বাবাকে গতকাল ফ্ল্যাটে ওরা ঢুকতে দিচ্ছিলনা,মিত্র কাকুতো এমন ভাব করলো যেন ঢুকতে দিয়ে দয়া করেছেন আমাদের। বাবু, আমি হসপিটাল থেকে এতদিন টানা ডিউটির পর বাড়ি এসেছি ,করোনা আবহে ওরা আতঙ্কিত ।ভয় পাচ্ছে যদি আমার থেকে সংক্রমণ হয়।মনে আছে, গতবছর এই সময়ে জুনিয়র ডাক্তার রোগীর পরিবারের হাতে বেদম মার খেয়েছিল। সারা দেশ জুড়ে প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তাররা চিকিৎসার মত জরুরী পরিসেবা প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ রেখেছিল।কত রোগী অসহায় হয়ে পড়েছিল। এখন সবাইকে চিকিৎসা পণ্যের রূপে পরিসেবা হিসেবে কিনতে হয়।মানুষ বিপদে পড়ে এই পরিসেবা নিতে আসেন ,তখন দরকষাকষির মানসিকতা থাকেনা।কিছু চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত অসৎ ও লোভী মানুষের পাল্লায় পরে তারা যখন সর্বস্বান্ত হয় তখন এইসব মারধোর ভাঙচুর করে।ডাক্তারি এক মহান ব্রত । কিন্তু সব ডাক্তার মানেনা।
আজ পয়লা জুলাই, ভারতের কিংবদন্তি চিকিৎসক ও পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ভারতরেত্ন ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিনকে স্মরণে রেখে ভারতবর্ষে ১৯৯১ সাল থেকে এই দিনটিকে চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয় । তিনি শিখিয়েছিলেন যে, একজন চিকিৎসকের পেশা কেবলমাত্র অর্থ রোজগারের জন্য নয়,দায়বদ্ধতা আছে। হাজার হাজার মানুষের প্রাণ তার উপর নির্ভরশীল । এবারে সার্বিক ছুটি ঘোষণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার । প্রধান মন্ত্রী চিকিৎসকদের অবিশ্রান্ত পরিশ্রমকে সন্মান জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
কলিংবেল বাজলো, ওমা আপনারা ? গোলাপ? হ্যাঁ, এই ফ্ল্যাটে আপনার মত একজন করোনা যোদ্ধা আছেন ,আমরা গর্বিত । গতকাল মাঝরাতে যেভাবে আপনি একডাকে ছুটে উপরে গিয়ে ইনজেকশন ওষুধ সময়মতো দিয়ে বাবাকে বাঁচালেন। আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।
প্রাউড অফ ইউ বাবা। এবারের চিকিৎসক দিবস তোমার মত চিকিৎসক যোদ্ধাদের জন্য উৎসর্গিত,যারা জীবন বাজি রেখে মহামারীর সাথে নিরলস লড়াই করে মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রণাম বাবা।
ঈশ্বর যখন বিজ্ঞানের সাথে একাত্ম হয়
তখন ধরণীর বুকে চিকিৎসক জন্মায় ????
রচনাকাল : ৩০/৬/২০২০
© কিশলয় এবং অর্পিতা চক্রবর্তী কণ্ঠ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।