অধ্যাপক (ডঃ) জি০সি০ভট্টাচার্য্য, বারাণসী, উত্তর প্রদেশ
বেশ কিছুদিন আগেকার কথা।
তখন রূপবান ছেলে বাদলের বয়স ছিল বছর পাঁচ কি ছয় প্রায়।
মিডিয়ার ভয়ে আমি পালিয়ে ছিলাম বাদলকে সঙ্গে নিয়ে আমার পরীর দেশের রাজকুমার
অপরূপ সুন্দর ভাইপো চঞ্চলের মামার বাড়ির গ্রাম সেই নিশিকান্তপুরে। বাদল তো চঞ্চলের
একমাত্র বন্ধু আর সে একটা চুরী যাওয়া আসল মুক্তোর হার খুঁজে দিয়ে তখন এক্কেবারে
পাব্লিসিটির শিখরে হাজির হয়ে এমন কান্ড বাঁধিয়ে বসেছিল যে আমার শুদ্ধু পাগল হবার
যোগাড় হয়েছিল। অতএব যঃ পলায়তি সঃ জীবতি…।
তা চঞ্চলদের মামার বাড়িতে না গোটা দশেক ছেলেমেয়ে ছিল তখন বাদলের সমবয়সী
যৌথ পরিবারে। তবে ছেলেদের সংখ্যা কম। মেয়েদের মধ্যে তিন্নি বলে একটা মেয়ে ছিল।
সে কিন্তু খুব বুদ্ধিমতী মেয়ে। বিরাট ফল ফুলের বাগান ছিল বাড়ির মধ্যেই।
আম, জাম, কাঁঠাল, জামরল, পেয়ারা, তাল, নারকোল, নানান গাছ আর ফুল গাছের তো
কথাই ছিল ন। কাঠ টগর থেকে স্বর্ণচাঁপা সবরকম ফুলের ছড়াছড়ি। রোজ সন্ধ্যায় সেখানে
বাচ্ছাদের খেলার আসর বসত। আমি চেয়ারে বসে গল্পের বই পড়তাম আর খেলা দেখতাম।
বাদল ও যোগ দিত খেলাতে তা বলাই বাহুল্য। চোর পুলিশ, কানামাছি, মানুষ কুমীর
নানারকমের গ্রাম্য খেলা খেলত সবাই। আমি একসেট ব্যাডমিন্টন খেলার সরন্জাম ও কিনে দিয়েছিলাম।
গ্রামের ছেলেমেয়েরা তো খেলতেই জানতো না। বাদল শিখিয়ে দেয় আর সেই তিন্নি নামের প
ুঁচকে মেয়েটা কিনা সবাইকার চেয়ে তাড়াতাড়ি খেলা শিখে নিয়ে বাদলের সাথে খেলতে শুরু করে দেয়।
অন্যদের হয় বেজায় রাগ। তা আর হবে না কেন? একটা মেয়ের কাছে হেরে গিয়ে দাঁড়িয়ে
খেলা দেখতে কারই বা ভালো লাগে বল না। তাও ছেলেদের। তায় আবার গ্রামের ছেলেদের
তো আত্মসম্মানে ঘা লাগবারই কথা যেখানে ছেলেদের আলাদা কদর ছিল সেইসময়।
তা মেয়েরাই আপোষ করে নিতে অভ্যস্ত ছিল। তিন্নি ও।
সে বলেছিল-‘থাকগে ও’সব শহুরে খেলা বাবা, দরকার নেই আমার। আয়, আমরা চোর পুলিশই খেলি না হয়’।
তা সেখানে ও ছেলেরাই হবে পুলিশ। মেয়েদের হতেই হবে চোর। নইলেই খেলার দফা গয়া।
মেয়েদের খুঁজে পেতে ধরে এনে লাঠিপেটা না করলে চোরের শাস্তি হবে কি করে?
