• ৩য় বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা (২৮)

    ২০১৩ , সেপ্টেম্বর



খেলা
আনুমানিক পঠন সময় : ৮ মিনিট

লেখক : জি.সি.ভট্টাচার্য
দেশ : India , শহর : Varanasi,u.p.

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১২ , নভেম্বর
প্রকাশিত ৪৪ টি লেখনী ৫০ টি দেশ ব্যাপী ৪১৪৫৩ জন পড়েছেন।
জি০সি০ভট্টাচার্য, বারাণসী, উত্তর প্রদেশ
===========================================================

গৌরব আমার একমাত্র ছেলে। 

আমিই মানুষ করেছি ছেলেটাকে। 

প্রায় বছর তিনেক বয়সে মাতৃহারা হয় গৌরব। পথ দুর্ঘটনার পরিণতি। আমি সঙ্গে ছিলাম না। 
আমার শালাবাবু ছিলেন। তিনি ও অটোটা উল্টে যাওয়ায় রীতিমতন আহত হয়েছিলেন বটে 
কিন্তু বাঁ হাতটা অকেজো হয়ে গেলে ও প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। আমি সব শুনে শোকে 
মুহ্যমান হয়ে পড়লে ও ছেলের সব ভার নিজের কাঁধেই তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলাম। 

গৌরব কিন্তু খুব সেনসেটিভ ছেলে তাই ওই বয়সেই সে বেশ বুঝে নেয় যে তার মা আকাশের তারা 
হয়ে গেছে। আর আসবে না তার কাছে।  তাই প্রথমে দু’দিন খুব মা মা করে কাঁদতো ছেলেটা 
সমানে, তারপর হঠাৎ সে একদম চুপ হয়ে গেল। আর ----একবার ও মা বলতো না। কিন্তু ওইটুকু 
ছেলে যেন কেমন বদলে গেলো। গম্ভীর হয়ে গেলো।

আমি ছেলেকে প্লে ওয়ে স্কুলে ভর্তি করে দিলাম। ওই স্কুলে ক্রেশ ও থাকায় সুবিধা হয়েছিল আমার। 
কচি ছেলেকে তার মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে মন চায় নি 
আমার, তারা যতোই বলুক । 

তাই রাতে বাড়ী ফিরে আমার কাছেই থাকত গৌরব।। ফলে তার সাথে আমাকে খেলতে হতো, 
কোলে নিয়ে গান শুনিয়ে বা গল্প বলে তাকে রোজ রাতে ঘুম পাড়াতে হতো, নাওয়াতে খাওয়াতে 
ও হতো। অফিস করে সে সব করা অনেক কষ্টকর হ’লে ও আমি আমার অতো সুন্দর 
ছেলেটাকে ছেড়ে থাকতে পারতাম না। 

ছেলেটা আমার চেয়ে অনেক ফর্সা, সুন্দর ও বুদ্ধিমান হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা যে ভীষণ অনুগত 
ছেলে গৌরব তাই আমার বেশ আদরের ও ছিল। খালি মিছে বায়না করা বা অকারণ কান্নাকাটি করা 
ছেলের স্বভাবের বাইরে ছিল।

কিছুদিন কেটে গেছে।

একদিন সকালে গৌরবকে ঘুম থেকে তুলে ব্রাশ করিয়ে মুখ হাত ধুইয়ে,  তারপরে  অলিভ তেল 
মাখিয়ে চান করিয়ে এনে ক্রীম পাউডার দিয়ে প্রসাধন করে আর বড় বড় চোখে দামী কাজল 
পরিয়ে ঘরে এনে কোলে নিয়ে জল খাবার খেতে বসেছি। ছেলে কে ও খাওয়াচ্ছি, হঠাৎ 
গৌরব বলল-‘বাপী, আমি তোমায় খাইয়ে দিই আজ?’

গৌরব অতো ছোট বেলাতে ও কখনও তোতলার মতন কথা বা খ কে থ  এইসব কিছুই বলতো না। 
হাইলী ইন্টেলিজেন্ট ছেলে হ’লে যা হয় আর কী। গৌরব কোনদিন হামাগুড়ি ও দেয় নি। শুয়ে থাকা,
উঠে বসা আর তার পরে তিন চার দিন  টেবিল বা চেয়ারের পায়া ধরে উঠে দাঁড়ানো অভ্যাসের পরে 
নিজে নিজেই উঠে দাঁড়াতে শিখে নিয়েছিল গৌরব। আশ্চর্য্য ছেলে।

আমি বললুম-‘তা’তে কি হবে, গৌরব?’

