আজ শুধু দেখি আর ভাবি,
যদিও জানি নেই উপায়
তবুও ভাবতে, কি ক্ষতি আছে
পুরানো সে সব দিনের কথা,
সেই আড্ডা, সেই হাঁসি-ঠাট্টা
জানি নেই কোনো পথ, কোনো উপায়
তবুও ভাবি একা বসে বসে
যদি ফিরে যাওয়া যেত,
সেই শৈশবের দিন গুলিতে।
সেই স্কুলের রাস্তায়
সেই বাস স্ট্যান্ডে, সেই ক্যান্টিনে
যদি পারতাম গিয়ে আর একবার বস্তে,
সেই টেবিল-চেয়ার, সেই তীব্র বেল,
কাকভোর হতে মাঝ রাত অবধি চলন্ত রেল।
কালো বোর্ড হতে মুছে গেছে
সেই সাদা চকের দাগ,
সেই বেঞ্চে বসে অন্য কোনও মেয়ের দল
রয়ে গেছে শুধু স্মৃতি,
রয়ে গেছে ছেলেবেলার সাথী
মনের কুঠরিতে গোপনে গোপনে।
হারিয়ে গেছে সেই সব চিরকুট,
চলন্ত ক্লাসে ছুঁড়ে দিতাম যা
একে আপরকে দুরু-দুরু ভয় বুকে নিয়ে,
যদি একবার পরি ধরা
দিদিমণি এসে ধরবে কানটা,
তারপরই হবে শেষ
সে দিনের মতো ক্লাস করা।
যদি ফিরে যাওয়া যেত,
সেই স্কুলের দিন গুলিতে।
আজ আর হয়না চিন্তা,
যদি কাল না পারি পড়া,
পড়বে পিঠে গুনে গুনে ডাণ্ডা।
আজ শুধু মনে পরে
ফেলে আসা সে সব দিন গুলিকে,
যখন কেবলই ভাবতাম
কবে যে হব বড়,
থাকবে নাকো বকা-ঝকা,
থাকবে নাকো পরীক্ষার চিন্তা।
যদি থাকত উপায়,
তাবে ফিরে যেতাম সেই ক্লাস ঘরটায়।
আজ আর ছোটে নাকও কেউ
দুধের গ্লাস হাতে নিয়ে
আমার পিছনে পিছনে,
আজ আর আসে নাকও
স্যারদের টেলিফোন,
কড়া গালায় বলে নাক কেউ
করে রেখো পড়া গুলি
পরীক্ষার যে আর মাত্র কটা দিন বাকি।
যদি ফিরে যাওয়া যেত,
সেই বছর গুলিতে
এক ছুটে চলে যেতাম
স্কুলের সেই বন্ধুদের মাঝে,
আর এক বার মন খুলে করতাম
ঝগড়া-রাগ-আভিমান।
একজন পড়া না পাড়ায়
সাকলে নির্বাক হয়ে
ফেলফেলিয়ে তাকিয়ে থাকতাম,
এক সাথে কান ধরে দাঁড়িয়ে
মন খুলে হাঁসতাম,
আবার সব ঝগড়ার অবসানে
একসাথে টিফিন ভাগ করে খেতাম।
এক সাথে করতাম অপেক্ষা
কবে পড়বে পুজর ছুটি,
কবে কিনব নতুন জামা গুলি,
কবে জ্বলবে আলো
প্যান্ডেল হতে বাড়ির ছাদে।
যেইনা পূজা হলও শেষ
স্কুল খুলতে তখনও বাকি বেশ,
বন্ধ ঘরে হাঁপিয়ে ওঠা ছোট্ট মন
মায়ের কাছে গিয়ে করি কেবলই ঘ্যান-ঘ্যান,
হয়নাকো দেখা বন্ধুদের সাথে
হয়নাকো খেলা মাঠের মাঝে
মা-কে বলি বারে বারে
বলওনা গুনে,
স্কুল খুলবে আর কদিন বাদে?
আজ আর নেইক উপায়
এখন কেবল কালের স্রতে ভেসে যাওয়ার সময়,
কখনও তীরে কখনও বা মাঝ সাগরে,
উদ্ধারকারী বন্ধুবান্ধবরাও
আজ আর নেই শহরতলিতে।
তারাও হায়ত করছে অপেক্ষা
আমারই মতন একলা দিনে
কবে নিজের দেশে, নিজের শাহরে
এক সাথে সকলের হবে দেখা।
সেই চা, শিঙারা, ক্যান্টিনের পকোড়া,
রবিবারের সকালে কছুরি-জিলিপির আড্ডা,
আজও মনে পরে সেই বেট লড়া
হেরে গিয়েও হাড় না মানা।
যদি ফিরে যাওয়া যেত,
সেই স্কুল-কলেজের দিন গুলিতে
এক ছুটে দিতাম পাড়ি,
ছেড়ে আমার অফিসের গলি।
রচনাকাল : ৮/৯/২০১২
© কিশলয় এবং sonali das কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।