• ৯ম বর্ষ ৩য় সংখ্যা (৯৯)

    ২০১৯ , আগষ্ট



ডাইরির শেষ পাতা :
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখিকা : অন্তরা দত্ত
দেশ : India , শহর : ব্যারাকপুর

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , ফেব্রুয়ারী
প্রকাশিত ৯ টি লেখনী ৩৫ টি দেশ ব্যাপী ১০১৭৯ জন পড়েছেন।
দেখিতে  দেখিতে অনেকগুলি বছর অতিবাহিত হইয়া গেল। আমার দীর্ঘ জীবন কাহিনীর সুখ দু:খ আনন্দের সাথী এই ডাইরি ।  সবার অনেক আগ্রহ ছিল ইহাতে কি লেখা থাকিতো ,তাহা নিয়া। কিন্তু ইহা ছিল আমার অতি যত্নের, লুকায়িত থাকিতো একটি ছোট্ট ট্রাঙ্কারে। আজ সকাল হইতেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা। বোধ করিতেছি, বৃষ্টির পূর্ভাবাস। শরীরটাও অচেতন অসার লাগিতেছে, আপন বলিতে আমার ছোটমেয়ে প্রীতিলতা আর বড় ছেলে প্রণব। তাহারা আমার সাথে এখন আর থাকে না।তাহাদের সংসার নিয়া ব্যাস্ত। সম্পত্তি নিয়া চিন্তা উহাদের। আমি ঠিক করিয়াছি, আমার জমিজমা একখানি পুকুর আমার মেয়েকে হস্তান্তরিত করিব। জোড়াসাকোর কাছে বাড়িটা  বড় ছেলেকে দিয়া যাইবো।
   আজ অতীতের কিছু স্মৃতি চাগিয়া উঠিতেছে। সন ছিল ১৯০৫, বঙ্গভঙ্গের সময়। আমার বিবাহ হইয়াছিল নামকরা জমিদার বংশের রায় বাহাদুরের একমাত্র ছোট পুত্র পুলকচন্দ্র মিত্তিরের সহিত। আমার শ্বশুরমশাই ছিলেন খুবই রাগী এবং প্রতাপশালী ব্যাক্তি। বাড়ীতে উহার অনুমতি ব্যাতীত কিছু করা যাইত না। আমার বয়স ছিলো দশ। সেইসময় বাংলায় বিপ্লবীদের মিছিল, বন্দে মাতরম শ্লোগান চলিত। আমি একটু লাজুক প্রকৃতির ছিলাম। আমি ছাদের উপর হইতে দেখিতাম। আমার স্বামীর সহিত সেভাবে আলাদা কথাবলিতে দেখলে অনেকে ভালো চোখে দেখিত না। আমি যে একটু আধটু লেখাপড়া জানিতাম,আমার স্বামী ছাড়া কেহ জানিত না। একবার ঊনি আমায় সবার আড়ালে একখানি রবিঠাকুরের বই আর এই ডাইরিখানি আনিয়া দিয়াছিলেন। সেবার আমার স্বামী সাহিত্যবিভাগের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হবার জন্য কলিকাতায় গিয়াছিলেন । ওখান হইতে আমাকে বেশ কয়েকটি পত্র লিখিতেন।  দু-একটি ইনজিরিতে কি সব লিখিতেন, কিন্তু আমার সেগুলি বোধগম্য হইত না। আমার স্বামী তাহা লইয়া অনেক মজা তামাশা করিতেন। একসময় আমার শ্বশুরমশাই গত হবার পর ঊনি সমস্ত কিছুর দায়িত্বভার বহন করেন। এ সকল বিষয়ে আমার স্বামী ভালোই জ্ঞান আয়ত্ত করেন। সব দিক ভালোই চলিতেছিল।  একদিন এক সন্ধ্যায়  আমার স্বামী বাড়ী ফিড়িয়া অসুস্থ বোধ করিল, কবিরাজ বৈদ্য কিছুই করিতে পারিল না। আকষ্মিক ৯ঘটিকায় ঊনি আমাদের ছাড়িয়া চলিয়া গেলেন।  এ যেন ছন্দপতন ঘটিল। আমিও আমার সন্তানদের কষ্টের সহিত বড়ো করিতেছিলাম।দেখতে দেখতে বেশ কয়েকটি বছর অতিক্রম হইয়া গেল। সকলেই আজ এই আধুনিক সমাজের জীবনধারার সহিত তাল মিলাইয়া চলিতে ব্যস্ত। আজ আমি শেষের গোঁড়ায়, সময় নেই কাহারও। সম্বল বলিতে এই একখানি ডাইরি। চোখের জলে পাতা ভিজিলেও ভিজবে কাহারও মন?
না,আর বোধ হয় লিখিতে পারিবো না,
সব ঝাপসা বোধ করিতেছি।
জানি না কখন কলম থামিয়া যায়!
রচনাকাল : ৩০/৭/২০১৯
© কিশলয় এবং অন্তরা দত্ত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 40  Brunei Darussal : 1  Canada : 26  China : 12  Europe : 21  France : 2  Germany : 3  Hong Kong : 1  Hungary : 37  Iceland : 1  
India : 614  Ireland : 95  Japan : 9  Kuwait : 2  Malaysia : 5  Oman : 1  Philippines : 1  Romania : 3  Saudi Arabia : 18  Singapore : 1  
Spain : 1  Ukraine : 19  United Kingdom : 13  United States : 784  Vietnam : 2  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 40  Brunei Darussal : 1  Canada : 26  China : 12  
Europe : 21  France : 2  Germany : 3  Hong Kong : 1  
Hungary : 37  Iceland : 1  India : 614  Ireland : 95  
Japan : 9  Kuwait : 2  Malaysia : 5  Oman : 1  
Philippines : 1  Romania : 3  Saudi Arabia : 18  Singapore : 1  
Spain : 1  Ukraine : 19  United Kingdom : 13  United States : 784  
Vietnam : 2  
  • ৯ম বর্ষ ৩য় সংখ্যা (৯৯)

    ২০১৯ , আগষ্ট


© কিশলয় এবং অন্তরা দত্ত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
ডাইরির শেষ পাতা : by Antara Dutta is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১১১০৬৬২৭
fingerprintLogin account_circleSignup