আমি সেই নারী
যার জন্য প্রস্তুত করে রাখ বালির খোলা;
কত উদ্যম, কত তোড়জোড় সাথ
কত ঘাম ,কত প্রতিশ্রুতির বাত
কতই না কয়লার আগুন।
তারপর চোখের জলে
টাটি ছিঁড়ে ফেলে দাও নির্ধারিত ক্রমশ উত্তপ্ত বালিতে,
আর লোলুপ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকো খোলার পানে।
আমি সেই নারী।
আমি সেই নারী-
যে ছয় মাস বয়সে তোমার খিদে মিটিয়েছে,
কপালে কাজল নিয়েও যে তোমার নজর এড়াতে পারেনি,
তোমার দয়ায় যার আতর গন্ধ কেটেছে,
তাই কানের লতিতে আজও বিড়ির গন্ধ।
আমি সেই নারী।
আমি সেই নারী -
খুকু গেল জল আনার শেষে
যখন তোমার চাদরে ঢুকি সোনার কাঠি রুপার কাঠির আশায়
তখন সাদা চুলে, ভাঁজ পড়া চামড়ায়
তর্জনী চালাও আমার যোনিদেশে,
রুপ কথার মাঝে।
আমি সেই নারী ।
আমি সেই নারী-
যার জন্য সবার অলক্ষ্যে তুমি বুকপকেটে রাখ স্কেল ,
সকাল-সন্ধ্যা মাপতে থাকো বুকের উচ্চতা,
ঝালঝামটি কিংবা বুড়িবসন্তের দানে;
তুমি চোখের জড়তা কাটাও আমায় দেখে
আমি সেই নারী
হ্যাঁ আমি সেই নারী -
যার ঠাউরে শরীর প্রমাদ গোনো,
অকারণে স্নেহ কেনো,
সময় বুঝে ঝোপের ধারে
লুঙ্গি খোলো ,জামা টানো।
যার কারনে কষ্ট করে পর্দা ছিড়ে যৌবন আনো
আমি সেই নারী।
আমি সেই নারী-
যার কারনে প্রেমিক সাজো
মিষ্টি কথার স্বপ্ন বোনো
দিনের শেষে ভালুক সেজে
বুক দুখানা খামচে ধরো
কাঁটার পালক ঘাড়ে দিয়ে
পিছন হতে হূকটি খোলো
আমি সেই নারী ।
আমি সেই নারী-
যাকে তুমি সংখ্যার সংকীর্ণতায় ভুলিয়ে
নিয়ে আসো অন্ধকার বাজারে ;
একে চন্দ্রের বাসর খাট ভুলিয়ে
যাকে নিয়ে আসো ষোল আনার বিছানায়
যার বিছানায় রেখে আসো
শুকনো রক্ত ও ভালোবাসার অজানা মানচিত্র।
আমি সেই নারী ।
হ্যাঁ আমি সেই নারী -
যার পায়ের ফাঁকে পাখির চোখ একে
সভ্যতার তীর ছুঁড়েছ বারবার;
ছিটকে আসা রক্তের তিলক কপালে ঠেকিয়ে সগর্বে বলেছ আমি পুরুষ !
আমি পুরুষ !
আমি পুরুষ !
আমি সভ্যতার দাঁড় কাক।
~ রাজকুমার সাঁতরা ~
রচনাকাল : ৮/৩/২০২০
© কিশলয় এবং রাজকুমার সাঁতরা কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।