মিতাকে আজ সবাই খুব সুন্দর করে সাজাচ্ছে। চন্দন, লাল টিপ, সিঁদুরে তাকে লাগছে একেবারে নতুন বউ। আহা যেন লক্ষ্মী ঠাকুরের মত মুখ। রজনীগন্ধার সুবাস আসছে। পাগলিনীর মতএকজন মহিলা বসে মিতা কে সাজিয়ে যাচ্ছেন চন্দন এ, টিপে, লাল শাড়িতে, মিতার মা। মিতার পাশে দাঁড়িয়ে থর থর করে কাঁপছে অরূপ। একটা অ্যাক্সিডেন্ট বদলে দিল কত মানুষের জীবন। এইতো কাল রাতেও অরূপ মিতার সঙ্গে ঝগড়া করে ছিল। মিতা মুখ গোমড়া করে ছলছল চোখে বলেছিল- করে নাও করে নাও । ঝগড়ুটে কোথাকার। আমি যখন থাকব না তখন বুঝবে।
ঝগড়া হলেই মিতা এটা বলতো । আর অরূপ জিজ্ঞেস করত -কোথায় যাবে হম আমাকে ছেড়ে?
মিতা বলতো -ওই আকাশে। তারা হয়ে যাব ।
মিতা কে নিয়ে চলে গেল সবাই ।অরূপ ও গেল ।মুখে আগুন তো ওকেই দিতে হবে। মিতার ভাই বা ছেলে কেউ নেই।
রাতে দাহ সেরে বাড়ি এসে বেডরুমে ঢুকতেই হাউ হাউ করে কান্না পেল অরূপের। সব জায়গায় মিতা লেগে আছে। মিতার ছবিটা বুকে জড়িয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো সে । চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে বালিশটা। নয় একটু বেশিই ঝগড়া করত অরূপ। ভাল ও বাসত পাগলের মত। মিতাও তাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো । মিতা ছাড়া ওর জীবনটা আজ শূন্য । কাঁদতে কাঁদতে মিতার ছবিটা বুকে জড়িয়ে ধরলো অরূপ। মনে হল যেন মিতাকে একটা টাইট হাগ দিয়ে বুকে চেপে ধরেছে । আর সবসময়ের মতো করে বলছে- কথা দাও ছেড়ে যাবে না তো কখ্খনো? অরূপের কানে বাজছে মিতার চেনা গলা। পরিচিত মিষ্টি আওয়াজে মিতা যেন কথা বলছে। যেমন সে সবসময় বলত।
- কোথায় যাব আমি তোমাকে ছেড়ে ? উফ পাগল একটা । এত জোরে কেউ জড়িয়ে ধরে ?মরে যাব তো।
রচনাকাল : ৬/১/২০২০
© কিশলয় এবং স্বাগতা সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।