো আর অটো আসবে না। বৃষ্টিতে ভেজা
আমাদের ঠেকায় কে? তবু ভাগ্য ভাল যে বৃষ্টিটা যখন চেপে এল,
তখন আমরা বাড়ীর কাছে এসে গিয়েছিলাম প্রায়। তবু ও হাত পা
ঠান্ডা বরফ হবার জোগাড় আমাদের।
এসেই আমি রুম রুমহীটার আর ব্লোয়ার দুই অন করে দিলাম। তবে
ঘর গরম হতে একটু সময় তো লাগবেই। সেই ফাঁকে অপরূপ সুন্দর
দুধবরণ সুটেড বুটেড ছেলে চঞ্চল চোখ থেকে বিদেশে তৈরী বিশেষ
নাইট ভিজন গ্লাসটাকে খুলে রেখে মৃদু হেসে বলল-‘কাকু, তোমাকে
আমি একটা প্রশ্ন করব, কাকু?’
যাকে বলে ইন্টেলিজেন্টস ম্যানারস বা বুদ্ধিমানের আদিখ্যেতা তাই আর কি?
বললুম-‘কর, তবে তোমার প্রশ্নটা আমি জানি কিন্তু’।
‘তুমি না কাকু, একটা দারুণ রকমের ইন্টেলিজেন্ট
ছেলে…হিঃহিঃহিঃ…..আচ্ছা উত্তরটাই বলো তবে’, টাইয়ের নট খুলতে
খুলতে চঞ্চল বলল।।
‘তার জন্যে আগে তোমাকে একটা শ্লোকের অর্থ বলতে হবে কিন্তু,
চঞ্চল’।
‘তাই বুঝি, বেশ। বলো তোমার শ্লোক’…..
টাই আর ভিজে কোট হ্যাঙ্গারে রেখে চঞ্চল বলল।
আমি বললুম শ্লোকাংশটুকু।
শুনে নিজের গোলাপী রঙের দামী শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে থেমে
গেল আমার পরীর দেশের রাজকুমার অপরূপ সুন্দর ছেলে। খিল খিল
করে হেসে ফেলল সে পরক্ষনেই।
নিজের পদ্মপত্রের মতন টানা টানা কাজল কালো চোখ দুটোকে আরো
বড় বড় করে চঞ্চল বলল-‘ কাকু, আজকেও তোমার প্রশ্ন কিন্তু আউট
অফ সিলেবাস। তোমার তো কাকু না, মনেই থাকে না যে আমি সাত
ক্লাশে পড়ি মাত্র আর আমাদের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে মাত্র একখানা
টেক্স্ট বুক হিন্দী-সংস্কৃতের। তবে বাদলের সঙ্গ গুনে উত্তরটা আমি জানি
কাকু। আমাকে একদিন বাদল বলেছিল। বাদল তো খুব ভক্ত ছেলে আর
অহংকার ও নেই। তাই ও অপরাজেয়’।
এই রে, সেরেছে। একে মা মনসা, চঞ্চল নিজেই একটা দারুণ বুদ্ধিমান
ছেলে হয়েছে তায় আবার ধুনোর গন্ধ হল বাদল নামের সুপার জিনিয়াস
বন্ধু আছে একটা তার। মনেই ছিল না যে।
‘আমি আগে বাথরুম থেকে হাত, মুখ,পা ভালো করে ধুয়ে আসি
কাকু। তারপরে বলছি’…
দামী নীলরঙের অন্তর্বাস পরিহিত দুধবরণ ছেলে বাথরুমে চলে যেতে
আমি ও হাত পা গরম করবার পরে ভিজে বাইরের পোষাক সব ছেড়ে
রাত্রিবাস পরে বিছানা ঠিক করে মশারী ফেলে তৈরী হয়ে নিলুম
তাড়াতাড়ি। বেশ ঘুম আসছে। ভরা পেটের এই এক মহা দোষ।
তারপরে ওয়াশ বেসিনে ব্রাশ করে হাত মুখ ও ধুরে নিলুম।
ততক্ষনে তোয়ালেতে হাত মুখ মুছে চঞ্চল এসে বলল-‘কাকু, আজ
পায়চারী করবে না তোমার?’
‘আজ একটুক্ষন করব’। বলেই নীচু হয়ে আমার সিল্কি ডল ছেলেকে
বুকে জড়িয়ে ধরে অনায়াসে কোলে তুলে নিলুম।
‘আমার প্রশ্নটা, কাকু…?
