• ১০ম বর্ষ ১ম সংখ্যা (১০৯)

    ২০২০ , জুন



বিশ্ব পরিবেশ দিবস
আনুমানিক পঠন সময় : ৪ মিনিট

লেখিকা : মোনালিসা রায়
দেশ : India , শহর : হাওড়া

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , মে
প্রকাশিত ২২ টি লেখনী ৩১ টি দেশ ব্যাপী ১৬৭৭৮ জন পড়েছেন।
Monalisa Roy
আমরা জানি, ৫ ই জুন এই তারিখটিকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সমগ্র মানব জাতিকে পরিবেশ দূষণের ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে বাঁচাবার জন্য ও তাদের সচেতন করবার জন্য জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে ৫ ই জুন তারিখটিকে পরিবেশ দিবস হিসেবে বেছে নেবার সংকল্প করেছিল। সেই থেকে অদ্যাবধি এই তারিখটি সমগ্র বিশ্বের কাছে একটি পবিত্র দিন। কেননা এই দিনে মানুষকে ও আগামী প্রজন্মকে নতুন করে বাঁচাবার কথা চিন্তা করা হয় এবং সেইজন্য সুস্থ সবল জীবন ধারণের উপযোগী সুস্থ পরিবেশ গঠন করার সম্ভাব্য নানা দিকগুলি খুলে দেওয়া ও আলোচনা করা হয়। কারণ সুস্থ, সুন্দর পরিবেশ মানবজীবনকে এনে দেয় সুখ ও শান্তির এক অনাবিল আনন্দ। অসুস্থ পরিবেশ মানবজীবনকে করে তোলে ভয়াবহ দুর্দশাগ্রস্হ। 'অন্ন চাই, প্রাণ চাই, আলো চাই, চাই মুক্ত বায়ু, /চাই বল/চাই স্বাস্থ্য, আনন্দ উজ্জ্বল পরমায়ু।' এই মহাবিশ্বের জল, মৃত্তিকা, আলো, বাতাস, অরণ্য, মরুভূমি, প্রান্তর, মালভূমি, সৌরতাপ ও জৈব - অজৈব সমস্ত উপাদান মানবজীবনকে প্রভাবিত করে। তাকেই বলে পরিবেশ। এক বা একাধিক অন্তর্নিহিত কারণে কিংবা বাহ্যিক কারণে পরিবেশে স্বাভাবিক ধর্ম ও গুণাবলীগুলি ব্যাহত হলেই নানারকম বিপদসংকেত সৃষ্টি হয় ও পরিবেশ দূষিত হয়। মানব সমাজে অসেচতনতার পরিণামে সভ্যতার বিকাশ ঘটে। আবার সভ্যতার ক্রমবিকাশে উন্নয়নের পক্ষে বিবর্তনের পথে যান্ত্রিক সভ্যতার নিরঙ্কুশ প্রাধান্যের ফলে পরিবেশের বিশুদ্ধতা বিনাশ প্রাপ্ত হয়। জলে, স্হলে, আকাশে, কারণ - অকারণে পরিবেশ দূষিত হয়। এগুলি হল - জল-দূষণ, বায়ু-দূষণ, শব্দ - দূষণ, মৃত্তিকা - দূষণ, খাদ্য - দূষণ, বাসস্থান - দূষণ এবং ক্রমবর্ধমান যন্ত্র সভ্যতার বিকাশে প্রকৃতি ও পরিবেশ নানা ভাবে দূষিত হয়ে উঠে ও বিষময় হয়। ফলে নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের জীবন ঘোরতর সংকটের সম্মুখীন হয়। জলের আর এক নাম জীবন। কিন্তু সমাজ ও সচেতনতার অভাবে পৃথিবীর বারি মণ্ডল ও জল মন্ডল দূষিত হয়ে পড়ে। কলকারখানা ও যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া ও দূষিত বর্জ্য পদার্থ, কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে নালিকা পথে নদ-নদী ও খালে গিয়ে নোংরা মেশে ও জল দূষিত করে। তেমনিভাবেই রাসায়নিক পদার্থ ও মৃত্তিকা দূষণ করে। নীরবতা জীবনের পক্ষে মূল্যবান ও আয়ু বৃদ্ধি করে অথচ সমাজের বুকে প্রতিনিয়ত যানবাহন, কলকারখানা, মাইকের আওয়াজ ও বিস্ফোরণ, বাজি প্রভৃতি থেকে যে শব্দ উৎপাদন হয় তা সামগ্রিক জীবনকে - স্নায়বিক বৈকল্য,মানসিক ভারসাম্য হীনতা, শ্রবণশক্তি ক্ষীণতা, নিদ্রাহীনতা, রক্তচাপ বৃদ্ধি প্রভৃতি বিভিন্ন সংকটের মুখে ঠেলে দেয়। দৃশ্যদূষণ আর একটা দুর্ভাগ্যজনক দূষণ সংযোজন। কুরুচিকর বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন ও অশ্লীল উত্তেজক দৃশ্য তরুণ প্রজন্মকে বিপদগাম্য করে তোলে যা আগামী প্রজন্মের কাছে ভয়ঙ্কর। নানারকম বড় বড় হোর্ডিং মুক্ত বায়ুকে ব্যাহত করে। এছাড়াও নানারকম আণবিক, পারমাণবিক পরীক্ষা - নিরীক্ষা আগামী প্রজন্মকে বোধি-বিকলাঙ্গ করে তোলে। বিভিন্ন ধরনের খাদ্যাভ্যাস থেকেও নানান দূষণ সৃষ্টি হয়। বর্তমানে আমরা