• ১০ম বর্ষ ১ম সংখ্যা (১০৯)

    ২০২০ , জুন



আন্তর্জাতিক পিতৃ দিবস
আনুমানিক পঠন সময় : ৪ মিনিট

লেখিকা : মোনালিসা রায়
দেশ : India , শহর : হাওড়া

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , মে
প্রকাশিত ২২ টি লেখনী ২৮ টি দেশ ব্যাপী ১৪২৪৩ জন পড়েছেন।
Monalisa Roy
ইংরাজী বর্ষপঞ্জীতে জানুয়ারি মাস থেকে শুরু করে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় প্রত্যেক তারিখ ই কিছু না কিছু দিবস হিসেবে পালন করার জন্য সূচিত হয়েছে। সকলের পক্ষে হয় তো সব দিনগুলি মনে রাখা সম্ভব নয়। তবুও বিশেষ কয়েকটি দিন আপনা থেকে আমাদের স্মৃতি কোঠায় খুব সাধারণভাবেই গ্রথিত হয়ে আছে ।সেগুলি যেমন, ২৬ শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস, ২১ শে ফেব্রুয়ারী মাতৃভাষা দিবস, ৯ ই আগস্ট ভারত ছাড় দিবস, ১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস, ৯ ই আগস্ট ভারত ছাড় দিবস, ৫ ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস, ১৪ ই নভেম্বর শিশু দিবস, ২৫ ই শে ডিসেম্বর খ্রীষ্টমাস দিবস ইত্যাদি। কিন্তু এগুলো ছাড়াও এমন কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ দিবস আছে যেগুলি সম্পর্কে জানা আমাদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যেমন - ৫ ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস, মে মাসের ২ য় রবিবারে বিশ্ব মাতৃদিবস, ২৩ শে জুলাই বিশ্ব পিতা-মাতা দিবস। এইরকম আরও কত কী। তার মধ্যে ২০ শে জুন এই তারিখটি বিশ্ব পিতৃ দিবস উপলক্ষে আমরা প্রতিবছর পালন করে থাকি।
  