রূপকুমার ছেলেকে খুব করে আদর করতে করতে বললুম- ‘ কাল্লুজীর
মতন কালো ও অসুন্দর লোকের ভাগ্যে অমন ঝাঁ চকচকে সুন্দর বৌ কি
করে জুটল? এই তো চঞ্চল?‘
‘তুমি কি করে জানলে, কাকু?’
‘তুমি অবাক হয়ে দু’জনের দিকে তাকিয়েছিলে তাই দেখে. আর কী?
এবার আমার শ্লোক…’
‘কাকু, শ্লোক বাক্যটা হল- যো মে প্রতিবলো লোকে, সো মে ভর্ত্তা
ভবিষ্যতি’।অর্থ হলো-যে এই দুনিয়াতে আমাকে শক্তিতে যে হারাতে
পারবে, সেই আমার স্বামী হবে মানে তাকেই আমি বিয়ে করব। এই
আমার পণ। শ্লোকটা দুর্গাশপ্তশতীর বা চন্ডীর। বলেছেন মা দুর্গা স্বয়ং
আর বলেছেন অসুররাজ দুর্গাসুরকে। যাকে নিধন করে দেবী চন্ডীর নাম
হয়েছে দেবী দুর্গা, তাকে অমরত্ব দিতে। ঠিক তো, কাকু? বাদল তো
মায়ের ভক্ত। চন্ডী পড়েছে। তাই জানে। এবারে আমার প্রশ্নের উত্তর,
কাকু’?
‘আমার যে ঘুম পাচ্ছে বেশ। তার কী? গল্প হবে কী করে, চঞ্চল?’
‘সে তো আমার ও পাচ্ছে। ছোট্টবেলা থেকে কোলে নিয়ে গল্প শুনিয়ে
ঘুম পাড়িয়ে অভ্যাস করিয়েছ তো তুমিই, কাকু। চল এখন শুয়ে পড়ি
গিয়ে। তবে গল্পটা বলতেই হবে, নইলে তোমাকে আদর করে অস্থির
করব। আমি তোমাকে ঘুমোতে দিলে তো?’
‘চল শুয়ে তো পড়ি গিয়ে’…বলে চঞ্চলকে নিয়ে মশারীর মধ্যে ঢুকে
পড়লুম চট করে। পরীর দেশের রাজকুমার ছেলে আমার গলা দুই নরম
বাহু দিয়ে জড়িয়ে ধরে নিজের পাতলা লাল ঠোঁট আমার গালে ঠেকিয়ে
বলল –‘এখন কিন্তু ঘুম না কাকু, আগে গল্প আমার চাই …’
আমি চুপ । করুক এখন এই দারুণ রূপবান ছেলেটা যত পারে আদর
আমাকে।
তা সত্যিই চঞ্চল দেখি এককথার ছেলে।
পনেরো মিনিট পরে দুধবরণ ছেলের মসৃন পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে আদর
করে আরো কাছে টেনে এনে জড়িয়ে ধরে বললুম-‘হ্যাঁ চঞ্চল, অনেক
হয়েছে, আমার ঘুম কমেছে,…গল্পটা না হয় কাল্লুজীর ভাষাতেই বলি।
বসন্ত বাহার ক্যাফেতে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ফুলকপির সিঙ্গাড়া ও
ব্রেড পকৌড়া ছাড়া ও গাজরের হালুয়া আর আইসক্রীম খাইয়ে আদায়
করেছিলাম গল্পটা।
কাল্লুজী বলতে শুরু করেন-‘আরে পন্ডিতজী, আবার এত সবের কি
দরকার ছিল?
‘তা শোন তোমার ভাবিজীর কথা। মেয়েটা দেখতে ভাল আর ফরসা
হলে কি হয়, ভয়ানক জেদী আর অহংকারী রে পন্ডিতজী। বড়লোকের
মেয়ে হ’লে যা হয় আর কী। তা আমি ও তো কিছু কম জেদী ছেলে
নই রে ভাই। আমার ও নাম তো কাল্লুরাম। চাকরী ও একটা সরকারী
জুটে গিয়েছিল আরক্ষণের কল্যাণে। আর যায় কোথায়? আমাদের জাতে
আবার অল্প বয়সেই বিয়ে থা হয়ে যায়। তা তো জানাই আছে সবার রে
পন্ডিতজী। গ্রামে থাকলে তো কথাই নেই। বারো বছর বয়সেই আমার
বাবার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন আমার গ্রাম্য ঠাকুরদাদা আর তখন
গৌনাপ্রথা ও না থাকায় মাত্র তেরো বছর বয়সেই মেয়ে ও হয়ে
গিয়েছিল একটা’।
‘গৌনাপ্রথা কি কাকু?’
