-ঠাম্মি ও ঠাম্মি একটা গল্প বলো না।
-হ্যাঁ দিদি ভাই। বলব তো। বলো কিসের গল্প শুনবে?
-ঠাম্মি আজ ভূতের গল্প শুনব।
-আচ্ছা দিদি ভাই যদি এরকম হয় ,ধর আমি মরে গিয়ে ভূত হয়ে তোর কাছে এসছি। তুই কী করবি সোনা?
-কি আবার করব।ভূত তো কী। ঠাম্মি ই তো।ঠাম্মি বলে গলা জড়িয়ে ভূতের গল্প শুনব।
তন্বী, অ্যাই তন্বী ঘুমিয়ে পড়। এখনও বকবক করছিস তুই? ঘুমো বলছি। শিগ্গির ঘুমোবি।
-আস্তে। আস্তে ঠাম্মি। ফিসফিস করে গল্প করি চলো। শুনছ না পাশের ঘর থেকে মা ক্যামন বকছে।
-তবে তুই ঘুমো দিদি ভাই।আমি চলে যাই। তোর মা এসে তোকে মারবে আবার।
-মারুক গে। মা সবসময় ওরম করে। তোমার কাছ থেকে আমাকে কেড়ে নেয়। মিশতে ই দেয় না। মা খুব খারাপ।
-না দিদি। ছি মা কে খারাপ বলতে আছে কখনো?
-তবে তুমি গল্প বলো ঠাম্মি।
-আয় বলছি। আমার কোলের কাছে আয় সোনা।
-অরুপ এই অরুপ শুনছ?
-রাতবিরেতে কী শুনব আবার ?
-কোনো দিকেই তো কোনো কান নেই তোমার। শুনছ না পাশের ঘরে মেয়ে রাতে শুয়ে শুয়ে হাওয়ার সাথে না ভূতের সাথে বকে চলেছে।
- ঠাম্মি ঠাম্মি বলছে। তাইতো কাকলী?
- আজ সাত মাস হয়ে গেল তোমার মা নেই। এখনও আমাদের কে মুক্তি দিলেন না? ভাবলাম যাক আপদ বিদেয় হল। ওমা সে গুড়ে বালি।
-এভাবে বোলোনা।
-এভাবেই বলব। সাত মাস হতে চলল তোমার মা গেছেন। এখনো তন্বী র ঠাম্মি ঠাম্মি পাগলামো গেল না। চলে গিয়েও রেহাই দিলেন না উনি।
শোনো কাল সকাল সকাল উঠে একজন নামকরা child psychriatist এর অ্যাপো নেবে। তন্বীর নাম লেখাবে। অনেক দিন ধরে ঠাম্মি ঠাম্মি ব্যামো দেখছি। দুটো কড়া ওষুধ পড়লেই সব সেরে যাবে।
-নাহ। কোনো ওষুধেই কাজ হবে না কাকলী।
-তাহলে কী করতে বলো অরূপ? যেভাবে দিনদিন তন্বীর পাগলামিটা বাড়ছে...
-চলো না কাল যাই কাকলী।
-কোথায়?
-ভাবছি অফিস ছুটি নেব।
-কোথায় যাবে বলবে তো?
-কাল আমি তুমি আর তন্বী মিলে চলো না মাকে ফিরিয়ে আনি। বৃদ্ধাশ্রম থেকে। তন্বীকে সারানোর এটা ছাড়া আর কোন ওষুধ নেই যে।
রচনাকাল : ১৫/১২/২০১৯
© কিশলয় এবং স্বাগতা সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।