যেদিন সমুদ্রের জলে গ্যালন গ্যালন অপরিশোধিত তেল
আর কারখানার তরল পড়েছিল নীল-সবুজ জলে
শয়ে শয়ে মাছ আর জেলিফিস ভেসে উঠেছিল,
ডলফিনের পাখনার স্যুপ খেয়েছিলাম আমরা
কাঁচের টেবিলে বসে,
একটা মরে যাওয়া নীল তিমি নিয়ে
থিসিস নামিয়েছিল কোনো এক সাংবাদিক।
প্রকৃৃতি সেদিন চুপ করে ছিল।
আমাজন কিংবা উত্তরাখণ্ডের জঙ্গলে যেদিন আগুন লেগেছিলো
উষ্ণায়নের ফলে রক্ত রঙের দাবানল লেগেছিলো যেদিন,
জ্বলে যাওয়ার সময় হাঁ করে আকাশের দিকে
তাকিয়ে ছিলো একটা শিশু হরিণ,
একটা ছোট্ট হলুদ রঙের পাখির ডানাগুলো
মোমের মতো গলে গলে পরছিলো তখন।
প্রকৃতি সেদিন চুপ ছিলো।
বাতাসে যেদিন থেকে গাঢ় হয়ে জমছিল বিষ
ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছিল কোনো এক ভবিষ্যতের শিশু।
বিকেলের দিকে বাড়ি ফেরার পথে
কোনো বসন্ত রঙ পাখির চোখে জল এসেছিলো,
শুধু বাজারে মাস্ক বিক্রি বেড়ে গিয়েছিল মাত্র।
প্রকৃতি সেদিন চুপ ছিলো।
অভয়ারণ্য কেটে যেদিন প্রাসাদ উঠল আকাশ ছোঁয়া
শহরের সব সবুজ মুছে দিয়ে সৌন্দর্যায়ন শুরু হল,
পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে গেল নাম না জানা কত প্রানী,
কত প্রানীকে নির্মম ভাবে মেরে ফেলে ডিনার টেবিলে সার্ভ করা হল
আর নয়ত ছাল ছাড়িয়ে চড়া দামে বেচে দেওয়া হল
এক দেশ থেকে আর এক দেশে।
প্রকৃতি সেদিন চুপ ছিলো।
কিন্তু আজ প্রকৃতি আর চুপ নেই।
প্রকৃতি দেখে নিয়েছে সেই হলুদ পাখির গলে যাওয়া ডানা,
প্রকৃতি শুনে নিয়েছে ডলফিনেদের কান্না,
প্রকৃতি বুঝে নিয়েছে গাছেদের হাহাকার।
এবার প্রকৃতি আদিম ভাবে জেগে উঠেছে।
রচনাকাল : ১/৬/২০২০
© কিশলয় এবং ঋত্বিকা গায়েন কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।