শত জন্মের পূণ্যফলে আমি ভারতবাসী। ভারত আমার মা।আমি চিরঋণী তাঁর কাছে। আমার দেশ মা কিন্ত আমার মতো সাধারণ অবলার যেমন জন্ম দিয়েছেন---- জন্ম দিয়েছেন বহু রত্নের। মা তো আমার রত্নগর্ভাও।
মা যখন শৃঙ্খলাবদ্ধ ইংরেজের মুঠোয়--- তাঁর এই কৃতি সন্তানেরাই তো নিজের জীবনের বিনিময়ে তখন মাকে শৃঙ্খলামুক্ত করেন। সমাজে তোমার কন্যা সন্তানকে সামাজিক মর্যাদা দিয়েছেন তো তাঁরাই। তাদের লেখাপড়া শিখিয়ে, বাইরের জগৎকে চিনতে শিখিয়ে তাদের কে প্রতিষ্ঠিত হতে শিখিয়েছে।
স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এই দুই মহান মনিষীর জন্মদিনে তাঁদের শ্রদ্ধা জানাই। আমেরিকার শিকাগো শহরে বক্তৃতা দিয়ে বিবেকানন্দ প্রমাণ করেছিলেন তিনি ভারতের গর্ব। আজীবন সন্ন্যাসী হয়ে ত্যাগের পথ বেছে নিয়ে তিনি ভারতমায়ের মঙ্গলার্থে ব্রতী হন। তিনি শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের একনিষ্ঠ শিষ্য ছিলেন। মাত্র ৩৯ বছর বয়সে আমরা আমাদের শ্রদ্ধেয় দেবতাকে হারাই।
আমাদের আর এক মহান ব্যক্তিত্বের নাম সুভাষ চন্দ্র বোস। ছোটবেলা থেকেই বৈপ্লবিক চিন্তাধারা তাঁর মধ্যে। তিনি অহিংস নীতিতে অবিশ্বাসী ছিলেন। দেশমাতাকে শৃঙ্খলামুক্ত করতে তিনি আজাদহিন্দ ফৌজ গঠন করেন। শৃঙ্খলাবদ্ধ মায়ের চোখের জল মোছাতে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সমর্পণ করেন দেশমাতৃকার চরণে। বহু নারী তাঁর দলের সদস্য হন।
দেশমাতৃকা শৃঙ্খলা মুক্ত হয়ে যখন আনন্দে বিহ্বল----তখন তাঁর কৃতিসন্তান সুভাষ চন্দ্র নিখোঁজ হয়ে যান। স্বাধীনতার জন্য সর্বস্ব খুইয়েও স্বাধীন ভারতবর্ষের শ্বাস-প্রস্বাস তিনি নিতে পেলেন না। স্বাধীন ভারতে আমরাও তাঁকে পেলাম না। এমন দূর্ভগ্য যেন কোন শত্রুরও না হয়।
এবার দেশের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসে সকলের জন্য মনটা কেঁদে ওঠে। আর এই ২০২০ তে করোনা মহামারির জন্য বহু ভালোবাসার মানুষ, বহু কাছের মানুষকে হারিয়েছি। তাঁরা যে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন --- সেখানে শান্তিতে থাকুন।
২০২১ এর এই নতুন বছরে সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। সুখ-দুঃখ মিলিয়েই জীবন। তাই পুরোনো দুঃখকে ভুলে আমরা সকলে মিলে ২০২১ এ ভারতমাতাকে অনেক মূল্যবান সময় উপহার দেব।।
রচনাকাল : ১০/১/২০২১
© কিশলয় এবং নূপুর গাঙ্গুলী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।