• ৯ম বর্ষ ৬ষ্ঠ সংখ্যা (১০২)

    ২০১৯ , নভেম্বর



ভালবাসা শুধু ভালবাসা (দ্বিতীয় পর্ব) শ্মশানে হলো ফুলশয্যা
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখক : লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
দেশ : India , শহর : New Delhi

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , সেপ্টেম্বর
প্রকাশিত ৯৩৫ টি লেখনী ৭২ টি দেশ ব্যাপী ২৮৬৮৮৪ জন পড়েছেন।
ভালবাসা শুধু ভালবাসা (দ্বিতীয় পর্ব)


শ্মশানে হলো ফুলশয্যা
            লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


নুপুরের চোখদুটো জলে ভেসে যায়, পলাশের বুক ভেঙে যায়। 
জীবন এত ছোট কেন? তবে কি ভালবাসা অভিনয়? 
নুপুর বলে, অতীতকে আমি ভুলে গেছি পলাশ।
- “কিন্তু আমি তো আজও তোমাকে ভুলতে পারি নি নুপুর। তোমাকে নিয়ে আমার ঘর বাঁধার স্বপ্ন”
- “না পলাশ, ছিঃ পলাশ, আর তা হয় না আমি একজনের বিবাহিতা স্ত্রী।”
পলাশ জানে না কেমন করে সে মনের অজান্তে নুপুরকে ভালবেসে ফেলেছিল। নুপুরের বাবা মা তাদের এই ভালবাসাকে মেনে নিতে পারে নি। বাবা জোর করে তার পছন্দমত পাত্র খুঁজে তার সাথেই নুপুরের বিয়ের ব্যবস্থা পাকা করলেন।
সেদিন বেজে উঠেছিল বিয়ের সানাই। সানাই-এর সুরে আনন্দের স্রোতে ভেসেছিল সবাই, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই। কিন্তু সবার অজান্তে কেঁদেছিল দুটি মন আর দুটি প্রাণ। দুজনের দুটি অভিন্ন হৃদয় সেদিন কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। পলাশের চোখ দুটো দারুণ জলে ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল।
হায়রে অবুঝ বাবা মায়ের মন। এই দুনিয়ায় বাবা-মায়ের একটুখানি ভুলের জন্য কত ছেলেমেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কে তার খবর রাখে? নুপুর আর পলাশের জীবনেও তার ব্যতিক্রম হয় নি।
তারপর সমাজের রীতি অনুসারে খুব ধুমধামেই বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ের পর কেটে গেছে সুদীর্ঘ পাঁচটি বছর। পলাশ ও নুপুর কেউ কারো খবর রাখে নি। 
শ্বশুরবাড়ির সবাইকে পেয়ে নুপুর ভুলে গিয়েছিল অতীতকে। কিন্তু বিধি হলো বাম। ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে হঠাত্ একদিন ওর স্বামী মারা গেল। নুপুরের হৃদয়টা সেদিন কেঁদে উঠেছিল। নুপুর তখন ছিল অন্তঃসত্ত্বা। আজ বিধবার সাজে দারুণ লাগছে নুপুরকে। সেদিনের বেনারসী শাড়ি তার গায়ে নেই। সমাজের প্রথা অনুযায়ী সাদা পোশাকে বিধবার বেশে তাকেও যেতে হলো শ্মশানঘাটে।
শ্মশানের চিতা জ্বলছে। চিতার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সবকিছুই। ভালবাসার অকালমৃত্যু ঘটে। হারিয়ে যাওয়া স্বামীর জন্যে প্রাণটা হু হু করে উঠে নুপুরের। সমাজপতিদের বিধান অনুযায়ী তাকে স্বামীর সাথে সহমরণে মরতে হবে। এটাই ছিল তত্কালীন সমাজের প্রথা।
ঢাকঢোল পিটিয়ে আনন্দে সবাই ধরে রাখে নুপুরকে। কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসে নি। কেউ প্রতিবাদ করেনি। শুধু প্রতিবাদ করেছিল এক নির্ভীক তরুণ, পলাশ। ভিড় ঠেলে পলাশ এগিয়ে আসে। প্রতিবাদীকণ্ঠে বলে ওঠে, “এটা সমাজের বিধান নয়, একজনের সাথে অপরকে বলি দেওয়া। প্রিয়জনের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার অপকৌশল।”
পলাশের তীব্র প্রতিবাদে সবাই একে একে চলে যায়। জনমানবশূণ্য শ্মশানঘাট। নির্জন রাতে আকাশে তারা ফুটেছে। অদূরে শ্মশানঘাটে ফুলের গাছ। রাশি রাশি কুসুম ফুটে আছে। সেই গাছের তলায় বসে আছে দুইজনে । রাশি রাশি ফুল ঝরে পরে অঝোর ধারায়। হাতে হাত আর চোখে চোখ রেখে ভালবাসার নৌকায় কল্পনার জগতে পাড়ি দেয় দুটি মন, দুটি প্রাণ। নুপুর পলাশকে বলে, আমাদের ভাবী সন্তানের নাম রাখবো কিংশুক। পলাশ গভীর আবেগে নুপুরকে জড়িয়ে ধরে। 
রচনাকাল : ১৯/১০/২০১৯
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 9  China : 32  Germany : 6  Hungary : 2  India : 404  Ireland : 38  Japan : 6  Norway : 1  Russian Federat : 8  
Saudi Arabia : 6  Sweden : 19  Ukraine : 35  United Kingdom : 6  United States : 443  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 9  China : 32  Germany : 6  
Hungary : 2  India : 404  Ireland : 38  Japan : 6  
Norway : 1  Russian Federat : 8  Saudi Arabia : 6  Sweden : 19  
Ukraine : 35  United Kingdom : 6  United States : 443  
  • ৯ম বর্ষ ৬ষ্ঠ সংখ্যা (১০২)

    ২০১৯ , নভেম্বর


© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
ভালবাসা শুধু ভালবাসা (দ্বিতীয় পর্ব) শ্মশানে হলো ফুলশয্যা by Lakshman Bhandary is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.
fingerprintLogin account_circleSignup