চলো পাল্টাই
আনুমানিক পঠন সময় : ১০ মিনিট

লেখিকা : প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জি


কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , আগষ্ট
প্রকাশিত ৭ টি লেখনী ২৭ টি দেশ ব্যাপী ৬৭৫৮ জন পড়েছেন।
স্কুল শেষ হওয়ার পর, খাতা বই গুছিয়ে না রেখে, অনিক আজ যেন কেমন উদাস হয়ে ডাইনিং টেবিলের উপরে ঘাড় নিচু করে দুই হাতের উপর বুক রেখে, চুপচাপ কি যেন ভাবতে থাকলো। এখন পৃথিবীর অসুখের কারণে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ থাকায় অনলাইনে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের মত স্টাডি ফ্রম হোমও হচ্ছে। তবে অনিকের মন খারাপ বন্ধুদের না দেখতে পাওয়া কিংবা তাদের সাথে বেঞ্চ শেয়ার করে পাশাপাশি বসে ক্লাস না করতে পারার কারণ নয়। মনের উদাসীনতাটা অন্য জায়গায়। কারণ হল, ইংলিশ ক্লাসের এসাইনমেন্ট।
                অনিক ক্লাস ফাইভে পড়ে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। পড়াশোনায় বেশ ভালো। খেলাধুলোতেও কারোর চেয়ে কম যায় না। তবে ও ওর অন্য ক্লাসমেটদের মত শুধুই যে পড়াশোনা আর খেলাধুলা করতে জানে তা কিন্তু নয়, অনিক ভাবতেও জানে। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, বন্ধু বান্ধবের জন্য, দেশের জন্য এবং পৃথিবীর জন্যও অনিক এই দশ বছর বয়সেই অনেক কিছু ভাবে। ওর মা-বাবা কখনো ওর উপরে জোর করে কোন বোঝা চাপিয়ে দেয় নি। ওকে ওর মত বড় হতে তারা সাহায্য করে। ভাবার সুযোগ দেয়। সেই ভাবার সুযোগ পেয়ে অনিক ভাবে। আর ভাবে বলেই অনেক কিছু পাল্টে দিতে ইচ্ছে করে অনিকের। ও প্রায়ই ভাবে যে ওর কাছে এমন যদি পাওয়ার থাকতো যা দিয়ে ওসব খারাপকে ভালোতে পরিবর্তন করে দিতে পারতো তাহলে কতই না ভালো হতো। সুপারম্যান এর মত হয়ে দুষ্টুলোকেদের ও যদি পানিস করতে পারত, যদি কোনটা ঠিক কোনটা ভুল তারা তাদেরকে বোঝাতে পারত তাহলে কতই না ভালো হতো। এই সমস্ত ভাবতে ভাবতে কোথায় যেন হারিয়ে যায় ছোট্ট অনীক। 
             আজকে ইংলিশ ক্লাসের নন্দিনী ম্যাম অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছেন রচনা লেখার। রচনার টপিক 'হিরো অর হিরোস্ অফ ইন্ডিয়া'। তিন দিনের মধ্যে লিখে জমা দিতে হবে অনলাইনে। ম্যাম বলেছেন যে স্বামী বিবেকানন্দ, প্রজাতন্ত্র দিবস ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ওপরে যেন বেশি জোর দিয়ে হিস্ট্রি বইতে যা আছে সেটুকুই যেন লেখা হয়, ওর বাইরে আর বেশি কিছু লিখতে হবে না। অ্যাসাইনমেন্টে মার্কস পাওয়ার জন্য নাকি ওইটুকুই যথেষ্ট । তবে অনিকের মনে হচ্ছে যে ম্যাম কিছু যেন একটা বাদ দিয়ে গেছে। ম্যামের কথাগুলোতে পুরোপুরিভাবে মন ভরেনি অনিকের।  
                   অনিকের আজকে বাবার কথাও খুব মনে পড়ছে। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পাশের ঘরেই মায়ের অফিসের মিটিং চলছিল। এবার সেটা শেষ হল। ঘর থেকে বেরিয়ে এসেই অনিকের এই অবস্থা দেখে তার মা জিজ্ঞাসা করল-