‘সে হল গিয়ে নিষিদ্ধ প্রথা বাল্য বিবাহের এক আধুনিক আনুষঙ্গিক।
চাইল্ড ম্যারেজ আইন বহির্ভূত ঘোষণা হ’বার পরে উৎপত্তি এর। এতে
ব্যবস্থা করা হয় যাতে বিয়ে বাল্যকালেই হলে ও মেয়ে বড় মানে
আঠারো বছরের না হলে শ্ব্শুরবাড়ী যাবে না। দ্বিরাগমন আর কি। এই
প্রথা উত্তর ভারত ছাড়া কর্ণাটক ও অন্যান্য দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যে ও
প্রচলিত আছে আজ ও। অল্প বয়সী ছেলে মেয়েদের বিয়ের পরেই বাচ্ছা
না হয় সঙ্গে সঙ্গে যাতে, তাই এই ব্যবস্থা’।
‘আচ্ছা, কাকু আমার বয়স ও তো তেরো বছর হয়েই গেছে, তাহলে
আমার ও কি বাচ্ছা হতে পারে এখনই কাকু?’ অপরূপ সুন্দর ছেলে
টানাটানা চোখদুটো আর ও বড় বড় করে প্রশ্ন করল আমাকে। কৈশোর
জিজ্ঞাসা আর কী?
ছেলেটাকে আদর করে বললুম-‘হ্যাঁ চঞ্চল, বৈজ্ঞানিকদের মতে কমপক্ষে
আনুমানিক সাড়ে এগারো বছর বা বারো বছর বয়স হয়ে গেলেই
মেয়েদের ও সোওয়া বারো বা সাড়ে বারো বছর বয়সের পরে ছেলেদের
বিয়ে দিলে স্বচ্ছন্দে বাচ্ছা হয়ে যেতে পারে, এই উষ্ণদেশে। তবে মা
বাবারাই তো ছোট্ট, বাচ্ছা বড় আর ভালো স্বাস্থ্যবান হবে কি করে?
‘আচ্ছা কাকু, তা’হলে কাল্লু আংকল এতদিন বিয়ে করেননি কেন’?
‘চাকরীর না পাবার অজুহাতে করেননি। তাই চাকরী হতেই বাড়ীর
সবাই উঠে পড়ে লাগল কাল্লুজীর বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজতে। তা ওদের
জাতে তো সব মেয়েই হয় বেশ কালো, কাল্লুজী বেঁকে বসলো কালো
মেয়েকে বিয়ে করবে না বলে।
আর তেমনিধারা এক বিষম মেয়ে ও ছিলেন বর্তমান কাল্লুপত্নী। সাধারণ
কোন ছেলেকেই তার পছন্দ হতো না। নানা টাল বাহানা করে যে সব
ছেলেরা বা তাদের অভিভাবকেরা তাকে বিয়ের জন্য দেখতে আসতেন,
তাদের পত্রপাঠ যেন তেন প্রকারেণ বিদেয় করে ছাড়তো সে বাড়ী থেকে।
তাই বিয়ে আর হয়েই উঠত না মেয়েটার। তার মা বাবা আত্মীয়
স্বজন সব্বাইকার তো মাথায় হাত।
রূপ গুণ বিদ্যা বুদ্ধি সব থাকা সত্বে ও অসাধারণ পাত্রের প্রাপ্তির আশা
করবার জন্য বর আর জুটতো না তার। গবেট ছেলেকে সে বিয়ে
করবেই না। মা বাবা অবধি বিরক্ত হয়ে উঠলেন মেয়েটার’।
‘কাল্লুজীর অফিসের তিন জন কর্মচারী ও প্রত্যাখ্যাত ও অপমানিত
হয়েছিলেন মেয়েটার বাড়ী গিয়ে। তাঁরা বিষম রেগে ছিলেন। সকলে মিলে
এক ফন্দী আঁটলেন তাঁরা এবারে’।
‘চঞ্চল, তুমি কালীদাস ও বিদ্যোত্তমার বিয়ের গল্প জান তো?’
‘হ্যাঁ কাকু, শাস্ত্রার্থে যে তাঁকে হারাতে পারবে তিনি তাঁকেই বিয়ে
করবেন, এই পণ ছিল বিদ্যোত্তমার ও’।
‘এখানে ও সেই যো মে প্রতিবলোর ব্যাপার চঞ্চল। মেয়েদের
সাইকোলজীই হচ্ছে আলাদা জিনিষ। মা দুর্গা ও তো একটা মেয়েই বটে, না তো কী?’
