• ৯ম বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা (১০০)

    ২০১৯ , সেপ্টেম্বর



শক্তি
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখিকা : মনি রায় ঘোষ
দেশ : India , শহর : Kolkata

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , জুলাই
প্রকাশিত ৪৮ টি লেখনী ৪১ টি দেশ ব্যাপী ৩১৬৭৯ জন পড়েছেন।
বছর ত্রিশের সোনালীর বিয়েটা আর হয়নি। তার চেয়ে বলা ভালো ও নিজেই করেনি। সম্বন্ধ তো কম এলোনা কিন্তু সোনালী সবাইকেই নাকোচ করে দিয়েছে। বিয়ে ব্যাপারটাতেই ওর বরাবরের আপত্তি। মেয়ে হয়ে জন্মালে বিয়েটা করতেই হবে? নিজের মত করে বাঁচার কি কোন অধিকার থাকবেনা? যদিও সোনালী কারো ওপরে নির্ভরশীল নয়, ভালো চাকরি করা মেয়ে সে। বরং দাদা বৌদি বাবা মা ওকে একটু তেলিয়েই চলে। কেউ সাহস করে বিয়ের কথা আর বলেওনা। দেখতে শুনতে ভালো, দেহের গড়ন আকর্ষণীয় তাই অনেক পুরুষের লোভনীয় দৃষ্টির শিকার হতে হয়েছে বহুবার। অনেক কু-প্রস্তাবও পেয়েছে, সব একা হাতে সামলেছে সোনালী। কাকে কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় সেটা বেশ ভালো করেই আয়ত্ত করেছে সে। এই সমাজে একা কোন পুরুষের সাহায্য ছাড়া বাঁচতে গেলে নিজেকে অনেক শক্তিশালী হতে হয়। সেটা সোনালী খুব ভালো করেই জানে।

সেই ছোটবেলা থেকে নিষ্ঠা ভরে শিব-পার্বতীর পুজো করে এসেছে নিষ্ঠা ভরে শিবের মাথায় জল ঢালে। মেয়েরা শিবের মত স্বামী পাওয়ার জন্যই শিব পুজো করে সেটাই কথিত আছে। কিন্তু সোনালী কোনদিন শিবের মত স্বামী চায়নি। বরং শিবপত্নি পার্বতীর ন্যায় শত্রুনিধনের শক্তি চেয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য শিবের মত স্বামী না হলেও চলে কিন্তু পার্বতীর মত শক্তি না হলে মেয়েদের বেঁচে থাকাটা খুব শক্ত হয়ে দাঁড়ায়।

তাই কোনদিন কোন পুরুষের দায় হতে চায়নি সে। বরং নিজেই নিজের দায়িত্ব নিয়েছে। সোনালী ঠিক করেছে অনাথ আশ্রম থেকে একটা মেয়ের দায়িত্ব নেবে সে।যদিও তার ছুটির দিনটা সে একটা অনাথ আশ্রমের অনেকগুলো বাচ্চাদের সাথেই কাটায়। অন্তত একটা দিন ওদেরকে ভালো রাখার দায়িত্ব সোনালীর। তবুও মা ডাক শোনার ইচ্ছে কার না হয় তাই একজনকে ও দত্তক নেবে।

এই মানসিকতার জন্য নানান লোকের কাছ থেকে নানান মন্তব্য শুনতে হয়েছে। কেউ কেউ ওকে বাহবাও দিয়েছে। প্রশংসা করেছে ওর সাহসের আবার কেউ কেউ ব্যঙ্গ করেছে। পরোয়া করেনি কখনো। ও জানে নিজের মত বাঁচতে গেলে এসবের সম্মুখীন ওকে হতেই হবে তাই হাসি মুখে সামলে নিয়েছে সবটা। মেয়েদের মধ্যেই যে মা দুর্গার বাস, সেটা মেয়েরা চাইলেই পারে মা কালীর মত তেজস্বীনী হতে। চাইলেই তারা হাতে খর্গ নিয়ে শত্রু নিধন করতে পারে। ছেলেরা ভুলে যায় নারীর মধ্যেই দেবীর বাস কিন্তু মেয়েদের সেটা মনে রাখা খুব দরকার নয়ত মানসিক আর শারীরিক দুদিক থেকেই যে বড্ড দুর্বল হয়ে পড়বে। এই সমাজে অত্যাচারিত পীড়িত মেয়েদের সংখ্যা সীমাহীন যারা অন্যের ওপর নির্ভরশীল। যারা বিয়ে ছাড়া, পুরুষের সাহায্য ছাড়া জীবনটাকে কল্পনাই করতে পারেনা। তাদের মধ্যে সোনালীর মত মেয়েরাও আছে, যদিও সংখ্যায় খুব কম। মেয়েরা চাইলেই নিজের পা-এর নীচের মাটি শক্ত করে নিজের মত বাঁচার রাস্তা খুঁজে নিতে পারে।
রচনাকাল : ১১/৮/২০১৯
© কিশলয় এবং মনি রায় ঘোষ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 21  China : 22  France : 2  Germany : 6  India : 238  Ireland : 23  Romania : 1  Russian Federat : 7  Saudi Arabia : 7  
Sweden : 9  Ukraine : 28  United Kingdom : 3  United States : 332  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 21  China : 22  France : 2  
Germany : 6  India : 238  Ireland : 23  Romania : 1  
Russian Federat : 7  Saudi Arabia : 7  Sweden : 9  Ukraine : 28  
United Kingdom : 3  United States : 332  
লেখিকা পরিচিতি -
                          মনি রায় ঘোষ ৮ ই ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশের বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তারপরে, খুব ছোটবেলায় তাঁর পরিবার কোলকাতা পাড়ি দিয়ে এখন কোলকাতার সোদপুর নিবাসী।

খুব ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি তাঁর ভালবাসা আর সেই থেকেই লেখার জগতে পদার্পণ। বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তার জন্মস্থান বাংলাদেশ থেকেও তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটগল্প এবং অনুগল্প লেখেন। এছাড়াও অনলাইন পত্র পত্রিকাতেও তার লেখা পাওয়া যায়। 
                          
  • ৯ম বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা (১০০)

    ২০১৯ , সেপ্টেম্বর


© কিশলয় এবং মনি রায় ঘোষ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
শক্তি by Moni Roy Ghosh is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৬২৮২৪৯
fingerprintLogin account_circleSignup