" একি অনিক! ক্লাস তো ওভার হয়ে গেছে, এখনো এখানে চুপচাপ বসে আছো যে? চারিদিকে বই-খাতা ছড়ানো, অনেকক্ষণ তো কিছু খাওনি, বই-খাতা গুলো গুছিয়ে রেখে এবার একটু খেয়ে নাও।"

মায়ের কথা যেন অনিকের কানেও পৌঁছল না‌। কেন তা সে হয়তো নিজেও জানেনা। তাকে অন্য মনস্ক দেখে মা একটু কাছে এসে মাথায় হাত রেখে আবার জিজ্ঞাসা করলেন-
 
"কি হয়েছে অনিক? মন খারাপ? ম্যাম বকেছেন?"

এবার অনিক কথা বলল-

"কেউ বকেনি আমায়। আচ্ছা মা, বাবা কবে ফিরবে?"

মা বললেন-

"এখন কি করে ফিরবে বল? বাবা তো এমারজেন্সি ওয়ার্কার। বাবা তো ডক্টার তাই না? এখনতো চারিদিকে খুব খারাপ সিচুয়েশন, তুমি তো সবই জানো। সিচুয়েশন যখন আন্ডার কন্ট্রোল চলে আসবে তখন বাবা আবার ফিরে আসবে। আবার এনজয় করবে আমাদের সাথে। কিন্তু এখন তো হবে না সেটা। "
 
            অনিকের বাবা ডাক্তার। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় উনি এখন কর্মরত। এই ভয়াবহ সিচুয়েশন যতক্ষণ না কন্ট্রোলে আসবে, ততদিনে অনিকের বাবার মতো আরও অনেক ডাক্তার, অনেক এমার্জেন্সি ওয়ার্কাররা নিঃশ্বাস ফেলার সময় পাবে না তো তারা বাড়ি কি করে আসবে! 
             হঠাৎ অনিক খুবই অপ্রত্যাশিত ভাবে তার মাকে একটা প্রশ্ন করে বসলো। এই প্রশ্ন শুনে তার মা বুঝতে পারল না যে অনিক কেন এই ধরনের একটা প্রশ্ন করল। এই প্রশ্ন তো অনিকের করার কথা না, তবে? অনিক তার মাকে জিজ্ঞাসা করল-

"আচ্ছা মা, বাবাকে ছেড়ে থাকতে আমার যে রকম কষ্ট হচ্ছে সেরকম তো বাবারও হচ্ছে, তাহলে বাবা কেন বাড়ি ফিরে আসছে না? কেন বাবা আমাদের ছেড়ে ওখানে থেকে পেশেন্টদের খেয়াল রাখছে?"

এরকম প্রশ্নে অনিকের মা অবাক হলেও বিরক্ত কিন্তু হলেন না। তিনি বললেন-

"অনিক, সব কাজ কি আর ইচ্ছে অনুযায়ী করা যায়, কিছু কাজ থাকে যা কষ্ট হলেও ইচ্ছা না হলেও করতে হয়। কারণ সেগুলো হলো কর্তব্য। তোমার দেশের প্রতি তোমার কর্তব্য। ঠিক বাবা যেভাবে তার কর্তব্য পুরন করছে আমাদের দেশের প্রতি, দশের প্রতি, ঠিক সেভাবেই।"

"আজ থেকে অনেক বছর পর, এতদিন যে বাবা আমার কাছে ছিল না, আমি বাবা তুমি আমরা যে সবাই কষ্ট পেয়েছিলাম তার ব্যাপারে কেউ কিছু জানবে কি করে?"

ভিষন অদ্ভুত প্রশ্ন। তবে কি এই প্রশ্নের কোন মানে আছে? নিশ্চয়ই অনিকের মনে অন্য কোনো কথা বা কারণ উঁকি মারছে। অদ্ভুত প্রশ্ন হল অনিকের মা প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলেন না। তিনি উত্তর দিলেন-

"আচ্ছা অনিক একটা কথা বলতো, তুমি কি করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ আরো অন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যাপারে জানতে পারছ?"