‘খেলা’

‘তা বেশ’

গৌরব আমাকে তার চকচকে ফর্সামতন ছোট্ট হাত দিয়ে খাবার তুলে খাওয়ানো শুরু করলো। 
বাপী যখন রোজ তাকে খাইয়ে দেয় তখন সেই বা খাওয়াবে না কেন তার বাপীকে?’

অবশ্যই সে খাওয়াতে পারে।

কিন্তু শেষে দুধের গ্লাশ তুলতে গিয়েই গন্ডগোল। 

স্টিলের ঝকঝকে গ্লাশ ছেলের হাত ফস্কে মেঝেতে দমাস। সব দুধ মেঝেতে ছিটকে পড়ে গড়িয়ে গেল। 
আমি সব দেখে ও চুপ। গৌরব অপরাধীর মতন মুখ নীচু করে নিতেই আমি উঠে ন্যাতা এনে মুছতে বসলুম মেঝে। 

গৌরবকে কিচ্ছুটি বললুম না। 

ছেলে ভয়ে একদম যেন কাঁটা হয়ে বসেছিল অকর্মটি করে। এই বয়সের একটা বাচ্ছা ছেলে এমনটি 
করেই থাকে। তাই আমি ছেলেকে কিছু না বলে গ্লাস তুলে  নিয়ে উঠে গিয়ে আবার দুধ ভরে আনতে 
গেলুম ডেকচি থেকে। 

সামান্যই আর ছিলো দুধ। দু’জনের মতন হবে না । ছেলেটাকেই তবে দুধটা খাইয়ে দিই আগে ভেবে 
দুধ ঢালছি, দেখি ডেকচির তলায় কালোমতন কি একটা পোকা মরে পড়ে আছে। 

কি সর্বনাশ। ভাগ্যিস দুধটা পড়ে গেল নইলে ওই দুধ আমরা দু’জনেই খেয়ে নিতুম ঠিক। দুধে যে 
পোকা পড়ে আছে তা না জেনেই। ফল যা হতো ভেবে শিউরে উঠে ডেকচি সমেত দুধ ওয়াশ বেসিনে ঢেলে দিলুম। 

গৌরব দেখে মৃদুস্বরে বললো-‘বাপী, তুমি রাগ হয়েছো? নইলে ওই বাকী সব দুধ    ‘

বললুম--‘না বাবু সোনা, রাগ হইনি কিন্তু ওতে একটা পোকা পড়ে মরে আছে। আমরা খেলেই 
মরে যেতুম। তুমি এসো। তোমাকে জামা টামা আগে সব পরিয়ে দিই। তারপরে অন্য দুধ আনতে 
যাবো আমি দোকানে। তুমি বসে থাকবে। আমি এলে দরজা খুলে দিও, কেমন?’

সুন্দর ছেলেটা মুখ টিপে হেসে ঘাড় নাড়লো। 

গৌরব হাসলেই যা সুন্দর লাগে না ওর কচি টুলটুলে মুখখানা যে আমার তখুনি খুব আদর করতে 
ইচ্ছে করে ছেলেটাকে ধরে। 

তা ছেলেটার পনেরো ষোলো বছর বয়স হয়ে যাবার পরে ও ওকে আমি কখনো হাসলেই জড়িয়ে 
ধরে একসাথে গোটা পাঁচেক চুমু না খেয়ে আর ছাড়তুম না। আর ছেলে দারুণ লজ্জা পেয়ে ফর্সা 
সুন্দর মুখখানা লাল করে বসে থাকতো। 

একটু পরে বলতো-‘এই ধ্যাৎ বাপী, তুমি কি ছেলে বলতো? এই এতো বড় ছেলেকে কেউ এইভাবে 
আদর করে? লোকে কি বলবে?’

আমি তা’তে কান দিলে তো।‘
    
সে যাক। গৌরবের শৈশবের খেলার কথাই এখন বলি। পরের কথা পরে হবে।
 
সে’দিন আবার দুধ এনে রান্না করে গৌরবকে খাইয়ে ও নিজে খেয়ে জলের বোতল, স্কুল ব্যাগ, 
আমার অফিস ফাইল সব গুছিয়ে নিয়ে তৈরী হয়ে স্কুটার বার করছি, গৌরব আমার হেলমেটটা 
দু’হাতে বুকে জড়িয়ে ধরে এনে সামনে ধরলো। আমি তখন রোজ হেলমেট নিয়ে যেতুম না।

‘ওটা আবার আনলে কেন?’

‘আমাকে পরিয়ে দেবে, বাপী?’

