বিয়ে হয়েছে নন্দিনীর সবেমাত্র ১ বছর হয়েছে। বর সুদর্শন, নাম রাজর্ষি চক্রবর্তী, নেভি ইঞ্জিনিয়ার। ভালমতো স্বামীকে বুঝে ওঠার আগেই চাকরিতে যাবার ডাক এসে যায়, রাজকে চলে যেতে হয়।
সামনে আসছে ঋতুরাজ বসন্ত, নন্দিনী তার সমস্ত মন প্রান দিয়ে কল্পনায় এঁকে চলেছে, আসন্ন বসন্ততে সে আর রাজ মিলে গাছেদের নতুন পাতার গল্প শুনবে। আগুনরঙা পলাশ বসন্তের উপন্যাস লিখবে রাজের কোলে বসে।
দুজনে অনেক মজা করবে, সময়ের কারনে সেভাবে একে অপরকে চিনে ওঠাই হয়নি ঠিক করে।
প্রথম দিকে ঘন ঘন চিঠি আসতো, কিন্তু এখন অবশ্য অনেক দেরী করেই আসছে চিঠিগুলো।
ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ একদিন দুপুরে পিওন এসে চিঠি দিয়ে গেল, চিঠি পেয়ে নন্দিনী তো খুশীতে দিশেহারা, এবার বুঝি সে আনন্দে পাগলই হয়ে যাবে। খাওয়া শেষ করে হাত ধুয়ে এসে খামটা খুলতেই নন্দিনী বাকরুদ্ধ। বিদেশে হঠাৎ করে অ্যালেন নামে এক বিদেশিনীর সাথে আলাপ, সামনের বৈশাখে তারা বিয়ে করতে চায়।
এবার পরবর্তী চিঠিতে রাজ লিখেছে, যেহেতু ডিভোর্স নিতে গেলে এক বছর আলাদা থাকতে হয় তাই নন্দিনী যদি মিউচুয়্যাল ডিভোর্সটা দিয়ে দেয় তাহলে সে নন্দিনীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। না হলে অগত্যা রাজকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। সেখানে অবশ্য একের অধিক বউ রাখা যায়।
রাগে, দুঃখে, অভিমানে, লজ্জায়, ভেঙ্গে পড়ল নন্দিনী। ভেবে পেলনা জবাবে কি জানাবে? অভিযোগ না ডিভোর্সের জন্য 'হ্যাঁ'??
চোখের জল মুক্তোর মত চিঠির ওপর বসন্তের আগাম পলাশ হয়ে ঝরে পড়ল। নন্দিনী বাকরুদ্ধ। শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরের কাছেই অভিযোগ জানাল, কেন তার ওপরে এই অবিচার?? তার দোষ কোথায়??
ভালবাসা, সম্পর্ক, এসবের কি কোনও দাম নেই? নাকি একের অধিক নারী- কামনাই জীবনের লক্ষ্য??
রচনাকাল : ২৯/১২/২০১৯
© কিশলয় এবং সুমিতা সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।