প্রকৃতির নিয়মে জন্ম নিয়ে
সমাজের বুকে বড়ো হওয়া,
মানুষের মতো মানুষ হবে
শুধু এই ছিল তার চাওয়া।
স্বপ্ন ছিল দু-চোখে রঙ্গীন
আশাও ছিল না কম,
নির্বুদ্ধিতায়, নিয়তির মায়াজালে
কম পড়ে গেল দম।
নাম ছিল বাসন্তী রূপেও চমক
ছিল না কম কিছু,
তবু পায়ে পায়ে বিপদ তার,
এগিয়ে আসে পিছু পিছু।
চাকরীর নামে শহরের বাবু
বেচে দেয় নোংরা গলিতে,
বাসন্তী আজ বানোয়ারী-বাঈ
নামে খ্যাত শহরতলিতে।
রাত-ভোর শুধু পুরুষের লোভ
কামনা আর বাসনার দাম,
কত চাহিদা ফুরোয় না তাদের,
শরীরের ডান বা বাম।
ধস্তাধস্তি পুরুষালি জোর
অবশেষে যা কিছু শরীরের,
নোংরা নর্দমা মনে করে আবর্জনা,
নিক্ষেপ করে শরীরে মেয়েদের।
এ জীবন ক্রমে দুঃসহ লাগে
ভাবনায় শুধু ক্লান্তি,
বাসন্তী পুরোনো স্বপ্নের কথা
মনে করে পায় শান্তি।
তারও মনে ছিল অনেক আশা
ছোট্ট একটি ঘর,
একটি বা দুটি ফুটফুটে শিশু
ভাল মানুষ একটি বর।
অবশেষে এক সৎ মানুষ
তাকে উদ্ধার করে বলে,
চলো বাসন্তী আজ তোমার,
পাপের মুক্তি হবে।
শাঁখা, সিঁদুরে, আজ বাসন্তী
গাঢ় - লাল পাড় শাড়ীতে,
প্রদীপ জ্বালিয়ে শুভ বোধনে,
আজ যাবে সে গৃহস্থ বাড়িতে।
দেবতা সাক্ষীতে জ্বলজ্বল সিঁদুর
মুছে গেছে বানোয়ারী নামের কলঙ্ক,
কারন বাসন্তী পুজোর রং হয়না
ফিকে, সে নাম শুধু জ্বলন্ত।
দুজনের মাঝে তফাৎ শুধু
বিবেক আর রুচি- বোধের,
একজন বিসর্জন আর একজন,
পরিচয় দেয় বোধনের............!!!!
রচনাকাল : ৬/১/২০২০
© কিশলয় এবং সুমিতা সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।