তাই ছেলেরা রাজী হয়ে গেল।
খেলা শুরু হ’ল।
বীরবিক্রমে লাঠিহাতে চোর ধরতে গেল পুলিশ।
ছ’টা চোর ধরা ও পড়ল আর লঠিপেটা ও খেল অল্পস্বল্প। গোল বাঁধল সপ্তম চোরকে নিয়ে।
বলা বাহুল্য যে সেই চোর হল গিয়ে তিন্নি। গোটা বাগান তোলপাড়। তিন্নি চোর বেপাত্তা।
বাদল এসে আমার কোলে বসে পড়ে হিঃ হিঃ করে হাসতে হাসতে বলল-‘জানো কাকু, তিন্নিকে
এই সুযোগে মনের সুখে ওরা লাঠিপেটা করবে ঠিক করেছিল। লাঠি অবশ্য একটা কঞ্চি কিন্তু
জোর লাগে কাকু। আর তিন্নিটা না কাকু ভীষণ চালাক মেয়ে। ঠিক বুঝে নিয়ে এমন লুকিয়েছে
না কাকু, যে কেউ খুঁজে বার করতে ও পারবে না। আর পেটানো তো দূরের কথা, খেলায়
জিততে ও পারবে না কাকু, তিন্নিটার না কাকু, দারুন বুদ্ধি’।
মেয়েদের এতটা প্রসংশা কোন ছেলে করবে এটা সেইসময় অকল্পনীয় কথা হলে ও বাদল নিজে
জিনিয়াস ছেলে বলে ওইসব সংন্কীর্ণতার ধার ধারতো না।
তা বাদল যা বলল তাই হয়ে গেল। পুলিশেরা হেরে ভূত হল তিন্নির জন্য।
তারপরের দিন ও তাই।
তিনদিনের দিন ছেলেদের মুখ ভার হ’ল দারুণ।
রোজ রোজ চোর পুলিশ খেলাতে ও হেরে গিয়ে।
তখন বাদলকে ধরে বসল তারা গোপনে।
বাদল খেলা ছেড়ে দিত তিন্নির সময় এলেই এটা তারা লক্ষ্য করে ছিল বেশ।
তা বাদল বলল-‘ তিন্নি কোথায় লুকিয়ে পড়ে একশো গোনবার মধ্যে তা তোরা খুঁজে দেখ না বাবা,
আমি কি করব? আমি তোদের ওইসব রেষারেষির খেলায় নেই। তোরা তো হিংসে করিস তিন্নিকে।
লাঠিপেটা করবি ওকে সকলে মিলে সত্যি সত্যিই, ও তাই লুকিয়ে থাকে, আমি খুঁজব কেন?’
ছেলেরা বাদলের কাছে তখন মাফ চাইতে বসল। কথা দিল যে ওরা তিন্নিকে হিংসে করবে না আর কেউ….।
তবু বাদল মানবে না, তারা ও ছাড়বে না।
শেষে বাদল বলে বসল-‘তিন্নিকে স্কুলে ও যেতে দেয় না কেউ। কেন? ও ছোট বলে না মেয়ে বলে না
তোদের চেয়ে বেশী বুদ্ধি রাখে বলে? ও কিন্তু স্কুলে ও তোদের টপকে যাবে অনায়াসে আর তখন তো
আরো হিংসে করবি, তাই না?’
ব্যাপারটা তখন বড়দের কানে ও উঠল। ছেলেরাই তুলল তাদের মায়েদের কানে, তারপরে একে একে সবাই
জেনে গেল যে বাদল তিন্নিকে বুদ্ধিমতী বলেছে। ব্যস, ছোটদের খেলায় বড়রা ও লেগে গেলেন। সবাই মিলে
ও যখন লুকিয়ে থাকা তিন্নিকে কেউ ধরে আনতে পারল না, তখন আর কি?
