ভাগ্যবিচার
*********
ভাগ্য আমার আগা-গোড়াই ঘোর প্রতিকুল,মন্দ!
যা কিছু চাই,উল্টোটি পাই,লেগেই থাকে ধন্দ।
আগামী দিন কাটবে কেমন জানতে গেলাম তাই,
হাতের রেখা দেখেই গণক তুলতে থাকেন হাই-
বলেন-“মশাই,হাত এ তো নয়,ইতিহাসের খাতা!
হাজার রকম রেখার ভীড়ে জট বাঁধা এক পাতা।
কোথায় যে সব রেখার শুরু,শেষ কোথা যে তার,
এমন হাতের করবে বিচার,সাধ্য আছে কার ?
নেহাত আমি জ্যোতিষ গুরু ভৃগুরামের চেলা,
আমার এ চোখ ফাঁকি দেওয়া,নয় তো ছেলেখেলা।
ধৈর্য ধরে,বিচার করে,বলছি বিশদ ভাবে,
খাটনি দ্বিগুণ,দক্ষিণা তাই হাজার দিতে হবে।
এ কি মশাই! জীবন-রেখাই নাই আপনার হাতে !
দিব্যি বেঁচে আছেন তবু বহাল তবিয়তে ?
হৃদয় রেখা যাচ্ছ দেখা বিভক্ত কয় ভাগ,
ভাগ্য রেখার স্থানে কেবল তেরছা কিছু দাগ!
বুধের দশা সর্বনাশা,ভাগ্য অধোগতি,
দোষ কাটাতে ধারণ করুন পান্না বাইশ রতি।
গ্রহপতি বৃহস্পতি,তাও যে দেখি বাঁকা,
কেমন করে আসবে ঘরে সহজ পথে টাকা ?
পীত পোখরাজ বাঁধিয়ে রূপায় কম সে রতি বারো,
অনামিকায় করলে ধারণ,কাটবে এ সব গেরো।
শুক্র চাপা,শনির কোপে সাবাড় হবার পালা!
খাঁটি হীরা আট রতি চাই,দশ রতি চাই নীলা।
মঙ্গলে দোষ,সারা জীবন ঘটবে অমঙ্গল !
চৌদ্দ রতির রক্ত প্রবাল পরলে পাবেন ফল।
সবই যখন হলো,তখন বাদ কেন দেন শুনি ?
তুষ্ট হবে রবি,পরুন দশ রতি এক চুণি।
কপাল ভাল,চন্দ্র প্রকট তুঙ্গে,মহাতেজী!
সুন্দরী সব নারী মশাই করবে খোঁজাখুঁজি !!
চন্দ্র প্রবল হলে কি হয়,জানেন কি তার মানে ?
নারীরা সব ছুটে আসে অজানা এক টানে।
ওদের থেকে মুক্তি পেতে,মুক্তা পরুন ভাই –”
হাজার টাকা ফেলে বলি-“আর কিছু না চাই।
পান্না,হীরা,চুণি,নীলা,পোখরাজে কি হবে ?
নারীর ভালবাসা পেলেই জীবন কেটে যাবে।”
******************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
রচনাকাল : ১৪/১/২০১৬
© কিশলয় এবং শ্রী সমর কুমার সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।