  একথা কাউকেই বলে দিতে হবে না যে, পিতা কী? আমরা এই সুন্দর পৃথিবীতে আমাদের পিতা মাতার জন্যই শ্রেষ্ঠ মানবজীবন লাভ করেছি। সমস্ত জীবকূলের মধ্যে মানবজীবন সর্বোৎকৃষ্ট। সুতরাং আমরা জন্মলগ্ন থেকেই পিতামাতার কাছে ঋণী। সন্তান প্রতিপালনের জন্য পিতা, মাতা উভয়েরই দায় সমান। তাঁরাই আমাদের প্রধান আশা ভরসা। তবে একথা অনস্বীকার্য, মাতা অপেক্ষা পিতার সন্তানের প্রতি ভূমিকা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। পিতাই আমাদের প্রকৃত শক্তির উৎস। তিনি বটবৃক্ষের ন্যায় সমস্ত সংসারের মহীরূহ আকার ধারণ করে দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি আমাদের যেমন ছায়া প্রদান করেন, তেমনি সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করেন। শৈশবে যেমন শিশুরা বিশেষভাবে মাতৃক্রোড়ে প্রতিপালিত হয় তখন মা হন তাদের কাছে সব। পরে ধীরে ধীরে পিতার প্রতি তার দৃষ্টি প্রস্ফুটিত হয়। যতদিন না শিশু মানুষ রূপে দাঁড়াতে শেখে ততদিন পর্যন্ত সন্তানের প্রতি পিতার অবদান অনস্বীকার্য তাকে প্রকৃত শিক্ষা প্রধান করা। শিষ্টাচার, সমানুবর্তীতা, শৃঙ্খলাবোধ, সততা, দানশীলতা, সুঅভ্যাস গঠন, সভ্যতা, ভদ্রতা সব ই শিশুরা প্রথমে তার মা ও তারপর বৃহদাকারে তাদের পিতার কাছ থেকে শেখে। শিশুর স্বাস্থ্য সম্বন্ধে সচেতনতা তার পিতার যেমন থাকে, তেমনি আর কারুর থাকে না। আমাদের সমাজে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যতা সকলের একরূপ হয় না। কারুর অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই ভালো থাকে, কেউ মধ্যবিত্ত, কেউ বা অত্যন্ত দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সংগ্রামী জীবনযাপন করে। এক্ষেত্রে অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে মেয়ে তার পিতার কাছ থেকে যে অর্থানুকূল্যতা পায় তাতে তাদের পড়াশোনার কোন বিঘ্ন ঘটে না। অপেক্ষাকৃত মধ্যবিত্ত সমাজের পিতামাতাদের তাদের সন্তানদের প্রতি বিশেষ ভাবনা চিন্তা করতে হয়। কারণ তাদের আর্থিক অবস্থা তদানুরূপ নয়। আবার একেবারেই যারা গরীব সেইসব পিতামাতার তাদের সন্তানদের প্রতি ইচ্ছা থাকলেও শিক্ষাব্যবস্থা বিশেষভাবে প্রদান করতে পারেন না। ফলে অল্প বয়সেই তাদের হয় তো পড়াশোনা ছাড়িয়ে দিয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য সন্ধ্যান করতে হয়। কিন্তু এদের প্রত্যেকের পিতামাতাই চান শত কষ্টের মধ্য দিয়েও তাদের সন্তানরা মানুষ হয়ে উঠুক। এক্ষেত্রে পিতারা যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তা আর কারুর মধ্যে দেখা যায় না। সামাজিক নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, শিক্ষানুষ্ঠান, দুর্গত-পীড়িত মানুষকে সাহায্যের জন্য তাতে যে বড়রা এগিয়ে আসেন তারা কারুর না কারুর পিতা। আবার তাদের সন্তানরা তাদের পিতার এই সব সেবামূলক কাজে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়।তাদের মধ্যেও তখন সমাজ সচেতনতা, ধর্মীয়ভাব, সেবা পরায়ণতা প্রভৃতি দিকগুলো জাগ্রত হয় যা ভবিষ্যৎ জাতির পক্ষে প্রধান সহায়ক হয়ে ওঠে। একটা প্রবাদ আছে, 'ঘুমিয়ে আছে সকল পিতা সব শিশুর ই অন্তরে।' আজকের দিনে যে শিশু, আগামী দিনে সে পিতা। সুতরাং পিতার কর্তব্য হল শিশুকে এমনভাবে মানুষ করা যার মধ্যে থাকবে সৎ চিন্তা, সৎ দৃষ্টি, সম্যক জ্ঞান, সৎ ভাবনা, সমাজ সচেতনতা প্রভৃতি গুণগুলি। কিন্তু তার গুণগুলি প্রজ্জ্বলিত করার ভার পিতার ই। পিতাই হবেন তার প্রধান চালিকা শক্তি। সেই শিশুকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষিত করে সমাজের কাছে প্রকৃত মানুষ হিসেবে প্রদান করা পিতার পক্ষে এক জরুরী পদক্ষেপ যেন আগামী দিনে সমস্ত দিনে সমস্ত দেশ তথা রাষ্ট্রগুলির কাছে তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা পায়। আমাদের কাছে যদি স্বর্গ বলে কিছু থাকে তা সে আমাদের পিতা। পিতার মধ্যেই আমরা বিশ্বরূপ দর্শন করতে পারি। পরম তপস্যার কেউ যদি থাকে তা সে আমাদের পিতা।

     'পিতাই ধর্ম, পিতাই স্বর্গ
      পিতাই পরম তপঃ।'

আমরা জানি প্রত্যেক শিশুর প্রতি তাদের পিতার অটুট আশীর্বাদ থাকে। তাঁরা আমাদের সব সময়েই বলেন -

"সুখে থাকো, সুখী করো সবে
তোমাদের প্রেম ধন্য হোক ভবে।
মঙ্গলের পথে থেকো নিরন্তর,
মহত্বের প'রে রাখিও নির্ভর -।"
রচনাকাল : ১৫/৬/২০২০
© কিশলয় এবং মোনালিসা রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 22  China : 26  France : 1  Germany : 4  Hungary : 1  India : 335  Ireland : 29  Russian Federat : 5  Saudi Arabia : 8  
Sweden : 12  Thailand : 1  Ukraine : 12  United States : 283  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 22  China : 26  France : 1  
Germany : 4  Hungary : 1  India : 335  Ireland : 29  
Russian Federat : 5  Saudi Arabia : 8  Sweden : 12  Thailand : 1  
Ukraine : 12  United States : 283  
লেখিকা পরিচিতি -
                          মোনালিসা রায় ১১ই ফেব্রুয়ারি হাওড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

উনি অনার্স গ্রাজুয়েট ও এম. এ। লেখালেখি করতে উনি খুবই ভালোবাসেন। ওনার লেখালেখির অনুপ্রেরণা ওনার বাবা, মা।

লেখালেখি ছাড়াও আঁকা, গানেও উনি সমান উৎসাহী। 
                          
  • ১০ম বর্ষ ১ম সংখ্যা (১০৯)

    ২০২০ , জুন


© কিশলয় এবং মোনালিসা রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
আন্তর্জাতিক পিতৃ দিবস by Monalisa Roy is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৪৮৮৬৭১
fingerprintLogin account_circleSignup