সে এক প্রাচীন নদী নবীন নদীরে শোনায় আত্মকথা
বলে, "সেসব শুনে মনের গভীরে পাবে তুমি ভারি ব্যাথা।
কোন্ সে সুদূরে, অতীত দিনে
কোন্ সে কালে, কোন্ সে ক্ষনে
মোর প্রভু যবে ছেড়ে দিলা মোরে আমাতে মিশায়ে বিরহগাঁথা
সেসব শুনে মনের গভীরে পাবে তুমি ভারি ব্যাথা।
যেদিন আমি শুরু করিলাম জীবনের পথ খোঁজা
সেদিন থেকেই বুকেতে জুটিল কতশত নানা বোঝা
বহিতে পারিনা, তবু তা বহি
নীরবে থাকিয়া সেই কষ্ট সহি
সহিতে সহিতে দারুন ক্লেশে হইতে পারিনা সোজা
তবু বহু ঢেলা স্কন্ধে আসিয়া হয়ে রয় মোর বোঝা।
এরপর আমি চলিতে চলিতে মানুষ আপন সাধে
নানান্ লোহা ও লক্কর দিয়া শৃঙ্খলে মোরে বাঁধে।
শহর-গাঁয়ের জঞ্জাল দিয়ে
দেহখানি মোর দেয় ভরায়ে
এসব কারনে ভীষণ দুঃখে হৃদয় আমার কাঁদে-
মানুষ নিজের স্বার্থের লাগি শৃঙ্খলে মোরে বাঁধে।
এইভাবে আমি ধুঁকিতে ধুঁকিতে সাগরের বুকে মিশি
চলার পথেতে দুঃখ-কষ্ট সাথি মোর দিবানিশি।
তাই কভু বা ক্রুধ্য হয়ে
গ্রাম কে শহর দিই ভাসায়ে
ব্যাথা পাই দেখে কত অসহায় জনমানবের রাশি-
আমার ও সবার দুঃখ মিলায়ে সাগর-জলেতে মিশি।
তবে অত ভেবে কাজ নাই ভাই, বেড়িয়েই পড় পথে
সুখ বা দুঃখ যাহা পথে মেলে, রেখে দিয়ো নিজ সাথে।
দেখিবে অনেক শিখিবে তুমিও, যেমনই শিখেছি আমি-
শুধু একটু ধৈর্য রাখিয়ো, মেজাজ রাখিয়ো নামি।
এই পৃথিবীর সুন্দর রূপ জাগিবে তখনই চোখে-
বড় বিস্ময়ে দেখিয়ো তখন যা আসে সম্মুখে।
নেমে আসা রাতে মাঝি যেবা একা কালো জলে দাঁড় টানে;
নাহয় তাহার ক্লান্তি ভুলিয়ো ভাঁটিয়ালি কোনও গানে।
ছল্ ছল্ ছল্ ছপাৎ ছপাৎ স্বরের অলংকারে
গুপী-গাঈন আর বাঘা-বাঈন এর আসর জমিবে ঘরে।
গাঁয়ের বঁধুরা কলস কাঁখে আসিবে যখন পাড়ে;
চরণ তাদের ধুইয়ে দিয়ো আপন জলের বাড়ে।
দেখিবে বুকটা শীতল হল মায়ের পরশ পেয়ে
মায়া-মমতা-স্নেহের পাশে যা বাঁধিবে তোমায় নিয়ে।
দুপুরবেলাতে নাইবার কালে যতসব ছেলেমেয়ে
জলে নেমে সবে খেলা করে কতো তোমার সঙ্গ পেয়ে।
তুমিও তখন সবার সাথে যত পার খেলে নেবে-
শিশু-কিশোরের এই এত খেলা আর কি কখনো পাবে ?
তাই তব বলি এগিয়ে চলো, ভাবিওনা বাজে কথা
পদেপদে যাহা বিষাইবে জীবন, আনিবে মনেতে ব্যথা।
দুঃখ ভুলিয়া সুখটাকে দেখো কতো আছে তব কাছে
তা নাহলে যে সুখও মরিবে দুঃখের পিছে পিছে।
শুভকামনা রইল আমার, কোরোনাগো আর দেরী-
অনেক কিছু তবে এসে চলে যাবে, যা আসিবে না আর ফিরি।।
রচনাকাল : ১৩/৫/২০১২
© কিশলয় এবং পথিক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।