‘সে যাক। কাল্লুজীকে তাঁর সহ কর্মিরা বললেন-‘দেখ কাল্লুরাম, তুমি
তো খুব বাহাদুর আর বুদ্ধিমান ছেলে। তুমি যদি ওই মেয়েটাকে
কোনমতে জব্দ করতে পার তবে আমরা তোমাকে সবাই মিলে নগদ বিশ
হাজার টাকা দেব। কাল্লুজী তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় বললেন -‘মাত্র
এই কথা? এ তো আমার বাঁ হাতের খেলা। অবশ্যই হয়ে যাবে কাজ।
কিন্তু…. কিছু আগাম না দিলে…মানে খরচাপত্র আছে তো?’
‘কাল্লুজীর সহকর্মিরা তখন নিজেদের অপমানের জ্বালায় এক্কেবারে মরিয়া।
বললেন-‘ তা বেশ, এই নাও, তিন হাজার টাকা। এখন লেগে পড়
দেখি, হেরে গেলে কিন্তু ফেরৎ দিতে হবে এই টাকা আর আমরা সুদ ও
নেব। না না টাকায় নয়, তোমার মাথা মুড়িয়ে দিয়ে খানিকটা ঘোল
ও ঢেলে দেব, এই মাত্র।
শুনেই রূপকুমার চঞ্চল খিল খিল করে হেসে ফেলল আর আমি ও ঘুমের
ভান করলুম খানিক। তা ঘুম ও বেশ পাচ্ছিল আমার। বাইরে বাদলা
হাওয়া আর জলবৃষ্টি অবাধে চলছিল। ঘরে হীটার আর ব্লোয়ার না চললে
হাড় হিম হয়ে যেত আমাদের।
গল্প বলা বন্ধ হতেই ছেলেটা আমার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
‘ও কাকু, আবার ঘুম দিচ্ছ তুমি। আমি কিন্তু হীটার নিভিয়ে দেব,
কাকু। আগে গল্পটা শেষ কর, তারপরে ঘুমোতে পাবে তুমি’।
‘হচ্ছে না তো শেষ, আমার বুঝি ঘুম পেতে নেই?’
‘ছেলেকে যেমন অভ্যাস করিয়েছ নিজেই, তার ফল ভুগবে কে শুনি?
তাই তো এখন কেউ আর গল্প বলবার বা শোনবার ধারই ধারে না
আধুনিক পরিবারে। আমার মায়ের ও তো এইসব গুণ ও নেই। বাপী
তো কাজ নিয়েই ব্যস্ত। ছেলেটাকে কাকুর ঘাড়ে গছিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত।
সেই জন্যেই তো আজকালকার ছেলেমেয়েরা ও বড় হয়ে সব নিজের
কাজে ঘুরতে থাকছে। মা বাবাকে দেখে না তারা ও। ঠিক করে’।
অতি সুন্দর ছেলের তর্ক শুনে আমি চুপ। এক্কেবারে ঠিক কথা বলেছে
এই বাচ্ছা ছেলেটা। আধুনিক ভারতীয় সমাজ দুর্দশাগ্রস্থ হয়েছে, নিজের কর্মফলেই।
বললুম-‘এইবার কাল্লুজীর ভাষাতেই শেষটা বলি শোন চঞ্চল’।
‘কাল্লুজী গরম ব্রেড পকৌড়াতে কামড় দিয়ে বললেন-‘আরে বুঝলে
পন্ডিতজী, নগদ তিন হাজার হাতে পেয়ে আমি ও গোলগপ্পার মতন গপ
করে কসম খেয়ে নিলুম যে ওই মেয়েকে সোজা করে ছাড়ব এক্কেবারে।
তা কিন্তু ঠিক। নইলে কাল্লুর মতন ছেলেকে যদি হাতে টাকা পেয়ে ও
আবার ফেরৎ দিতে হয় তা ‘হলে সে তো অতি অধঃপতন তার। কিন্তু
করিটা কী? প্রথমেই নিলুম তিন দিন ছুটি। নাঃ ক্যাজুয়াল লিভ ও
নয়। স্রেফ বড়বাবুকে বলে দিলুম যে কাজে আসতে পারব না তিনদিন,
হোম ওয়ার্ক করতে হবে অনেক আমাকে। টাকা যখন দিয়ে ফেলেছে একবার আমাকে তখন ছুটি না দিয়ে যাবে কোথায় আর’।
‘তার পরদিন থেকে মেয়েটার পাড়ায় গিয়ে একটু ঘোরাঘুরি শুরু
করলুম আমি। প্রায় দিনই কেউ না কেউ বিবাহার্থী আসত মেয়েটার
বাড়ীতে তো। একজন রিজেকক্টেড ক্যান্ডিডেটকে ধরে ফেললুম আমি। সে
তখন রেগে আগুন, তেলে বেগুন অবস্থায়। চা বিস্কুট খাইয়ে তার মাথা
ঠান্ডা করাতে হ’লো। তারপরে জানতে চাইলুম- ভায়া, রিজেক্টেড হলে
কি করে বল দেখি।
ব্যাজার মুখে ছেলেটা বলল- ‘আরে আমার কি দোষ? লোকে মেয়ের
নাম টাম জানতে চায় না?’