খুব বিমর্ষ ও কাতরভাবে অনিক বলল-

"স্কুলের বই পড়ে।"

মা বললেন-

"ঠিক তাই। তখন এর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে যেরকম বই লেখা হয়েছিল, হিস্ট্রিতে যেরকম তোমরা পড়ার সুযোগ পাচ্ছ, ঠিক সেরকমই এখন সিচুয়েশন নিয়েও বই লেখা হবে। অনেক বই। হিস্ট্রির বইতেও ফিউচারে তোমার বাবার মতো আরো অনেকের কথা লেখা হবে। আর সেইসব বই পড়েই ফিউচারে সবাই জানতে পারবে যে একটা সময় সিচুয়েশন ঠিক কিরকম হয়েছিল।"

"সবটা কি জানতে পারবে মা?"

"কি বলতে চাইছো অনিক?"

"মা, আজকের নন্দিনি ম্যাম বলেছে অ্যাসাইনমেন্টে নাম্বার পেতে গেলে নাকি স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও প্রজাতন্ত্র দিবসের ব্যাপারে যেটুকু স্কুলের হিস্ট্রি বইতে আছে সেইটুকুই লিখতে। ওইটুকুই নাকি যথেষ্ট। বেশি নাকি লিখতে হবে না। আচ্ছা মা, নিজের ভারতকে চেনার জন্য, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যাপারে জানার জন্য কি শুধু স্কুলের হিস্ট্রি বই যথেষ্ট? ওতে আর কতটুকু লেখা আছে? কে কি বলেছিল কে কি করে ছিল জাস্ট এটুকুই। তবে মা তুমি যে বললে, দেশের ভালো দশের ভালো করতে গেলে অনেক কষ্ট করতে হয়, সেই কষ্টের কথা কোথায় লেখা আছে মা? দেশকে কি শুধু নাম্বার পেতে জানব? নিজের অ্যাসাইনমেন্টের নাম্বারের জন্য কি শুধু দেশকে ভালোবাসবো? এটা কেমন ভালোবাসা মা? কেমন কর্তব্য? স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বা অন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সমস্ত স্ট্রাগলের কথা আজ যেমন আমরা জানতে পারিনি, শুধু স্কুলে যেটুকু পড়ে আছে সেটুকুই জেনেছি, সেরকম কি আজ থেকে অনেক বছর পর বাবার মতো আরো অনেকের স্ট্রাগলও শুধুমাত্র লোকের নাম্বার পাওয়ার জন্যই পড়বে? কিউকি তবে সত্যিটা জানবে না? জানবে না যে ঠিক কতটা কষ্ট করতে হয়েছিল? কেউ কি সত্যি তাদের সামনে নিয়ে আসবে না মা কখনো? মা, বাবার তুমি দুজনেই আমাকে শিখিয়েছো দেশের কর্তব্য যারা ঠিকভাবে পালন করে তারা সবাই নাকি হিরো। তাহলে মা আজকে নন্দিনী ম্যাম স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এনাদের নামের পাশে আমাদের আজকের হিরোদের নাম কেন বসালেন না? স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যেরকম আমাদের কাছে হিরো, ঠিক সেরকমই তো বাবার মতো সব ডাক্তাররা, সব পুলিশম্যানরা, সব এমার্জেন্সি ওয়ার্কাররা, সব করোনা ওয়ারিয়রসরাও তো হিরো অফ ইন্ডিয়া, তাহলে তাদের কথা কেন কেউ বলছে না?"

অনিকের মা এতক্ষণ চুপ করে অনিকের কথাগুলো শুনছিল। সত্যিই তো ভারতকে, ভারতের সংগ্রামীদের কি শুধু স্কুলের হিস্ট্রির বইয়ের পাতাতেই খুঁজে পাওয়া যায়? শুধু কি তাদের নাম্বার পাওয়ার লোভে চেনা? সত্যি কি তারা ভালোবাসা আজও, কোনদিনও, পাবে না? সত্তিকারের হিরোদের সত্তিকারের সংগ্রাম কি কেউ জানতে পারবে না? স্কুল-কলেজের নাম্বার পাওয়ার নেশার কাল পট্টি চোখে বেঁধে আর কটা সত্যিকে পায়ের তলায় পিষে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে আর কটা ছেলে-মেয়ে? আর ক'জন বাবা-মা শুধু তার ছেলে মেয়েদের নাম্বার পাওয়ার স্বপ্ন দেখাবে? সংগ্রামীদের সংগ্রাম ভুলে যে কখনও এগোনো যায় না এটা কি তারা কোনদিনও বুঝতে পারবে না? নানান কথা ভাবতে ভাবতে অনিকের দিকে তাকিয়ে তার মা দেখলেন অনিকের চোখে জল। অনিকের কথা থামিয়ে দিতে ইচ্ছে করলোনা অনেকের মায়ের। তিনি চান যে তার ছেলে যেন সত্তিকারের একজন ভারতবাসী হয়ে উঠুক। ভারতের প্রতি কর্তব্য, দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্যকে যেন স্কুলের নম্বরের শিকল আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে না ফেলুক। তিনি অনিককে বললেন-