‘যাঃ, ও তো অনেক বড় আর ভারী, তুমি পারবেই না মাথায় পরতে।‘

‘তবে তুমিই পরে নাও, বাপী’। 

‘আমি পরে নিলে কি হবে?’

‘খেলা’।

চমকে উঠলাম শুনেই। দ্বিতীয়বার ছেলে এই শব্দটা বলছে আজ। কিন্তু বাচ্ছার খেয়াল। বলতেই 
পারে। ওর এই বয়সে তো সবই খেলা এখন। আর বাপী হচ্ছে খেলার সাথী।

আমি হেলমেটটা গৌরবের হাত থেকে নিয়ে মাথায় পরে নিলুম। ছেলে আনন্দে দু’হাতে তালি 
দিয়ে হেসে ফেলল। তখন আর ছেলেকে আদর করবার সময় নেই। 

দরজায় তালা দিয়ে গৌরবকে তুলে স্কুটারের পিছনের সীটে বসিয়ে দিয়ে নিজে স্টার্ট দিয়ে উঠে 
বসে চালিয়ে দিলুম। গৌরব দু’হাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে বসলো। স্কুলে গৌরবকে পৌঁছে 
দিয়ে আমি অফিস চলে গেলুম কিন্তু মনটা ভালো ছিল না। 

পাঁচটা বাজতেই বেরিয়ে এসে গৌরবকে আনতে চললুম। খানিকটা এগিয়েছি মাত্র, একজন 
মোটামতন হিন্দীভাষী লোক পেছন থেকে মোটর সাইকেল বেগে চালিয়ে ডান দিক থেকে ওভারটেক 
করে আমার সামনে এসেই বাঁ দিকে ঘুরতে গেল কোন সিগন্যাল না দিয়েই। ফলে সংঘর্ষ হয়ে গেলো 
আর আমি ডানদিকে ছিটকে পড়লুম আর সেই লোকটা ও মোটর সাইকেল উল্টে চাপা পড়ে গেল। 

মাথায় দারুণ গুঁতো লাগলো আমার। ঝনঝন করে উঠলো। কিন্তু ধাক্কাই সার হ’লো হেলমেট না থাকলে 
আমার মাথা যে আলুসেদ্ধর মতন ফেটে যেতো, তা ঠিক। 

ধূলো ঝেড়ে উঠে স্কুটার টেনে তুলছি। কয়েকজন লোক সাহায্য করলো এসে কিন্তু দ্বিতীয় জন 
পড়েই রইলো। হয়তো অজ্ঞান বা….।

আমার দেরী হচ্ছিলো। লোকগুলো তাকে তুলছে দেখে আমি চলে এলুম কিন্তু মনটা খিঁচড়ে গেল।

বাড়ী এসে ভাবলুম রান্নাবান্না সেরে খেয়ে নিয়ে আজ একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ি না হয়।

তাই করলুম।

মশারী টাঙিয়ে নিজের বেডরুমের ডবল খাটে  শোবার আয়োজন করছি, গৌরব এসে 
বললো-‘বাপী, আজ খেলবে না আমার সাথে?’

বললুম--‘না ভাই। শরীরটা ভালো লাগছে না আজ, গৌরব’।

রাস্তায় যে বিনা দোষে রাম আছাড় খেয়েছি সেটা আর নিজের ছেলেকে বলতে লজ্জা করলো।

‘তবে তুমি বাপী চলো আমার ঘরে। আজ থেকে আমার ওই ঘরেই শোবে তুমি’।

‘তা’তে কি হবে, গৌরব? তুমি শুয়ে পড় না নিজের ছোট মশারীর মধ্যে’।

‘খেলা’।

আমি আবার চমকে ঊঠলুম।

গৌরব বললো—‘বাপী, আমরা শুয়ে শুয়ে রোল অ্যান্ড উইন খেলবো এখন, বাপী। তুমি আমি 
দু’জনে বিছানায় শুয়ে না দু’দিক থেকে গড়াবো। পিঠে পিঠ ঠেকলে হার নইলে  এক পয়েন্ট জিত। হিঃ   হিঃ   হিঃ……’

বোঝ ঠ্যালা। এ’দিকে আমার কাঁধে আর ডান হাতে যে দারুণ ব্যথা করছে, তার বেলা?  