‘অবশ্যই চায়। তারপর?’
‘জিজ্ঞাসা করলুম –পড়াশুনা মানে লেখাপড়া জান তো? কতদূর করেছ?’
‘মেয়েটা বলল- আপনার পড়াশুনা খুব করেছে এমন মেয়ে চাই বুঝি?
তাই বলুন। তা আমি তো অচল। আপনাকে আমার টিউটর দিদিমণির
ঠিকানা আর মোবাইল নম্বর দিয়ে দিচ্ছি এখনই, চলে যান। পছন্দ হয়ে
যাবে আপনার ঠিক’।
বলেই উঠে চলে গেল অন্য ঘরে আর চাকরকে দিয়ে এই কাগজটা
পাঠিয়ে দিল’।
‘হুম। তা এখন তুমি কি করবে?’
ছেলেটা রাগ করে মুখটাকে বেগুনপোড়ার মতন করে বলল-‘বাড়ী যাব।
আবার কী করব, শুনি? আমার ভারী বয়েই গিয়েছে ওর ধাড়ী
মাষ্টারণীকে বিয়ে করতে যেতে। আমি কালই নিজের ব্যান্কে গিয়ে জয়েন
করব। একটা সি০এল০ আর গাড়ীভাড়া গোল্লায় গেল আমার ওই
জাঁহাবাজ সুন্দরী মেয়ের চক্করে পড়ে। বিয়ের না নিকুচি করেছে’।
প্রথমদিন এই অবধিই লাভ।
আবার পরের দিন কাল্লু চক্কর শুরু হয়ে গেল।
সেদিন ধরলুম এক স্কুল মাষ্টারকে।
তা তিনি ও দেখি বেজায় খাপ্পা। কথা বলতে যেতেই বললেন- স্ট্যান্ড
আপ অন দি বেঞ্চ। ইডিয়ট। তা অতি কষ্টে চায়ের কথা বলে নিয়ে
গিয়ে বসালুম গুন্ডাদার চায়ের দোকানে। মাথা ঠান্ডা হতে জানতে চাইলুম-
স্যার, আপনি তো এতবড় একজন বিদ্বান প্রোফেসার। মেয়ে দেখতে এসে
মেয়ের বিষয়ে জানতে কিছু প্রশ্ন তো করবেনই। আপনার প্যশ্নটা কি ছিল, স্যার?’
‘কি আবার? নাম , বাপের নাম, ঠাকুরদার নাম, জাত গোত্র, আদি
নিবাস এই সবই ওর মা বাবাই বলে ছিল। আমি শুধুমাত্র জিজ্ঞাসা
করেছিলাম রান্নাবান্না করতে জানে কি না?’
‘তাতেই হয়ে গেল। উড়ন তুবড়ী মেয়ে লাফিয়ে উঠে বলল-আপনি বুঝি
খুব পেটুক মানুষ। তা এক কাজ করুন আপনি। আমি তো অচল।
আপনি আমাদের রান্নাদিদিকে বিয়ে করে ফেলুন দিকি চট করে। যা ভাল
পোলাও আর মাছ বা মাংসের কালিয়া রাঁধতে জানে না। গন্ধেই
আপনার জিভে জল এসে যাবেই । গ্যারান্টী দিচ্ছি। না এলে বিয়েই
ক্যান্সল করে দেবেন না হয়। এই রামুয়া, শীলাদি কে ডেকে নিয়ে আয়
তো এখানে’।
বলেই অন্য ঘরে চলে গেল গটগটিয়ে আর কাপড়ে ভিজে হাত মুছতে
মুছতে এদিকে রান্নাদিদি এসে হাজির- ‘বাবু কি আমারে ডাকতে ছিলেন
না কী? তা কি চাই? চা দিব না কফি স্যার’?