সব্বাই হারি…
আবার তখন বাদলং শরণং গচ্ছামি…
এবারে বড়রা ও।
বাদল বলল-‘চেষ্টা করতে পারি, তবে একলা। কেউ আমার সঙ্গে থাকবে না তখন, আড়ি পেতে
লুকিয়ে দেখাও চলবেনা। আর নো ডিফারেন্সিয়াল ট্রিটমেন্ট টু তিন্নি। ওকে খুবভালো স্কুলে পড়াতে
হবে আর তিন্নি না বলতে চাইলে ওর লুকোবার জায়গা ও কেউ জানতে চাইবে না’।
ছোট্টছেলে বাদল সেদিন যা শর্ত দিয়ে ছিল তাই নিয়ে এখন মানবাধিকার আর ব্যক্তি স্বাতন্ত্রের অধিকার
গড়ে উঠছে, তা বলাই বাহুল্য। বাদলের সব শর্ত মন্জুর হ’ল। দায়ে পড়ে। একটা বাচ্ছা মেয়ের
কাছে একবাড়ী লোক হেরে গেলে কেমন লাগে?সে দিন বিকেলে খেলা শুরু হ’ল যথারীতি।
বাদল একলা হ’ল পুলিশ। তিন্নি লুকিয়ে পড়ল। আর কেউ চোর ও হ’ল না।
বাদল একলা চলল চোর ধরতে বাগানে আর আমি…, যথাপূর্ব দর্শকের চেয়ারে। প্রায় একঘন্টা কাটল।
বাড়ির সবাইকার উত্তেজনা চরমে উঠল।কেউ আর আসে না । না বাদল না তিন্নি।
হঠাৎ কে যেন খিলখিল করে হাসল।
তারপরেই একটা নীচু পেয়ারা গাছের ডাল থেকে বাদলের হাত ধরে লাফিয়ে নেমে এল তিন্নি।
হৈ হৈ শুরু করল সকলে। তিন্নি কি গাছে উঠে লুকিয়ে থাকত রোজ?
বাদল বলল-‘মনে কর তাই’
‘তার মানে? আমরা কি গাছে উঠে খুঁজতে কিছু বাকি রেখেছিলাম না কী’?
‘তবে আর সে কথা উঠছে কেন?’
তখন সবাই তিন্নিকে নিয়ে পড়ল –‘এ্যাই তিন্নি, সত্যি কথা বলবি, বাদল তোকে খুঁজে এনেছে
কি না আর তুই হেরেছিস কি না?’ তিন্নি অকাতরে বলে দিল-‘ অবশ্য, বাদলদা আমাকে খ
ুঁজে ধরে এনেছে। আমি হেরে গেছি। মারতে পারো আমাকে এখন, তবে বাদলদা মারবে আর কেউ না কিন্তু’।
রাতুল তাড়াতাড়ি করে একটা কঞ্চি এনে দিল বাদলের হাতে। মিতুল দিল ব্যাডমিন্টনের রাকেট।
বাদল দুটোই ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলল-‘মারতে হলে তো পেয়ারাই যথেষ্ট, ওইসব কী হবে শুনি? নে তিন্নি, সামলা…’
এই না বলে তিন্নির দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে পাঁচটা ছোট ডাঁসা পেয়ারা বার করে এক এক
করে ক্রিকেট বলের মতন হাত ঘুরিয়ে বেগে ছুঁড়তে শুরু করল বাদল। আর কী আশ্চর্য্য কান্ড দেখো,
তিন্নি মেয়েটা তিড়িং বিড়িং করে লাফিয়ে উঠে সবকটা ক্যাচ লুফে নিল।
আর যায় কোথায়?
বাচ্ছাদের সাথে বড়রা ও সুর মেলালেন-‘ এটা কি মারা হ’ল না কী, অ্যাঁ?
উল্টে পেয়ারা দেওয়া হ’ল? বাদলের এটা নিছক পক্ষপাত’।ভ্রু কুঁচকে বাদল বলল-‘তাই না কী? তবে
তোদের ও পেয়ারা দিচ্ছি, নে ধর দেখি’।
চক্ষের পলকে বাদল গোটা ছয়েক পেয়ারা ছুঁড়ে দিল রাতুল মিতুলদের দিকে। তারা ধরবে কী,
হাত তোলবার আগেই তাদের কপাল আর মাথায় গোটা দুয়েক করে আলু গজিয়ে গেল দেখতে দেখতে।
শেষে তিন্নিই আবার বাদলের হাত ধরে আটকে দিল –
‘না বাদলদা, আর মেরো না ওদের, ওরা তোমার এই বল ক্যাচ করে উঠতে পারবে না,
কোনকালেই। আমার হাত লাল হয়ে গিয়ে জ্বালা করছে তোমার বলের ক্যাচ ধরে এখনও।
ওদের তুমি মাফ করে দাও বাদলদা’।
এই হ’ল তিন্নি।
সব্বাই চুপ এক্কেবারে।
তবে কথা রেখেছিলেন বড়রা। তিন্নিকে ভাল স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন তাঁরা। আর সে ও
প্রথম বছরেই স্কুলের বেষ্টস্টুডেন্ট পুরষ্কারটা ও ক্যাচ করে নিয়েছে অনায়াসে।
তবে আমার মনে সন্দেহ যায়নি একটা বিষয়ে। সেটা হ’ল তিন্নি লুকিয়ে থাকতো কোথায় আর কি ভাবে?
