ভেউ ভেউ করে কুকুর ডাকছে । ঘড়ির দুটো কাটাই বারোটা ওপার ।
ওদিকে কুকুর দের সাথে কম্পিটিসানে আমার গিন্নি নাক ডাকছে । ৩০০ পাউন্ড
শুধু তার নাকের ওজন হবে । তার মানে তার শরীরের কোন পার্টস যদি গায়ের
উপর চেপে যায় , প্রাণ নাশের সম্ভাবনা । এই তোহ সেদিন কিসের একটা স্বপ্ন
দেখছিলাম, ও হাঁ , একটা বুনো মোষ তার সামনের পা দুটো দিয়ে আমার
গলা টিপছে, দম আটকে প্রায় মরে গেছি, চোখ খুলে দেখি এটা আসলে পুরটা
স্বপ্ন নয়, অর্ধেক স্বপ্ন আর বাকিটা পাশে শুয়ে থাকা তানার হাত যেটা আমার
গলায় চাপানো । এই ভয়ে আমি রাতে ঘুমাইনা । রিটিয়ার হবার এখন ও
এক বছর আছে তাই ঘুমানোর জন্য দিনের বেলার আফিসের টেবিল টা সম্বল।
বড় ছেলের বড় ছেলে আমার বড় নাতি , (একটা কথা জানা দরকার,
আপনারা জ্যাপানিজ সুমো দেখেছেন ? কি বললেন হাঁ , তাহলে বেশ
সুবিধা হবে) এই বড় নাতি টা এই সুমোর মতই প্রায় ...। তার আবদার
সে হিপ হপ ডান্স শিখবে , গড়িয়ার যে সেন্টার তা সেখায় , সেই
দশ-তলা বিল্ডিং তার তেতলায় যদি ও নাচে , তাহলে বিল্ডিংটা ভেঙে
গেলেও যেতে পারে এই সম্ভবনাতেই আমার বুদ্ধিমান ছেলে বোধহয় সঠিক
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো , কিন্তু সেই নাতি হার না মেনে আমার পেছনে পড়েছে ...
আমার বড় ছেলে যেমন আমায় ভয় পায় আমি এই হাতিটাকে তার দেড়শ
গুণ বেশি ভয় পাই... তাই ওকে হিপ-হপ শেখাতে পাঠানো হল । আমি
খবরের চ্যানেল এ প্রায়-ই খুলে সার্চ করি কোনো বিল্ডিং ভাঙার খবর
দেখাচ্ছে কিনা ।
এদিকে অফিসের গদাই হেব্বি চালাক ... বলে কিনা "কানাদা আপনি
পায়েশ খান " বাড়িতে তোহ মিষ্টি ছুতেই দেয়না , উৎসাহে বললাম ,
হাঁ ... ও বলল আমার আজকে টিফিন দিয়েছে , আমার ইচ্ছে করছে
না তাই তোমার সাথে যদি এক্স-চেঞ্জ করা যেত । আমি তো দারুন বুদ্ধিমান
তাই করে ও নিলাম ... আমার আবার রুটি আর আলুরদম বলে
হ্যান্ডওভার করার সময় একটু সহানুভুতি ও দেখালাম । শুকনো আদিখ্যেতা
আর কি । তাড়াতাড়ি কাজ সেরে ... সেই পায়েস যেই এক চামচ খেলাম,
ছোট বেলা থেকে যত শাস্তি পেয়েছিলাম সব মনে পরে গেলো ( ক্লাস ফোরে
বির্জবাবু আমার পেছনে যে বেত মেরে ফুলিয়ে দিয়েছিল ওটা ও মনে পড়ল )।
সুজি আর করেলা দিয়ে তিত্ত একটা পায়েস । হটাত মনে পরলো গত মাসে
গদাই এর চারশো কত সুগার ছিল , মাল-টার তোহ মিষ্টি টিফিন দেবেনা
বাড়ি থেকে ... সেদিন আর গদা-কে আমার সামনে আসতে দেখলাম না ।
বহুদিন ধরে এসব সহ্য করে আসছি । এবার আমি রেগে গেছি । কানাবাবু
চোখ খুললে কি হয় এবার সবাই দেখবে । এসব ভেবে আমি স্থির করলাম
আমার পারসনালিটি টাফ করতে হবে । যেই ভাবা অমনি কাজ, গদা কে
ডেকে এক্কেবারে মিষ্টি করে আক্রমন করলাম , একদম রাগ দেখালাম না ।
দেখলাম... কাজ হলও । বরং চিৎকার করলে সবাই হাসত । এবার থেকে
বড় নাতি কাছে আসার কথা শুনলে আমি বন্ধুক-টা পরিস্কার করার নাম
করে নিচে নামাই... আর ওই অর্ডার-আবদার এ আমি ভয় পাইনা ...।
শুধু একটা সমাধান হয়নি... এই তো গত কাল ই আমি আবার একটা
অর্ধেক স্বপ্ন আর অর্ধেক বাস্তব জিনিস দেখলাম(সবে চোখ টা লেগেছিল আর কি)
দেখি একটা হাতি আমার পেটে পা তুলে দিয়েছে । স্বভাবতই সেই যে ঘুম ভাঙল,
গিন্নির পা টা কোন কষ্টে সরালাম বটে কিন্তু আর ঘুম হলনা ।
রচনাকাল : ২৫/৬/২০১১
© কিশলয় এবং সাগীরুদ্দিন মণ্ডল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।