‘কচুপোড়া চাই’। রাগকরে বললুম।
সে বলল-‘কচু তো এখন বাজারে আসে নাই স্যার। তা ওল আছে।
পোড়ায়ে আনি যদি বলেন। আর নইলে বেগুনপোড়ায়ে দিতেছি করে
আপনারে’।
‘দাও বেগুনপোড়া তোমাদের খান্ডারনী মেয়ের মুখে। ও কে যে বিয়ে
করবে সে এখন ও জন্মায়নি’। বলে চলে এলুম আমি। এখন আবার
স্কুলেই যাই, দেখি একটা হাফ ডে সি০এল০ নিয়ে মান বাঁচে যদি।
সে দিন ও ইতি হল।
তৃতীয় দিনের কাল্লু ফাঁদে ধরা পড়ল এক রেলের টি০টি০ই। তিনি ও
ছিলেন বেশ রাগত ঠিকই তবে ডাক পিওন আর রেল কর্মচারী বশ
সহজেই হয়। একটু চা সমোসা মানে সিঙ্গাড়ার যা খরচা। তাঁর জিজ্ঞাস্য
ও সহজেই জানা গেল। ঘরের কাজকর্ম, কাপড় চোপড় কাচা পারে কিনা
জানতে চাইতেই বিপত্তি হয়।
ঘরের কাজের মেয়ে শেফালিকে ডাকিয়ে এনে দেয় মেয়েটি সে ওসব
কিছুই পারে না জানিয়ে দিয়ে।
‘আরে পন্ডিতজী, আমি ততক্ষণে রহস্যটা ঠিক ধরে ফেলেছি । তখুনি
বাড়ী গিয়েই খবর পাঠালুম যে আমি মেয়ে দেখতে যেতে চাই বিকেলে।
তার মা বাবা ডেকে পাঠালেন, এমন কি একজন লোক ও পাঠালেন
আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাবার জন্য। নইলে আমি তাঁদের বাড়ী চিনব
কি করে?
খুব ঠিক কাজ । আমার তিন দিনের ছুটি ও শেষ। কাজেই ইসপার বা
উসপার কিছু একটা ফয়সলা তো করতেই হবে রে পন্ডিতজী। ওখলিতে
মানে হামানদিস্তেতে মুন্ডু ঢুকিয়ে দিয়ে আর মুষলের ভয় করলে চলবে
কেন রে পন্ডিতজী? তিন হাজার কা সওয়াল যে রে ভাই’।
‘তা গেলুম রে পন্ডিতজী, অটোতে চেপে মেয়ে দেখতে বিকেলেই। সাদর
অভ্যর্থনা ও হলো খুব। মেয়েটার মা বাবা কাকা সবাই এসে বসলেন
বৈঠকখানাতে। পরিচয়াদি হলো। জানা গেল যে তাঁরা জাত গোত্র ও
দেখবেন না আর ঠিকুজী কুষ্ঠি ও নয়। ব্যস, মেয়ে যদি রাজী হয়ে
যায় তো সঙ্গে সঙ্গে বিয়ের মুহূর্তের মানে তারিখের জন্য পন্ডিত
ডাকাবেন। খরচপত্রে ও আটকাবে না। চাইলে দহেজ ও দেবেন তাঁরা ।
শুধু ওই ঘোড়েল মেয়ে রাজী হলেই হয় শুভ কাজ…’
‘আমি বললুম –আরে তার জন্য আপনারা এত পরেশান হচ্ছেন মানে
চিন্তা করছেন কেন? মেয়েকে ডাকুন না, আভি করিয়ে দিচ্ছি রাজী। ই
কৌন ভারী কাম আছে?’
তাঁরা উঠে গিয়ে মেয়েটাকে সাজিয়ে গুজিয়ে পাঠিয়ে দিলেন ঘরে।
সে ঘরে আসতে আমি নিজেই উঠে দাঁড়িয়ে বললাম –‘নমস্কার’।
একটু অবাক হয়ে মেয়েটা বলল-‘নমস্কারজী। বৈঠিয়ে’।
আমি বললুম –‘পহলে আপ তো বৈঠিয়ে’।
মেয়েটা সোফায় বসলে পরে আমি ও বসে বললুম-‘কহিয়ে কৈসে হ্যায় জী? মানে কেমন আছেন আর কী।
মেয়েটা বলল –‘ভাল’।
জানতে চাইলাম তার নাম কি?
