হাড়-কৃপণের কড়চা
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

কবি : শ্রী সমর কুমার সরকার
দেশ : INDIA , শহর : Siliguri

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১২ , আগষ্ট
প্রকাশিত ৪৮ টি লেখনী ৫৬ টি দেশ ব্যাপী ৬৬৪৯০ জন পড়েছেন।
হাড়-কৃপণের কড়চা
*************
হাড়-কৃপণের সঙ্গে কারো আছে জানাশোনা ?
ওদের নিয়ে মজার মজার গল্প আছে নানা।
অর্থ ব্যয়ে কাতর হলে কৃপণ বলা যায়,
হাড়-কৃপণে ব্যয়ের ভয়ে আধাপেটাই খায়।
পরিচিত হাড়-কৃপণ এক বন্ধু তাপস গিরি,
যেমন কৃপণ,তেমনি ত্যাঁদড়,বদমাইসের ধাড়ী। 
সকালে চা এক পেয়ালা,না দিয়ে দুধ,চিনি,
বানিয়ে নাকি ভাগ করে খায় কর্তা ও গৃহিণী।
কানা বেগুন,পাকা পটল,দাগী আলু যত,
বাজার ঘুরে কেনে তাপস দর হলে মন মত।
ফুলকপি আর বাঁধাকপির ছাঁটাই পাতা পেলে,
ব্যাগ ভরে সব কুড়িয়ে আনে গরুর কথা বলে।
কড়াই ভরা গরম জলে সবজি ও চাল,ডাল,
সিদ্ধ করে গিন্নী রাঁধে খিচুড়ি ঝাল ঝাল।
এক বেলা যা রান্না করে,দুই বেলা তাই খায়,
এমন ভাবে বাঁচিয়ে খরচ,কি জানি সুখ পায়।।

মাসে দু দিন বরাদ্দ মোট ট্যাংরা,পুঁটির ঝাল,
রুই,কাতলের বায়না হলেই তাপস ক্ষেপে লাল।
মাঝে মাঝে মোটা ভাতের সঙ্গে আধা ডিম,
মাংস খেতে খরচ অনেক সেই ভয়ে হিমশিম।
স্নো,পাউডার,সাবান,মাজন তাতেও কড়াকড়ি,
সস্তা খেলো জামা কাপড়,সস্তা তাঁতের শাড়ী।
খাট-বিছানা,চেয়ার,টেবিল পুরানো তেলচিটে,
সচ্ছলতার চিহ্ন কোথাও যায় না দেখা মোটে।
অথচ এই তাপস গিরির ব্যবসা তেজারতি,
লাভ যেখানে ভীষণ রকম,নেই কোন রূপ ক্ষতি।
গৃহিণী তার কূপণতার শিকার হয়ে দুঃখে,
সারা দিনই দিচ্ছে গালি,যা আসে তা মুখে।
“কৃপণ বুড়ো আমায় কেন করতে গেলি বিয়ে?
ঢ্যামনা ব্যাটা মর না কেন গলায় দড়ি দিয়ে।
এত লোকের হচ্ছে মরণ,তোর কি মরণ নাই?
মরলে রে তুই তোর টাকাতে আরাম করে খাই।”

অপমানের জ্বালায় শেষে ক্ষিপ্ত তাপস গিরি,
পথ খুঁজে পান,মুক্তি পেতে গলায় দেবেন দড়ি!
পাকাপাকি স্থির করে সব হিসাব কষেন মনে-
শক্ত দু হাত পাটের দড়ি আনতে হবে কিনে।
বাজারে খোঁজ করতে গিয়ে অবাক তাপস গিরি,
প্রমাণ মাপের প্রতি গোছায় পনের হাত দড়ি।
‘দুই টাকা হাত’-এই হিসাবে তিরিশ টাকা দাম।
শুনেই তাপস গিরির দেহে ঝরতে থাকে ঘাম।
দু হাত হলেই কাজ চলে যায়,বাড়তি তের হাতে
গচ্ছা যাবে প্রচুর টাকা,বড়ই ক্ষতি তাতে।
সারা জীবন কষ্ট করে এত হিসাব কষে,
মরার আগে সইতে হবে এমন ক্ষতি শেষে?
গিন্নী যতই দিক না গালি,সহ্য তবু হয়,
মরতে গিয়ে টাকার ক্ষতি কোন মতেই নয়।
এসব ভেবেই তাপস গিরি-র জাগলো অভিমান,
কপাল জোরে রক্ষা পেলো ঘোর কৃপণের প্রাণ।

“কৃপণ ঘরে গামছা পরে,দেয় না জামা গায়,
মরে গেলেও দু-এক চামচ ঘি কিনে না খায়।
ঠোঙ্গার গায়ে হিসাব লেখে,কেনে না পেন,খাতা,
এক জুতোতে জীবন কাটায়,এক রুমাল আর ছাতা।
কাটা আলু,কানা বেগুন অল্প দামে কিনে,
আধা-পোড়া তরকারি খায় মশলা ও তেল বিনে।
মাছ যদি খায় মাসে দু দিন,ডিম বড় জোর চার,
আড়াইশো গ্রাম মাংস কেনে বংসরে এক বার।”
এমন নানা গুজব শুনি লোকের মুখে মুখে,
কৃপণ তবে পাগল না কি ? বাঁচে সে কোন সুখে ?
গরীব,কৃপণ এক কথা নয়,ধনী ও কৃপণ হয়,
কৃপণতা মনের অসুখ,খরচে পায় ভয়।
হাড়-কৃপণের হয় না অসুখ,খায় না ওষুধ,বড়ি,
নিজের টাকায় খায় না কো বিষ,দেয় না গলায় দড়ি।
গায়ে আগুন দিতেও লাগে ডিজেল,কেরোসিন,
কৃপণ রা তাই আত্মঘাতী হয় না কোন দিন।।


******************************
সমর কুমার সরকার/শিলিুড়ি/২৪.০৩.২০১৬.
রচনাকাল : ২৬/৩/২০১৬
© কিশলয় এবং শ্রী সমর কুমার সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Australia : 1  Bangladesh : 7  Canada : 3  China : 16  Germany : 4  Hungary : 2  India : 214  Ireland : 3  Russian Federat : 9  Saudi Arabia : 5  
Ukraine : 33  United Kingdom : 3  United States : 265  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Australia : 1  Bangladesh : 7  Canada : 3  China : 16  
Germany : 4  Hungary : 2  India : 214  Ireland : 3  
Russian Federat : 9  Saudi Arabia : 5  Ukraine : 33  United Kingdom : 3  
United States : 265  


© কিশলয় এবং শ্রী সমর কুমার সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
হাড়-কৃপণের কড়চা by SAMAR KUMAR SARKAR is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৪৮৫১১৭
fingerprintLogin account_circleSignup