অ্যায়-ই-য়্য-হ্যাঁ , আমার নাম পটা,
হিমাদ্রি একটু খোলা গলায় জিজ্ঞেস করল , এখানে কোথায় চাবির ডুপ্লিকেট বানায়
জানিস ? প্রশ্ন টা শুনতেই ছেলেটার আচরন এর মধ্যে অদ্ভুত একটা পরিবর্তন লক্ষ্য
করলাম মনে হল ।কেমন একটা ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে বলল হ্যাঁ ওই যে মার্কেট আছে
, রাগিনি সিনেমার উল্টো দিকে, ওখানে । হিমাদ্রি মুচকি হেসে বলল , আচ্ছা
তুই যা ।ও চলে যাওয়ার পর, আমি একটু অস্বস্তিতেই বলে উঠলাম , একদম
পাগলের মত আচরণ করে বেরাচ্ছিস । কি হচ্ছে এসব ?
তুই যেটুকু বুঝবি ওই টুকুই তোর ক্ষমতা , বেশি বুঝতে যাসনা সময় হলে ঠিক
জানতে পারবি । হিমাদ্রি বলল। আমার বয়ে গেলো । বলে আমি একটু রাগ
নিয়ে দ্রুত নিজের ঘরে এসে কম্পিউটার এ বসলাম। হিমাদ্রি আবার বাইরে কোথায়
চলে গেল । রাহুলের কাকু যেদিন তার প্রফ্রেসানাল ক্যামেরা টা নিয়ে রাহুলের সাথে
দেখা করতে এসেছিলো আমি সেদিন কতগুলো ছবি তুলেছিলাম ওই ক্যামেরাটায়। তার
মধ্যে একটা ছবি অঞ্জনার ও ছিল । আমাদের ছাদ থেকে একেবারে ৭০মিমি লেন্স
দিয়ে ওর পড়ার টেবিলে জুম করে। ছবিটা আমার কম্পিউটার এর হিড্ডেন ফোল্ডারে
রাখা থাকে, ছবিটা খুলতেই মনটা ঝকঝকে হয়ে গেলো । হাল্কা গোলাপি রঙের
ড্রেস টা বেশ মানায় ওকে । রাহুল ঘুমাচ্ছে , প্রায় ৫মি ছবিটার দিকে তাকিয়েও
মন ভোরলোনা ।
তিন দিন পর...
কোথা থেকে ফিরে এসে হিমাদ্রি বলে উঠল, একটা দারুন সমাধান পেয়েছি। আমি
কিছুই বললাম না, বিষয়টার প্রতি আমার যে কিউরিওসিটি রয়েছে এটা ভুলেও
প্রকাশ যেন না হয় । এই তিন দিনে আমরা একটি ও কথা বলিনি। হিমাদ্রি
নিজে ও বলার চেষ্টা করেনি, যদিও আমি খুব ভাল করে জানি এটা ও ইচ্ছে
করে করছে। মাঝে মাঝে মুচকি হাসতে ও দেখেছি কয়েকবার । কিন্তু আজ ওকে
খুব গম্ভীর দেখাল, নিজে থেকেই বলল, মালকিন এর সাথে কথা বললাম,
তারপর গলার স্বর টা বদলিয়ে, বলে উঠল চাবিই একটা বিষয় এই রহস্যে ।
আমি ওমনি চাবি মানে ? উদ্বেগের সঙ্গে বলতেই বুঝে গেলাম, নিজের সচেতনতার
জায়গা ছাড়িয়ে আমার উত্তেজনা দেখিয়ে ফেলেছি । হিমাদ্রি এতে কিছু বুঝলনা তোহ
? বা ও সবটাই জেনে গেছে তাইএরকম কথা বলে উঠল না তো ? কিংবা সন্দেহ
টা সত্যি কিনা ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য ও এই কথার টোপ ফেলল না তোহ ? আর
যদি তাই হয়ে থাকে আমি এই টোপ নিজের অজান্তেয়ি গিলে ফেললাম তাহলে ।
ছেলেটা যে ভীষণ চালাক , এটা বুঝতে বেশি সময় লাগেনি আমার । ও বলে
উঠল, বলতে চাইলেও এখন কিছু বলবনা । যেহেতু আমি চুরির দিন রাতে
ছিলাম না তাই একটু সময় লাগবে সেই সময়ের আবহাওয়া
বুঝতে........., বলেই হিমাদ্রি একটু অন্য মনস্ক হয়ে গেলো । এর আগে
ওর সন্দেহের চোখ আমার দিকে যে একেবারেই ছিলোনা এটা বললে নিজেকে মিথ্যে
বলা হবে । কিন্তু চাবি বলতেই বুকের মধ্যে ছ্যাত করে উঠল । রাহুল একই
রকম ভাবুক কিন্তু বাস্তব সচেতন একটা মুখ করে ওর বেড এ চলে গেলো ।
নিজের ডায়েরি তেয় কিছু কথা লিখে ঘুমিয়ে পড়ল , কিন্তু আমি তখন ও
ঘুমায়নি, আসলে একটা কথা ভাবছিলাম, যে তথ্য গুলো জানি একসঙ্গে করলে
সবটাই কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে, তার পর কৌশিক এর ফোনে কল এর ব্যাপার টা
নিয়ে আমি একটু বেশি সঙ্কোচ বোধ করছি । চুরির রাত্রিতে কালুদার নাম্বারের
থেকে কৌশিকের ফোনে কল কেন এসেছিলো । আর তার থেকে বড় কথা কালুদা
যে এই মহল্লার সবচেয়ে বড় দাদা সেটা হিমাদ্রি জানল কি করে ? এসব ই
ভাবছিলাম, হঠাৎ হিমাদ্রি বলে উঠল , ভাই তুই এমন কেন করলি ?
ক্রমশ ....
রচনাকাল : ২৭/১২/২০১১
© কিশলয় এবং সাগীরুদ্দিন মণ্ডল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।