তোমায় প্রথম দেখেছিলাম এক গ্রীষ্মের দুপুরে
রুক্ষ বেশে, তোমার শীর্ন দেহের রূপ আমাকে
মোহাচ্ছন্ন করেছিল, তোমার দিকে
তাকিয়ে ছিলাম অপার বিস্ময় নিয়ে,
তুমি আমায় দেখে তোমার বুকের
একফালি সলিল আঁচল দিয়ে
লজ্জা ঢাকার ব্যর্থ প্রয়াস
আমার মনের মাঝে দাগ কেটে গেল।
দেখেছিলাম তোমার পাথুরে রূপের
মাঝে লুকিয়ে থাকা কোমল সৌন্দর্য,
তোমার ভালোবাসা আমাকে করলো অবাক,
নিজের বুকের মাঝে রেখেছো পাথর রাশির ভার,
জমিয়ে রেখেছো অন্যের জঞ্জাল, তবু তো তোমার
নেই কোনো অভিযোগ, বলো আমায়
কোথা থেকে পেয়েছো মনের এতো ধী-শক্তি?
তোমাকে এতো ভালো লাগলো,
হয়তো ভালোও বেসে ফেলেছি আমি,
তবুও তো তোমাকে আপন করতে পারলাম না,
পারলাম না আমি তোমার কাছে থাকতে।
বলতে পারিনি আমি তোমার কাছাকাছি
থাকতে চাই, তোমার সান্নিধ্যে,
মনেই রয়ে গেল না বলা কথা।
ফিরে এলাম নিজের জগতে, কিন্তু তোমার কথা
রয়ে গেল মনের অন্তরালে, সবার আড়ালে।
কেটে গেল কয়েকটা মাস, বেড়িয়ে পড়লাম
আবার ঘরছাড়া হয়ে তোমার টানে।
মনের মাঝে সংশয়, চিনতে কি পারবো তোমায়?
তোমার কি মনে আছে আমার কথা? জানি না!
আবার তোমাকে দেখলাম ভরা শ্রাবণে,
বৃষ্টির জলে তোমার নতুন রূপ,
তোমার সেই রুক্ষ, শীর্ণ দেহ এখন
নব-যৌবনে ভরা মোহময়ী।
তোমার প্রাণ-চঞ্চল উচ্ছলতা
আমাকে নতুন দিগন্তের দ্বার খুলে দিল।
তোমার দুকুল ছাপানো জলরাশির
কুলুকুলু ধ্বনি আমার কানে
জলতরঙ্গ বাজিয়ে যাচ্ছে।
কতো না বলা কথা যেন আমি
অনুভব করতে পারছি।
ওগো অনামিকা-নদী, তোমার রূপ,
তোমার সৌন্দর্য আমায় মুগ্ধ করেছে।
বারে বারে আসবো আমি তোমার কাছে,
কথা দাও দেবে না ফিরিয়ে তুমি,
তোমার তটে বসে আমি
বলবো সুখ-দুঃখের কথা
শুনবো তোমার বুকের মাঝে
জমিয়ে রাখা ব্যথার কাহিনী।
রচনাকাল : ২/১২/২০১২
© কিশলয় এবং Swapan Das কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।