• ৯ম বর্ষ ১২তম সংখ্যা (১০৮)

    ২০২০ , মে



অভয়া
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখিকা : পায়েল মুখার্জ্জী
দেশ : India ,

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , মে
প্রকাশিত ১২ টি লেখনী ২৪ টি দেশ ব্যাপী ৬৯৪৮ জন পড়েছেন।
রমার মায়ের শরীরটা কিছুদিন ধরে খুব খারাপ ছিল। বুকের ব্যাথাটাও বেড়েছিল। আজ সন্ধ্যে থেকেই যেন একটু বেশিই কষ্ট হচ্ছে রমার মায়ের। আজ আবার রমা বাড়িতেও নেই। আর আকাশ জুড়ে ঘন কালো মেঘের ছায়া। সাথে ঝড়ও উঠবে মনে হচ্ছে। রমার বাবা তিন বছর আগেই মারা গেছে। বাড়িতে এখন মা আর মেয়ে থাকে। মা টিউশন পড়িয়ে সংসার চালাত। এই ক'দিন তো সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। রমা এখন দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। সংসার চালানোর জন্য তাকেই রোজগার করতে হয়। সে প্রথম শ্রেণীতে পড়া একটি ছেলেকে ও তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া একটি মেয়েকে বাড়িতে পড়াতে যায়। এই কদিন আবার মায়ের শরীর অসুস্থ তাই ডাক্তার দেখানো, ওষুধ কেনার টাকাটাও জোগাড় করতে হবে। বাবার মৃত্যুর পর জ্যেঠু তাদের দেখাশোনা করত কিন্তু জেঠিমা সেটাও বন্ধ করে দেয়। আজ রমা পড়াতে গেছে তখনই তার মায়ের শরীর আরও অসুস্থ হয়ে পরে। জল তেষ্টায় গলা ফেটে গেলেও একটু জল দেওয়ায় মত কেও নেই। অনেক কষ্টে নিজেই জল নিতে উঠে আসে বিছানা ছেড়ে কিন্তু পায়ের উপর ভর দিতেই পড়ে যায় রমার মা। চোখ ফেটে জল আসে তার আর শুধু ভাবতে থাকে মেয়েটা কখন যে আসবে, তার যে আর এই কষ্ট সহ্য হচ্ছে না।

প্রায় এক ঘন্টা পর রমা বাড়ি ফিরে দেখল তার মা অচৈতন্য অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। রমা ছুটে এসে মা কে জড়িয়ে ধরে বিছানায় তোলার চেষ্টা করে। তারপর একটা গ্লাসে জল এনে মায়ের মুখে চোখে জল ছিটিয়ে দেয়। মায়ের জ্ঞান ফিরছেনা দেখে রমা কাঁদতে শুরু করে। সে এখন কী করবে ভেবে পায়না। এদিকে বাইরেও প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তাছাড়াও অনেক রাত হয়েছে। এইসব ভাবতে ভাবতেই তার মায়ের জ্ঞান ফিরল। কিন্তু তখন আরও অবস্থা খারাপ। জোরে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাস নেই তার মা। কিছুতেই যেন শ্বাস নিতে পারছেনা, দম বন্ধ হয়ে আসছে তার। এসব দেখে রমা মাকে ছেড়ে পাশের বাড়িতে জ্যেঠুকে ডাকতে যায়। কিন্তু জেঠিমা তাকে মুখের উপর বলে দেয় যে এই ঝড়-বৃষ্টির রাতে তার জ্যেঠু কোথাও যেতে পারবেনা। তাদের এই অবস্থায় প্রকৃতিও হয়তো রমার পরীক্ষা নিচ্ছিল। কিছু উপায় না পেয়ে রমা একাই এই ঝড়-বৃষ্টির রাতে একটা রিক্সা ডেকে মাকে নিয়ে বেড়িয়ে পরে ডাক্তারের কাছে। তার মনে একটাই জেদ চেপে বসে। সে যেকোনো মূল্যে তার মা কে বাঁচাবেই। বাবাকে হয়তো সে বাঁচাতে পারেনি কারন অনেকটাই ছোটো ছিল রমা তখন, কিন্তু এখন সে কোনোকিছুকেই আর ভয় পায়না। মায়ের জন্য সে কঠিন সময়ের সাথেও লড়াই করতে প্রস্তুত। তাই যতই খারাপ সময় আসুক সে আর পিছিয়ে পড়বে না।
রচনাকাল : ১৬/৫/২০২০
© কিশলয় এবং পায়েল মুখার্জ্জী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 7  China : 37  Europe : 1  France : 3  Germany : 4  India : 191  Ireland : 7  Russian Federat : 4  Saudi Arabia : 6  
Sweden : 12  Ukraine : 10  United Kingdom : 3  United States : 223  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 7  China : 37  Europe : 1  
France : 3  Germany : 4  India : 191  Ireland : 7  
Russian Federat : 4  Saudi Arabia : 6  Sweden : 12  Ukraine : 10  
United Kingdom : 3  United States : 223  
লেখিকা পরিচিতি -
                          পায়েল মুখার্জ্জী 22শে অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। 
বর্তমানে তিনি ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক বিভাগে পাঠরতা। তিনি সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি লেখালেখি, গান, নাচ, আঁকা এবং আবৃত্তিতেও পারদর্শী। পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও তিনি বিভিন্ন গল্পের বই, কবিতা, উপন্যাস এবং ভৌতিক কাহিনী পড়তেও ভালোবাসেন। ছোটো থেকেই তাঁর লেখালেখির প্রতি গভীর আগ্রহ জন্মায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং গান তাঁকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।  
                          
  • ৯ম বর্ষ ১২তম সংখ্যা (১০৮)

    ২০২০ , মে


© কিশলয় এবং পায়েল মুখার্জ্জী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
অভয়া by Payel Mukherjee is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৫৮৫৯৩১
fingerprintLogin account_circleSignup