পনেরদিন পরে বাড়ী ফিরে এসে একদিন রাতে বিছানায় শুয়ে পড়বার আগে রূপবান ছেলে বাদলকে
জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে নিয়ে পায়চারী করবার সময় খুব করে আদর টাদর করবার পরে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কথাটা।
বাদল সুন্দর হেসে বলেছিল-‘কাকু, বলা তো আমার বারণ হিঃ হিঃ হিঃ …..’
‘তবে তোমাকে এখন বলা যায় কেননা তুমি তো আর বলে দিতে যাচ্ছ না সেখানে। আসলে আমার
সন্দেহ ছিল যে কোনো গাছের কোটরে লুকিয়ে থাকত তিন্নি। সেইভাবেই খোঁজ করছিলাম।
তবে সন্দেহটা আমার এক্কেবারে কিন্তু ভূল, তাই সময় নষ্ট হ’ল অতোখানি’।
‘আসলে একটা পুরো গাছই নকল লাগানো আছে ওদের বাগানে, তা জানো কাকু?’
‘সে খুব মজার গাছ আর হয়তো বিদেশী সিন্থেটিক ফাইবারে তৈরী। ঠিক যেমনটি তুমি রাজস্থানের
শ্রীগঙ্গানগরের নাগেশ্বর শিব মন্দিরে দেখেছিলে। এক্কেবারে অবিকল আসল গাছ। গুঁড়ি, ডাল পালা
পাতা সব সত্যিকারের মতন, কে তৈরী করেছিল আর লাগিয়েছিল কতদিন আগে, তা ও জানিনা আমি।
তবে মাত্র একটা প্রভেদ আছে, কাকু’।
‘ফলহীন গাছ’।
‘তাই চিনতে আমার কষ্ট হয় নি’।
‘গাছটা নকল বুঝতে পারি আমি একটা পাতা ছিঁড়তে গিয়ে। ওরে বাবা, সে কি শক্ত পাতা,
ছিঁড়তেই পারলাম না আমি, কাকু’।
‘তিন্নি যে কি করে গাছটাকে আবিষ্কার করেছিল, তা কিন্তু জানিনা কাকু। তবে ছোট্ট বোতাম
আছে একটা সেই গাছের গায়ে। সেই লুকোনো বোতাম খুঁজে নিয়ে তাইতে আঙুলের চাপ দিলেই
ছোট্টমতন যে প্রবেশ পথ আছে গাছের গোড়ার কাছে, তার দেখা মেলে। নীচু হয়ে ঢুকে গেলে
ভিতরে বেশ জায়গা। বাচ্ছাদের ঢুকতে কষ্ট হয়না, তবে বড়দের হবেই অসুবিধে। তবে দিব্বি দাঁড়ানো ও যায়’।
‘তিন্নি সেখানে ছিল দাঁড়িয়ে অন্ধকারে। কিন্তু ভিতরে ও আর একটা বোতাম আছে, তা কিন্তু
তিন্নি জানতো না। বেরিয়ে আসবার বোতামটা ছাড়া ও তেমনিধারা অন্য একটা বোতাম।
আমি সেটা অনেক পরীক্ষা করে তবে খুঁজে পেয়ে টিপতেই গুঁড়ির মধ্যে ভিতরেই একটা কোটর দেখা
দেয়, কাকু। কেমন হাল্কা মতন একটা নীলচে আলো ও জ্বলে ওঠে। আর সেখানে না অনেক অনেক
সোনার গিনি, হীরের গয়না আর দামী ঝলমলে সব পাথর রাখা আছে। হীরের দ্যুতি ও হতে পারে কিন্ত আলোটা, কাকু’।
‘মনে হয় ওই বাড়ির কোন বুদ্ধিমান লোক, পরিবারের পুরণো সম্পদ লুকিয়ে রেখে দিয়ে গেছেন কোন