"আমি শুনছি অনিক, তুমি বলো। থেমো না।"

কাঁপাকাঁপা ও ধরা ধরা গলায় অনিক আবার বলতে শুরু করল। তার মনের কথা। দেশের প্রতি তার ভালোবাসার কথা। কিছু দেশবাসীর প্রতি তার আফসোসের কথা।

"আগের দিন ক্লাসে অভিরূপ স্যার জিজ্ঞাসা করেছিলেন 'হোয়াট ইজ আজাদ হিন্দ ফৌজ?' জানো মা স্নেহা কি আনসার করেছিল? ও বলেছিল যে এরকম একটা নাম নাকি ও কোথাও কখনো শুনেছে কিন্তু কোথায় শুনেছে তারা নাকি ওর মনে নেই। তারপরে সব যখন ঠিক আনসারটা বলে দিলো তখন ও বলল যে ক্লাস থ্রিতে অ্যানুয়াল পরীক্ষার জন্য পড়া জিনিসকে ক্লাস ফাইভে সে কখনো মনে থাকে? আচ্ছা মা, আজাদ হিন্দ ফৌজের ব্যাপারে শুধুই কি পরীক্ষার জন্য পড়া যায়? জানার জন্য কি পড়া যায় না? ক্লাসের সবার মধ্যে সবার কম্পিটিশন। শুধুমাত্র নাম্বার বেশি পাওয়ার। তবে জানার জন্য কম্পিটিশন কিন্তু কারণ নেই! সবাই শুধু সেইটুকুই পরে যেটুকু নাম্বার পাওয়ার জন্য দরকার। আসল লড়াই তো হবে দেশকে জানার, দেশকে চেনার, সংগ্রামীদের জানার তাদের সংগ্রামকে চেনার। কেউ কারো থেকে একটু বেশি নম্বর পেয়ে গেলেই তাকে বাকিরা হিংসা করতে থাকে। শুধু কি নম্বর পাওয়াতেই হিংসে? সব জায়গায় হিংসে। চারিদিকে সবাই খালি একে ধরে মারে তাকে ধরে মারে। সবাই শুধু নিজেকে নিয়েই ভাবে, কেউ দেশের কথা ভাবে না। দেশের জন্য যারা ভালো করছে তাদের কথা কেউ ভাবেনা। তাদের ওপরও হিংসা করে তাদেরও ধরে মারে। দেশকে স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য যারা এত সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে গেছিল তারা কি কখনো এই দেশের স্বপ্ন দেখেছিল? তারা কি কখনো ভেবেছিলো যে তাদের ফিউচারে কেউ আর মনে রাখবে না? কেউ আর এক হয়ে ভাবতে শিখবে না? সবাই শুধু মাত্র নম্বর পাওয়ার কথাই ভাববে? তারা কি ভেবেছিল?"

এই কথা বলতে বলতে অনিকের দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। অনিকের মা একটু সরে গিয়ে তার কাছে বসলেন। তিনি আজ অনিকের মধ্যে আগামীর ভারত খুঁজে পেয়েছেন। এই তো সেই চিন্তা ধারা! এই চিন্তা ধারাই তো দরকার! বয়সে না হলেও অনিক সত্যিই বড় হচ্ছে। বড় মানুষ হবে অনেক। তবে একা নয়, সবাইকে নিয়ে এগোবে অনিক। সত্যিটাকে সবার সামনে তুলে ধরবে অনিক, নিজে দেখবে, অন্য কেউ দেখতে শেখাবে। এবার তিনি অনিককে বললেন-

