বড় হবো , দেখে নিয়ো মা
সংকল্প মনে মনে ,
একছুটে স্কুল, ফোর পেরিয়ে ফাইভের প্রথম সে
কাঁচা মনে পাকা স্বপ্নের দানাগুলো বাসও বাঁধেনি তখন
কৈশোরের ফোঁটা ফুল
হটাত পেশোয়ারে সেনা স্কুলে হামলা কোন এক কারনে
হটাত কোথা থেকে গুলিবর্ষণ
ঝাঁজরা করা বুক , মা মা দুবার চিৎকারেই সব শেষ,
রক্তাক্ত প্রতিচ্ছবি সমাধিকক্ষের খোলা দুয়ার
রক্তের বিছানো গালিচা
অবাক পৃথিবী যেন থমকে রইলো কিছুক্ষণ
নিঃশ্বাসের স্তব্ধ নীরবতা বিনম্র শ্রদ্ধায় শোকে
সারা দেশের আঁতকে ওঠে কান্নায়
রাস্তার অভুক্ত কুকুর গুলোও দেখেছিলো লাশ
কি যেন আতঙ্কিত গন্ধ শুঁকেই ল্যাজ গুঁটিয়ে দৌড়
স্কুলের নিস্পাপ শিশুর লাশে বিছানো রাস্তা
নিষ্প্রাণ রক্তের লালে ভাসা লাশ লক্ষ্যই পড়েনি কারো
কে জানি কে খবর দিয়েছিল পিঁপড়ে কে ,
কয়েকটা পিঁপড়ে থেকে যেন এখন একদল-
একদল পিঁপড়ের মিছিল - ধিক্কার মিছিল
কে জানি কে খবর দিলো সারা দেশ
মুহূর্তেই ছড়িয়ে গেলো খবর, আশপাশের কয়েকটাকেও
আঁতকে উঠলো মা খবর পেতেই , মাথা গেলো ঘুরে।
মা এর মন তো –এই বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলো যদিও অনেকেই
পাড়া প্রতিবেশীরা ,
চোখের সামনেই পর্দা ভাসছে – খোকা বলছে
“ বড় হবো , অনেক বড় হবো দেখে নিয়ো মা ”
কাঁচের বোতলের মতোই হটাত চুরমার স্বপ্নটা রাস্তায়
কেইবা জানতো জঙ্গি হামলার বলীর পাঁঠা হবে কুঁড়ির ফুল
ভিজে যাচ্ছে শাড়ির আঁচল রক্ত নদীর ধারায় ছেলের স্বপ্নে
খুব ভিড় হয়েছিলো সেদিন , দেখতেও এসেছিলো অনেকে ,
কত নেতা , মন্ত্রী , রিপোর্টার ক্যামেরা নিয়ে সম্প্রচার
দুষ্কৃতীর হামলা ইত্যাদি ইত্যাদি খবর
মিডিয়া, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, ফেসবুকের
আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিলো পৈশাচিক ঘটনাটি
স্বচ্ছ দেশ সৃষ্টির বিপ্লবে -
অভাগিনী মায়ের এখনো স্বপ্ন- বড় হবে, অনেক বড় হবে খোকা।
কোন এক শ্রান্ত দিনে খোকা বলবে –অনেক বড় হবো মা
ছেলের মতো মাও এখন স্বপ্ন দেখে - অনেক - অনেক স্বপ্ন ।
-------------------------------------
রচনাকাল : ২২/১২/২০১৪
© কিশলয় এবং টিংকর পাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।