কিরে মেয়ে,
তুই নাকি কবি!
তোর লেখায় মনের ভাব প্রকাশ পায়,
প্রস্ফুটিত হয় নানা রকমের ছবি!
আমায় একটু জায়গা দিবি রে তোর লেখায়?
আমার মতো একটা গ্রাম্য মেয়ের কাহিনী
সমাজের কাছে কি ফুটে উঠবে তোর কবিতায়??
আমি তোদের আধুনিক
সমাজের আধুনিকা নই,কিংবা
বড়লোক নামীদামি সমাজের
কেউ নই।
আমি দূর পাহাড়ী গাঁয়ের
গরীব ঘরের মেয়ে টগরী,
জানিস, মা বলে আমার গলায় সুর আছে,
ফুল পাখী নিয়ে অনেক গান
বাধঁতে পারি।
কিন্তু কেউ দেয়না তার মান
আমাদের মতন পাহাড়ী গরীব মেয়েদের গান থাকতে নেই,
সুর থাকতে নেই,
থাকতে নেই কোনো সন্মান।
জানিস মেয়ে,
আমিও বিয়ে করেছিলাম ভালোবেসে,
ঐ বাবুজির সাথে।
সুখের চাদর সরে দুঃখের চাদরে
ঢেকেছিল আমার জীবন,
চাপা কান্নায় ভেজা থাকতো মন;
রঙ নেই ,রুপ নেই
মেলেনি জাতে।
শ্বশুর বাড়ীতে শুরু হলো অত্যাচার,
বাপটা আমার গরীব ছিল,
পণের টাকা দিতে পারেনি বলে
জুটত সিগারেটের ছ্যাকা,চাবুকের মার।
খুব কষ্ট হতো !
জানিস মেয়ে, পিঠে ফালা ফালা দাগ।
বল না, লিখবি আমার কথা
লিখবি আমার ব্যাথা!!
যেদিন সইতে না পেরে মুখ খুললাম,
প্রতিবাদের সুর তুললাম,
সেদিন আমার বিশ্বাস অস্তিত্ব
সব মরে গেল।
স্বামীটা আমার মুখটা
অ্যাসিড ঢেলে পুরিয়ে দিল।
আজ আমার মুখের একটা দিক
কালো কাপড়ে ঢাকা-
ঠিক যেমন তোদের আইনের চোখ বাঁধা থাকে।
সমাজের কাছে আজও আমাদের মতন মেয়েরা পিছিয়ে,
আমার এই পোড়া মুখ দেখলে
সবাই ভয় শিউরে ওঠে।
কিরে মেয়ে, পারবি?
আমার এই করুন অবস্থা কে সমাজের চোখে তুলে ধরতে?
পারবি প্রতিবাদের ঝড় তুলতে?
আমাদের কি কোনো অধিকার নেই,
নতুন করে স্বপ্ন গড়ার?
নিজের পায়ে দাড়িয়ে নতুন করে বাঁচার!
রচনাকাল : ৫/২/২০১৯
© কিশলয় এবং অন্তরা দত্ত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।