বয়স যত বাড়ছে ,ততই যাচ্ছে কমে স্মৃতি,
সেই কারণে হচ্ছে নানান ক্ষতি ও দুর্গতি।
সময় মত পাই না খুঁজে মোবাইল,হাত-ঘড়ি,
কলম থাকে পকেটে তা ও কলম খুঁজে মরি!
ছাতা হারাই ঘন ঘন,রুমাল তো আকছার,
টাকা ছাড়াই বাজার গিয়ে শেষেতে হয় ধার।
চশমা ছাড়া চক্ষু অচল,চশমা নিতে ভুলে,
অফিস গিয়ে পড়লে খেয়াল,কাজটা রাখি ফেলে।
চেনা লোকের নাম ভুলে যাই,ভুলি যে ঠিকানা,
রাস্তা ঘাটে আলাপ হ'লে বাড়ে বিড়ম্বনা।
হঠাৎ দেখা,কেউ হয় তো ক'রে নমস্কার -
বলে, "দাদা ,তোমার বাড়ী গেছি অনেক বার।
কেমন আছ ? লিখছ কি আর ? যাচ্ছ এখন কোথায় ?"
হাতড়ে বেড়াই,কি নাম যে এর ?ঠিক আসে না মাথায়।
ভাব বাচ্যে 'হ্যাঁ','হুঁ' ব'লে কেবল মাথা নাড়ি,
"কাজ আছে ভাই,চলি এবার"- বলেই সরে পড়ি।
এক দিন তো ভুল করে হায় বাথরুমেতে গিয়ে-
কমোডেতে বসেছিলাম খবর কাগজ নিয়ে!
দেশ বিদেশের খবর পড়ায় ছিলাম যে মশগুল,
কি কারণে কোথায় বসা,সবই হ'লো ভুল।
ঘন্টা কয়েক পরে যখন কোমর হ'লো ব্যথা,
তখন মনে পড়লো,ছিঃ ছিঃ!! বিগড়ালো কি মাথা ?
ভাগ্যি ! তখন ফাঁকা বাড়ী,কেউ ছিল না ঘরে,
লজ্জা কেমন পেতাম,যদি যেতাম ধরা পড়ে ?
সে দিন হঠাৎ সন্ধ্যা থেকেই মন টা আলুথালু,
সুরা পানে ক্লান্ত শরীর,চক্ষু ঢুলুঢুলু।
রঙীন নেশার গভীর ঘুমে স্বপ্নে অচেতন,
দেখতে পেলাম,সাগর তটে করছি বিচরণ।
হনোলুলুর উপকূলে নীল নয়না নারী,
দিগ্বসনা,সোনার রোদে শয়ান সারি সারি।
জীবনেতে দেখতে পেলে এমন মধুর ছবি,
চড়চড়িয়ে কাব্য লেখার ইচ্ছা জাগে কবি।
তাকিয়ে দেখি,সুন্দরীদের লাগছে ছায়া ছায়া,
নীল সাগরের জলে কোমল নীল আকাশের মায়া।
কচলিয়ে চোখ বুঝতে পারি,চশমা তো নেই চোখে,
হনোলুলু ভ্রমণ মাটি,মরি তার ই শোকে।
শত ধুলে ও কয়লা কালো,স্বভাব না যায় ম'লে,
স্বপ্নে সাগর তটে যেতেও চশমা গেছি ফেলে।
চশমা যদি থাকতো চোখে,কতই হ'তো মজা !
ভুলো মনের মানুষ হয়ে পেলাম এমন সাজা।
************************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
************************************
রচনাকাল : ২৯/৩/২০১৩
© কিশলয় এবং শ্রী সমর কুমার সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।