মানুষ যখন ব্যাস্ত নিজেকে নিয়ে
প্রকৃতি যেন ফিরে এসেছে নিজ উদ্যমে,
প্রায় হাসি মজার খেলায় মেতে।
কলকারখানা, গাড়ি ঘোড়া সব আজ স্তব্ধ,
তারই আছিলায় আকাশ যেন আজ নীলাভ,
বাতাসে বাতাসে আজ শুধুই স্নিগ্ধতা।
উৎসব, উল্লাস, মাইকের কলরব আজ সব খান্ত,
তাই পাখির কণ্ঠে যেন প্রকৃতির সুরেলা গন্ধ।
নদীনালা, মাঠঘাট, বালিময় সমুদ্র সৈকত
যেন কুলকুল উচ্ছ্বাসে বায়ুর সাথে কথাকয়।
পশুপাখিরা যত্র তত্র আজ করছে বিচরণ,
মানুষ আজ খাঁচা বন্দী, বেড়তে বারণ।
দূষণের উচ্চ মাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায়,
প্রকৃতি যেন বুঝতে পারছে তার আসল কারণ।
সারা বিশ্বে আজ এক শ্রেণী প্রাণী নাস্তানাবুদ,
সেখানে অন্যান্য প্রজাতিরা যেন মজায় গুল।
ডলফিন, কচ্ছপ আরো অনেক লুপ্ত প্রায় প্রাণী,
শান্ত, স্বচ্ছ জল তটে দিচ্ছে আজ পাড়ি।
মানুষের শোরগোল যে তাদের বাস্তু বিরুদ্ধ,
সেটাই যেন নিঃশব্দে সকলকে করছে অবগত।
যখন গাছপালা, পশুপাখি পুড়েছে আগুনে,
করেছে আর্তনাদ তারস্বরে মাসের পর মাস,
মানুষ জাতি দেখেছে তাকিয়ে গেয়ে মানবতার গান;
তবু তারা পিছুপা হয়নি দূষণ ছড়ানোর কাজ হতে। লেলিহান অগ্নি শিখা একের পর এক নৃশংসভাবে
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে করেছে ছাই প্রকৃতির সবুজ আবাস;
তবু পড়েনি ভাঁটা মানুষের আবিষ্কারের জোয়ারে।
বিশ্ব মাঝে উন্নয়নের নামে করে চলেছে বহু আবিষ্কার;
তারই মাঝে বিপদ এনে নিজের ঘরও করেছে উজাড়।
আজ প্রকৃতি উদাসীন প্রায় মানব হাহাকার শুনে;
বিশ্ব মাঝে শত শত মানুষ নিহত মহামারীর কবলে,
তবু প্রকৃতি প্রতিশোধের রূপে হয়েছে রুষ্ঠো মনা,
তাই যতই ডাকা হোক দেবে না সে কোনো সাড়া।
মা বলে ডেকেও মানুষ করেছে মায়ের আঁচল কালো,
সেই মায় আজ নিরব দর্শক, শান্তি নেই কারোর।
প্রকৃতি তবু মায়ের মতই দাঁড়িয়ে নিয়ে স্নেহের আঁচল,
কিন্তু সে তো মানব আচরণে হয়েছে বড়ই কালো।
আজ দুষ্টু শিশু ঘরে ফিরছে বাইরের তাড়া খেয়ে,
হাই! ঘর সে আগেই ভেঙেছে দুষ্টুমির কবলে পড়ে।
রচনাকাল : ৩১/৩/২০২০
© কিশলয় এবং লোপা দাস কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।