সে বলল-‘মধুবালা’
আমি বললুম –‘আমার নাম হলো কাল্লুরাম রাম’।
আমি চালু হয়ে গেলাম তারপরেই রে পন্ডিতজী।
বললাম-‘আমি বেনারসেই থাকি। সিগরাতে। নিজেদের বাড়ী। কাজ করি
সরকারী নগর মহাপালিকা অফিসে। দেখিয়ে মধুবালাজী, আমি
পড়াশুনা ও করেছি। বি০এইচ০ইয়ু০র গ্র্যাজুয়েট। পি০জি০ করছিলাম।
নৌকরী লেগে গেল তাই ফাইন্যাল দিতে পারিনি। তবে ইগনু বা রাজর্ষি
টন্ডন থেকে পরে পি০জি০ করে নেবই। পিএইচ০ডি০ও। আমি ঘরের সব
কাজ কর্মই করতে জানি। বাসন মাজা ঘর সাফ করা সব সব। আর
কাপড় কাচা ওর জন্য তো ওয়াশিং মেশিন ও ফেল হয়ে যায় আমার
কাছে। যত কাপড়ই থাক না কেন, দশ মিনিটে কাপড় কাচা আমার
হবেই শেষ।
আমি রান্না ও করতে জানি। মুর্গ মুসল্লম থেকে খিচুড়ি পর্যন্ত সমস্ত।
আরে হোটেল ওবেরায়ের প্রধান সেফ তো হর সময় আমাকে ফোন করে
জ্বালিয়ে মারে। কখন ও রেসিপি চায় টিক্কা কাবাবের তো কখন ও
তাকে বলতে হয় মুর্গ পনীর কি করে তৈরী করতে হয়। রান্নাটা সে
আমার কাছেই শিখে ছিল বলে চেলাকে হেল্প করতেই হয়। ইন্টারন্যাশন্যাল
হোটেলে কাজ করবার ঝামেলা তো কম নয় কি না। গ্রাহককে না বলা
চলবে না। যে যা খেতে চাইবে বিশ মিনিটে বানিয়ে হাজির করতেই
হবে। নইলে চাকরী নট হয়ে যাবেই। পঞ্চাশ হাজার টাকা মাইনে মাসে
কি কেউ মুখ দেখে দেবে, মধুবালাজী?
আর রইল গান বাজনা। তাইতে ও এই কাল্লুরাম ওস্তাদের ওস্তাদ। কিশোর
কুমারকে গান গাইতে তো আমিই শিখিয়ে ছিলাম। যে কোন বাজনা
দিন, বাজিয়ে দিচ্ছি। ঢোল, নগাড়া শহনাই সব …আরে এই যে
বিসমিল্লা খান রয়েছেন, কি করে অমন পরিষ্কার আর তেজ আওয়াজ
শাহনাই থেকে বার করা যায় সেই রহস্য তো আমাকেই সে জিজ্ঞাসা
করে তবে জেনে অত নাম করেছিল। তার আগে কি ছিল সে? রাতে
শীতলা ঘাটে বসে শাহনাই বাজিয়ে মাই শীতলাকে ঘুম পাড়াতো আর
লোকের বাড়ীতে বিয়ে, অন্নপ্রাশনে বাজিয়ে যা দু’পয়সা পেত তাইতেই
ঘর পরিবার চলত।
আমি কিন্তু স্পোর্টসম্যান কাল্লু, মধুবালাজী। ক্রিকেট থেকে ভলিবল আর কবড্ডি থেকে ঘুড়ির লড়াই সবেতেই কাল্লু হলো চ্যাম্পিয়ানের চ্যাম্পিয়ান’। …
‘সে তখন আর কি আমি থামি রে পন্ডিতজী? কোন কাজটা আমি না জানি? মিথ্যে কথা আমি বলছি কী’?
শুনতে শুনতে হয়রান হয়ে শেষে যেই আমি দম নিতে এক সেকেন্ড
থেমেছি অমনি তেড়েফুঁড়ে উঠে মেয়েটা মানে মধুবালা জিজ্ঞাসা করে
বসল-‘আরে থামুন থামুন। মানছি। আপনি সবজান্তা ও সর্বকর্মা। আপনি
কি জানেন না বা করতে পারেন না, তাই বলুন দেখি আগে। আপনার
জানা বা করা কাজের লিষ্ট তো আজ আর শেষ হবে বলে মনে হয়
না। মাথা ধরে গেল যে আমার। কি জ্বালাতন রে বাবা’।
মনে মনে বললুম –এতদিন ধরে বহু লোককে জ্বালিয়েছ তুমি। তখন
মাথা ধরেনি তোমার। ধরাচ্ছি তোমার মাথা আজ। কার পাল্লায় পড়েছ
তা টের পাবে। সতেরো হাজার পাওনা ফিট না করে আজ নড়ছি না।
সে তুমি যাই বলো।
কিন্তু মুখে কি বলা যায়?
