কবিতা: আমার দেশ, আমার ভারত
হে জন্মভূমি,হে ভারতমাতা !
যখন ছিলে তুমি আঁধার কারাগারে
পরাধীনতার শিকল পরে ইংরেজের অত্যাচারে
লাঞ্ছিতা,শোষিতা,অবহেলিতা ,
কন্ঠ রুদ্ধ ছিল তোমার নীরব অশ্রূজলে।
বিষাদের সুরে যখন তোমার ঘুম ভাঙতো
ইংরেজ শাসকের বুটের আওয়াজে,
তোমার বক্ষ হতো বিদীর্ণ,
তোমার সকরুন আর্তিতে রত্নগর্ভ ফুঁড়ে
জন্মেছেন হাজারো বীর নির্ভীক সন্তান।
বিদেশি শাসকের অত্যাচারে,শোষণে,দুরাচারে
দমেনি তাঁরা,হঠেনি পিছু, হয়নি দূর্বল, শঙ্কিত।
মায়ের চরম লজ্জা ঘোচাতে গড়ে উঠেছিল
তরুণ,নির্ভীক স্বদেশী দল, উঠেছিল প্রতিবাদের ঝড়,
প্রদীপ্ত হয়েছিল বিপ্লবের লেলিহান বহ্নিশিখা।
পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্ত করতে
গর্জে উঠেছিল তোমার বীর সন্তানদল।
স্লোগান তুলেছিল,"ইংরেজ,ভারত ছাড়ো"।
তাঁরাই তোমার কীর্তিমান, দেশবরেণ্য,
চিরস্মরণীয়,সাম্যপ্রান বিপ্লবী সন্তান-
বিনয়,বাদল, দীনেশ, নেতাজী, স্বামী বিবেকানন্দ।
তাঁরা দিয়ে গেছেন অভয় বানী,
অকপটে দান করেছেন নিজ রক্ত,
বরন করেছেন হাসিমুখে নির্মম অকাল মৃত্যু।
দেশবাসীকে শিখিয়েছেন স্বাধীনতার মন্ত্র,
দিয়েছেন জাতপাতের বিভেদ ভুলে একতার দীক্ষা।
মহাত্মা গান্ধী বিলিয়েছেন অহিংসার ধর্ম,
দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে দেশবাসীকে দিয়েছেন অনুপ্রেরণা
বিদেশি পোশাক বর্জন, স্বদেশী পোশাক গ্ৰহনে ,
ঘরে ঘরে চরকায় সুতা কাটার শিক্ষা।
দেশমাতার পরাধীনতার গ্লানি ঘোচাতে বীর ক্ষুদিরাম
হাসিমুখে ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে ওঠেন জীবনের জয়গান।
কত শত বীর সন্তান শহীদ হয়েছেন আত্মবলিদানে,
তাঁদের অমর কীর্তি লেখা আছে দেশবাসীর অশ্রুজলে,
ইতিহাস রয়েছে জীবন্ত স্বাক্ষী।
তোমার লাখো লাখো বীর সন্তানের একনিষ্ঠ সংগ্ৰামে
অবশেষে এসেছিল স্বাধীনতার নতূন প্রভাত, নতূন সূর্যোদয়।
উড়ল স্বাধীনতার বিজয় নিশান,
আকাশে, বাতাসে মুখরিত হ'ল ভারতমাতার জয়গান,
উড্ডীয়মান বিজয়কেতনের দিকে চেয়ে
আজও ভারতবাসী দৃপ্ত কন্ঠে বলে ওঠে,
"জয়হিন্দ","বন্দেমাতরম"।
গেয়ে ওঠে জাতীয় সংগীত,"জন-গণ -মন অধিনায়ক",
অশ্রুজলে জানায় বীর শহীদদের শতকোটি সেলাম।
নতশিরে আমরা ভারতবাসী সদাই এই কামনা করি,
জন্ম যেমন তোমার কোলে,মরণও যেন হয় তোমার-ই কোলে।
রচনাকাল : ৭/১/২০২১
© কিশলয় এবং যুথিকা দেবনাথ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।