যোগ্য উত্তরসূরির জন্য। তাই তিন্নি আমাকে কাউকে বলতে বারণ করে ছিল’।
বলেছিল-‘বাদলদা, এ’তো দারুণ জিনিষ, বাদলদা। একে কিন্তু গুপ্তধন বলে আমি ঠিক জানি আর
গুপ্তধন কিন্তু যে আবিষ্কার করে তার হয়। তুমি নিতে চাও তো সব নিয়ে নাও, বাদলদা’।
আমি না বলার পরে তিন্নি তখন বলেছিল-‘বাদলদা, ওরা কেউ কিন্তু এই সম্পদের তো যোগ্যই নয়।
ওদের জানিয়ে দিয়ে তুমি কি পাবে? তুমি না নিলে আমি বড় হয়ে ডাক্তারী পড়ব এই টাকা দিয়ে ঠিক,
আর যা থাকবে তাই দিয়ে একটা দাতব্য হাসপাতাল খুলব এই গ্রামে তোমার নাম দিয়ে, বাদলদা।
বহু গরীব লোকেরা একদম বিনাপয়সায় ওষুধ, পথ্য, চিকিৎসা পেয়ে বাঁচবে। গরীব অসহায় মানুষদের
জন্য তো কেউ ভাবে না আজকাল একবার ও, তাই না,বাদলদা’।
‘এই বলে আমাকে এই হীরের আংটিটা জোর করে কেঁদে কেটে গছিয়ে ছেড়েছে তিন্নিটা। আমি ও নেব না,
তিন্নি ও ছাড়বে না। কি করি? তবে আমি ও লুকিয়ে রেখেছিলাম সব্বাই জেনে যাবে এই ভয়ে।
নাও, তুমি পর দেখি এবারে, কাকু এ’টা। আমি কি করব ওইসব নিয়ে বলো না তুমিই, কাকু?
আমি কী মেয়ে? তিন্নিটা যেন কী?’
খুব ঠিক কথা।
আমি ও ভাবছিলাম তাই
–
বাদল মেয়ে হতেই পারবে না কিছুতেই আর ভগবান যাকে রূপ, গুণ আর বুদ্ধির ঐশ্বর্য্য অকৃপণভাবে
দিয়ে পাঠিয়েছেন সে এই সামান্য জিনিষ দিয়ে কিই বা করবে?’
তবে কিন্তু অন্যের জন্যে যে বা যারা একটু ও ভাবে না, সে বা তারা কি গুপ্তধনের যোগ্য?
তিন্নি ঠিকই বলেছে বইকি?
নইলে সে আর কিসের জিনিয়াস? কিসে অনন্য সাধারণ?
কিন্তু দুজনের মধ্যে কে বেশী ভালো?
তিন্নি না বাদল?
তিন্নি তো অসঙ্কোচে নিজের হার ও স্বীকার করে নিয়ে ছিল আর বাদলকে সব গুপ্তধন দিয়ে ও দিতে চেয়েছিল।
বাদল তো অসাধারণ ছেলে একটা নির্ঘাৎ করে সেই বয়সেই, নইলে আমাকেও বলে নি কিচ্ছুটি।
অবশ্য আমি ও তো আগে জানতে চাইনি সেখানে কোন কিছুই বাদলের কাছে। কিছু একটা রহস্য আছে
তিন্নির লুকিয়ে থাকবার কৌশলের মধ্যে তা বুঝে নিয়েই।
কিন্তু তিন্নি ও কি আর সাধারণ মেয়ে? গুপ্তধন দেখামাত্র কি করবে তা নিয়ে, বিনা চিন্তায় একমিনিটে সব তো স্থির করে দিলো।
হ’লোই বা সে অজ গ্রামের এক ছোট্ট মেয়ে।
বড়রা ও অনেকেই পারবে না এতো তাড়াতাড়ি। আর দারুণ লোভে পড়ে গিয়ে কি না কি করে বসবে।
রচনাকাল : ২৭/১১/২০১২
© কিশলয় এবং জি.সি.ভট্টাচার্য কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।