শেষে ঘাড় টাড় চুলকে বললুম-‘ তা গোটা দুনিয়ায় একটা মাত্র কাজ
হলে ও আছে বইকি মধুবালাজী, যা কাল্লুরামের মতন লোকের পক্ষে ও
করা অসাধ্য। কিন্তু বললেই আপনি রাগ করেন যদি আমার ওপরে তাই
বড় ভয় পাচ্ছি যে বলতে। আপনি যদি অভয় দিয়ে দেন তা হলে বলতে
পারি’।
‘আপনি বলুন। আমি রাগ করব না। আমার জানতে বড়ই আগ্রহ হচ্ছে যে’।
‘প্রমিস’
‘আরে বাবা করছি প্রমিস। আমি খুব স্মার্ট মেয়ে । তুখোড় ও বলত
পারেন। চিরকাল কলেজ ডিবেটে ফার্স্ট হয়েছি। আমার কথার দাম আছে…’
‘সে তো বটেই মধুবালাজী সে তো অবশ্য করে বটে’।
‘ভ্যানত্যাড়া করছেন কেন বলুন তো? ঘাড় ধাক্কা খাবার শখ হয়েছে বুঝি খুব আপনার?’
মনে মনে বললুম-‘তা দাও না ঘাড় ধাক্কা। মেয়েদের মুরোদ জানা আছে
আমার। কথাটা না জানা হ’লে রাতে তোমার ঘুম হবে আর আজকে?’
মুখে বললুম-‘আরে, ছিঃ । আপনাকে সে কষ্ট দেব কেন করতে অত?
আপনার বাড়িতে এসে সে কাজ আমি কি করতে পারি মধুবালাজী?
এই আমি নিজেই চলে যাচ্ছি। আচ্ছা নমস্কার’।
লাফিয়ে উঠলো মেয়েটা ও। বলল-‘দাঁড়ান। কথাটা বলে তবে যাবেন আপনি’।
‘বলতেই হবে? না বললে চলবে না মধুবালাজী?’
‘অবশ্য বলতে হবে।’
‘এই কি বলে…. সেই মানে…. আর কি… আমি ...কি করে যে বাচ্ছা
পয়দা করতে হয় সেইটাই জানি না মাত্র কেন না সেটা মেয়েদের
বিশেষ কাজ আর আমি সেই কাজটিই করতে পারি না। তাই তো
আমাকে বিয়ের জন্যে আসতে হলো গভর্নরের সাথে আজ আমার জরুরী
মিটিং ও ক্যান্সেল করে’।
‘তারপরে কাল্লুজী’?
‘তারপরে আবার কি হবে রে পন্ডিতজী? হবার আর রইলই বা কী?
মধুবালা শুনেই-‘এ মা ছিঃ ...’ বলেই মুখে আঁচল চাপা দিয়ে
একছুটে পালিয়ে গেল ঘরের বাইরে। আর তার ঠিক তিন মিনিট পরেই
তার অভিভাবকেরা হৈ হৈ করে এসে ঘিরে ধরলেন আমাকে। বাড়িতে
আনন্দসংগীত বেজে উঠলো।
তা হয়েছেটা কি?
জানা গেল যে মেয়ে কিনা গিয়ে হার স্বীকার করে নিয়েছে সঙ্গে সঙ্গে।
তাই তাঁরা বিয়েতে কি কি চাই আমার, তাই জানতে এসেছেন। পন্ডিতজীকে ফোন করা ও হয়ে গেছে।
আমি ধপ করে সোফায় আবার বসে পড়ে বললুম ‘থ্যাংক গড। মাথা ন্যাড়া হতে হলো না এ’যাত্রা তবে আর ঘোলের হাত থেকেও রেহাই পাওয়া গেল বোধহয়’।
অধ্যাপক ডঃ জি০সি০ ভট্টাচার্য, বারাণসী, উত্তর প্রদেশ, ভারতবর্ষ;
রচনাকাল : ২৭/১২/২০১২
© কিশলয় এবং জি.সি.ভট্টাচার্য কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।