সোমা একটা স্কুলে শিক্ষকতা করে। বাড়িতে মেয়ে আর স্বামী এই তিনজনের সংসার সোমার। হঠাৎ স্কুল থেকে ফিরে টেবিলে পড়ে থাকা একটা নিমন্ত্রন কার্ড চোখে পড়ে সোমার। সেটা খুলে দেখে তার ছেলেবেলার বান্ধবী অনিতার ছেলের উপনয়নের নিমন্ত্রন। পরে ফোনে যোগাযোগ করে কথা বলে সোমা। তাই যথাসময়ে উপস্থিত হয় উপনয়নে। সবাই যখন ব্যাস্ত তখন সোমা লক্ষ্য করে বাইরে কিছু বাচ্চা তাদের খাবার সংগ্ৰহ করছে পড়ে থাকা ময়লা ডাস্টবিন থেকে। সেটা দেখে সোমা খুব কষ্ট পায়। মনে সুপ্ত বাসনা ছিল সোমার যে কোন মানুষ যদি খাবার জন্য কষ্ট পায় তো সেটা দেখে ও তাদের সাহায্য করবে। সুযোগটা তো পেয়েছে কিন্তু সাহায্য করবে কি করে। এই চিন্তা সোমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল। এটা তার নিজের বাড়ি নয় তাই মনটা খারাপ হয়ে যায় সোমার। আর ও খারাপ লাগে যে নতুন বছরের আজ প্রথম দিন। ওরা এইভাবে খাবার খাবে? খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ হয়ে যায়। সোমা কিছুই মুখে তুলতে পারে নি ওদের কথা ভেবে।
এমন সময় অনিতা এসে জানায় যে প্রায় দশজনের মতো খাবার বেঁচে গেছে এবং সেটা ফেরৎ দেবে ক্যাটারিং এর লোকেদের। এতে কিছূ টাকা কম দিতে হবে অনিতাকে। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনিতা। এই সিদ্ধান্ত সোমাকে জানালে সোমা দশজনের খাবারের টাকা অনিতার হাতে তুলে দিয়ে বলে যে বেঁচে যাওয়া খাবার ওকে দিতে। এই কথায় অনিতা অবাক হয়ে যায় এবং খাবারগুলো এনে সোমাকে দেয়। সোমা খাবার গুলো নিয়ে ওই বাচ্চাগুলোর হাতে দেয় এবং নিজের হাতে ওদের পেট ভরে খাওয়ায়। এতে ওরা খুশী হয়ে বলে আজ পর্যন্ত কেউ ওদের এভাবে বসিয়ে খাওয়ায় নি। এটা শুনে সোমার চোখে জলের ধারা বয়ে যায়। আজ সোমা খুব খুশী নতুন বছরে একটা ভালো কাজ করতে পেরে। মনের সুপ্ত বাসনা যে আজ পূর্ণ হলো।
রচনাকাল : ১৬/১/২০২০
© কিশলয় এবং সুমিতা গাঙ্গুলি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।