"না অনিক, তারা হয়তো সত্যিই এরকম ভারতের স্বপ্ন দেখেননি। তাদের দেখা স্বপ্নের ভারতের সঙ্গে আজকের ভারতের হয়তো সত্যিই কোন মিল নেই। তবে তুই পারবি না! পারবিনা বদল আনতে? এই বদল তোকে আনতে হবে। তবে একা নয়। বাকি সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। হিংসা ভারতের সবচেয়ে বড় শত্রু। তাকে শেষ করতেই হবে। সবাইকে জানাতেই হবে যে নম্বরের হিংসার জালে ভারতকে আটকে রাখলে চলবে না। তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। অনেক সংগ্রাম করতে হবে, অনেক বাধা বিপত্তি আসবে, তবে থেমে গেলে চলবে না। এক হয়ে লড়তে হবে। এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে ভারতকে। দেশের ভালোর জন্য যারা প্রতিমুহূর্তে সংগ্রাম করছে, যারা প্রাণ দিয়েছে, যারা প্রাণ দিচ্ছে ও যারা প্রাণ দেবে তাদের স্মরণে রেখেই তাদের স্বপ্নের ভারত গড়ে তুলতে হবে তোকেই।"

দেওয়ালে টাঙানো নেতাজির ছবিটার দিকে তাকিয়ে অনেক বলল-

"পারব। পারতে আমাকে হবেই। স্বপ্নের ভারত আমাকে গড়ে তুলতে হবেই। সত্যিটাকে সবার সামনে আনতে হবে। সব নাগরিকদের সত্যিই শিখতে হবে দেশকে সঠিকভাবে ভালবাসতে। বইয়ের পাতায় আটকে থাকবে না ভারত। এগিয়ে নিয়ে যাব। এগিয়ে নিয়ে যাব আমি ভারতকে। নেতাজি, আমি তোমার কিংবা তোমাদের কারোর সংগ্রাম ভুলিনি, কাউকে কখনো ভুলতেও দেব না। আজ যারা এই কঠিন পরিস্থিতিতে সংগ্রাম করছে আমাদের ভালো রাখবে বলে তাদের কোথাও কাউকে ভুলতে দেব না ভবিষ্যতে। তোমরা যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলে বা আজ যারা দেখছে সেই ভারত আমি গড়ে তুলবই। ঠিক পথে নিজেও হাঁটবো ও সবাইকে হাঁটতে শেখাবো। আই প্রমিস। "

কথাগুলো বলে অনিকের চোখ দুটো যেন আগুনের শিখার মত জ্বলে উঠলো। আজ সত্যিই অনিক নতুন করে ভাবতে শেখাল। ওরাইতো সংগ্রামী। সংগ্রাম কি তা ওরাইতো শেখাবে। সংগ্রামকে মনে রাখতে শেখাবে। সঠিকভাবে শেখাবে। বদলাতে শেখাবে। পাল্টাতে শেখাবে। নতুন ভারতের স্বপ্ন দেখতে শেখাবে। স্বপ্ন পূরণ করবে, বদল আনবে, পাল্টে দেখাবে। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলবে, "চলো পাল্টাই"। দেশবাসী সঠিক পথে চলতে শিখবে আর মনে মনে বলবে,"হে সংগ্রামী, আমি তোমায় ভুলিনি, ভুলবোনা কখনো। কারণ তুমি চিরকাল থেকে যাবে আমাদের মাঝে। তোমার সংগ্রাম বেঁচে থাকবে আমাদের সংগ্রামের মধ্যে। বন্দেমাতারাম"।
রচনাকাল : ১০/১/২০২১
© কিশলয় এবং প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 4  China : 4  Europe : 1  France : 4  Germany : 2  India : 184  Ireland : 4  Russian Federat : 4  Saudi Arabia : 6  Sweden : 104  
Ukraine : 5  United Kingdom : 4  United States : 229  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 4  China : 4  Europe : 1  France : 4  
Germany : 2  India : 184  Ireland : 4  Russian Federat : 4  
Saudi Arabia : 6  Sweden : 104  Ukraine : 5  United Kingdom : 4  
United States : 229  


© কিশলয় এবং প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
চলো পাল্টাই by Priyanka Banerjee is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৫৯৩০৬২
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী
fingerprintLogin account_circleSignup