দেখলাম চীনে যেসব খাদ্য দ্রব্য তৈরী হয় তা থেকে সৃষ্টি হয়েছে এক মারাত্মক ভাইরাস। এই ভাইরাস থেকেই কোভিড - ১৯ রোগের উৎপত্তি। যার এখনও সুষ্ঠ চিকিৎসা কোনো দেশ ই করতে পারে নি। এটি এত মারাত্মক যে সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। তার ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ হানি ঘটছে। অনেকেই মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সরকার এই রোগের মোকাবিলার জন্য লকডাউন প্রথা চালু করেছে। অদ্যাবধি পঞ্চম লকডাউন চলছে। এই রোগের সর্ব শ্রেষ্ঠ উপায় হল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। যাতে সামাজিক পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেজন্য মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, যানবাহন, বাজার, দোকান-হাট বন্ধ রাখা হয়েছে। যাতে পরিবেশকে সুস্থ, স্বাভাবিক রাখা যায় ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়। অবশ্য পরিবেশকে সুস্থ রাখার জন্য এখন প্রচুর বৃক্ষ রোপন চলছে রাস্তার দুপাশে। বনানঞ্চল সংরক্ষণ করা হচ্ছে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য দূষণ মুক্ত বিভিন্ন বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। জল দূষণ মুক্ত করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ ও সচেতন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য লাউডস্পিকারের ব্যবহার অনেকটাই কমানো হয়েছে। পুজো ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে যেভাবে বাজি ফাটানো হয় তা পরিবেশের পক্ষে মোটেই অনুকূল নয়। এইসব দূষণ প্রতিরোধের জন্য সরকার ও জনসাধারণকে বিশেষ ভাবে এগিয়ে আসতে হবে ও সুন্দর মানবজীবন উপহার দেওয়ার জন্য দূষণ মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। এবং তাহাই হবে পরিবেশ দিবসের অঙ্গীকার। আমরা সকলেই মনে রাখব মানবতাবাদী সমাজ সচেতন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কবিতা- "প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল
               এই বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য 
                        করে যাব আমি
               নব জাতকের কাছে এ আমার 
                         দৃঢ় অঙ্গীকার।।" 
রচনাকাল : ৩১/৫/২০২০
© কিশলয় এবং মোনালিসা রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 33  China : 17  Czech Republic : 1  Germany : 4  India : 163  Ireland : 2  Russian Federat : 2  Saudi Arabia : 11  Sweden : 9  Ukraine : 8  
United Kingdom : 4  United States : 147  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 33  China : 17  Czech Republic : 1  Germany : 4  
India : 163  Ireland : 2  Russian Federat : 2  Saudi Arabia : 11  
Sweden : 9  Ukraine : 8  United Kingdom : 4  United States : 147  
লেখিকা পরিচিতি -
                          মোনালিসা রায় ১১ই ফেব্রুয়ারি হাওড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

উনি অনার্স গ্রাজুয়েট ও এম. এ। লেখালেখি করতে উনি খুবই ভালোবাসেন। ওনার লেখালেখির অনুপ্রেরণা ওনার বাবা, মা।

লেখালেখি ছাড়াও আঁকা, গানেও উনি সমান উৎসাহী। 
                          
  • ১০ম বর্ষ ১ম সংখ্যা (১০৯)

    ২০২০ , জুন


© কিশলয় এবং মোনালিসা রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস by Monalisa Roy is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৭১৪৯৭৪
fingerprintLogin account_circleSignup