গৌরব পোষাক টোষাক খুলে তৈরী হ’লো বিছানায় উঠে শুয়ে পড়বার জন্য। ঘুমের আগে খেলা চাই। 
ভাগ্যে কোলে নিয়ে পায়চারী করে গল্প শোনাতে বলে নি আজ। এই রক্ষা। তখন বুঝলুম যে ছেলের 
বিছানায় বড় মশারী এনে টাঙিয়ে তবে শোওয়া যাবে। তাই করতে হ’লো। 

তারপরে খেলার পালা। গৌরব দশ পয়েন্ট জিতলো । 

আমি বলতে যাচ্ছি আর না বাবু, এ’বার ঘুম। তখনি আমার শোবার ঘরে জোর দড়াম ধাঁই শব্দ হ’তে লাফিয়ে উঠলুম আমি।

‘ও কিসের শব্দ?’

‘ও কিছু না, বাপী। তুমি ঘুম করো এখন। সকালে উঠে দেখো’।

‘দূর, তাই হয় কখনো? কিছু নায়ে’র যদি এমন শব্দ হয়, তবে কিছু হ’লে কি হ’তো?’

‘ঘর চাপা’ 

এই বলেই মুক্তোর মতন সাদা দাঁত বার করে গৌরব খিল খিল করে হেসে দিলো।

ছেলের হাসি দেখে রাগ করে আমি উঠে পাশের ঘরে গিয়ে দেখি যে আমার খাট আর ঘরের 
মেঝের ওপরে ছাদ থেকে বিরাট এক চাপড়া সিমেন্ট বালি ভেঙে পড়ে ছড়িয়ে আছে চারদিকে। 
কি ভয়ানক কান্ড রে বাবা।।

দেখে শুনে সেই ঘরের দরজা বন্ধ করে ছেলের ঘরে ফিরে এসে খাটে উঠে গৌরবকে বুকে 
জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে খুব খানিকটা আগে আদর করলুম তারপরে কি হয়েছে সব বললুম।

শুনে ছেলে বললো-‘আমি জানি বাপী। তা তুমি একটা পেন কিলার খেলেই পারতে নইলে
 কাল তোমার না বাপী, অফিসের হবে ছুটি, গরম গরম রুটি      হিঃ    হিঃ   হিঃ …..’

‘তার মানে, গৌরব?’

‘আমি তো সব জানি, বাপী। তুমি বড় অসাবধান ছেলে। একটু বুঝে শুনে চলবে তো। 
এই দেশে কি কেউ নিয়মের ধার ধারে?’

‘কি কি করে জানো তুমি, গৌরব?’

‘কেন, বাপী? মা এসে তো বলে দিয়ে যায় যে সব কিছু আমাকে আগে থেকে।’

‘সে কী? তুমি মাকে দেখতে পাও?’

‘না তো, বাপী?’

‘কথা শুনতে পাও মায়ের?’

‘তা ও না, বাপী’।

‘তবে?’

‘আমার তো খালি মনে হয় মা যেন বলছে  গৌরব, তোকে এই করতে হবে। তোর বাপীর তো 
কোন কিছুর হুঁশ বোধ থাকে না। তাই সাবধান ও হতে পারে না। তুমি না বাপী, আমার সাথে 
অফিস যাবে কাল থেকে, তাহ’লে আর…’

আমি হো হো করে হেসে উঠে গৌরবের নরম মসৃণ তুলতুলে শরীরটা দু’হাতে জড়িয়ে ধরে চার 
বছরের কচি ছেলের গালে, মুখে, কপালে, বুকে গোটা দশেক পরপর একটানা চুমু খেয়ে নিলুম।

গৌরব চুপ করে আমার আদর নিয়ে শেষে একটু লজ্জা পেয়ে বললো-‘যাঃ বাপী, তুমি যেন কী?
 কিচ্ছুটি বিশ্বাস করতেই তো চাও না। এখন ঘুম করো তো। আমাকেই দেখছি তোমাকে সামলাতে হবে। মা ঠিকই বলে ... ’। 

==========================================

০৯৪৫২০০৩২৯০
রচনাকাল : ২২/৮/২০১৩
© কিশলয় এবং জি.সি.ভট্টাচার্য কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 21  China : 68  Germany : 3  India : 186  Israel : 31  Japan : 16  Netherlands : 12  Norway : 1  Russian Federat : 5  Saudi Arabia : 3  
Sweden : 8  Ukraine : 38  United Kingdom : 2  United States : 406  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 21  China : 68  Germany : 3  India : 186  
Israel : 31  Japan : 16  Netherlands : 12  Norway : 1  
Russian Federat : 5  Saudi Arabia : 3  Sweden : 8  Ukraine : 38  
United Kingdom : 2  United States : 406  
  • ৩য় বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা (২৮)

    ২০১৩ , সেপ্টেম্বর


© কিশলয় এবং জি.সি.ভট্টাচার্য কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
খেলা by GCBhattacharya is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৩৭৬৯৫৯
fingerprintLogin account_circleSignup