দুশো বছরের ইংরেজ অপশাসনের বাধা পেরিয়ে, দেশমাতৃকার লাঞ্ছনা সয়ে
অনেক অত্যাচার সহ্য করে, কখনও যোগ্য জবাব দিয়ে শত শত শহীদদের রক্ত ঝরিয়ে
পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে একদিন অর্জিত হল স্বাধীনতা ।পেলাম শান্তি, পেলাম তৃপ্তি
প্রাণ ভরে নিলাম মুক্তির নিঃশ্বাস, স্বাধীনতার সুখ ।এদেশে স্বপ্ন দেখা আত্মবলিদান দেওয়া ক্ষুদিরামের দেশ ।
এদেশ বিনয় বাদল দিনেশের দেশ, এদেশ প্রীতিলতা, প্রফুল্লচাকীর দেশ, এদেশ ঋষি অরবিন্দের দেশ, এদেশ নেতাজীর দেশ, এদেশ গান্ধীজির দেশ, এদেশ বাঘাযতীনের দেশ, এদেশ মাষ্টারদা সূর্য সেনের দেশ।
এদেশ দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের দেশ, এদেশ ভগৎ সিংহের দেশ, এ দেশ সিপাহীদের দেশ, এদেশ কবিকঙকন মুকুন্দরামের দেশ
এদেশ রামমোহনের দেশ, এদেশ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দেশ, এদেশ রাণী রাসমণির দেশ, এদেশ রবীন্দ্রনাথের দেশ, এদেশ ঝাঁসির রাণীর দেশ, শত শত শহীদদের আত্মবলিদানের দেশ।এদেশ হিন্দু মুসলমান, জৈন খৃষ্টান, গুজরাট, পারসিক মারাঠী রাজপুতদের দেশ। এদেশ সাঁওতাল ভাই বিরসা মুন্ডার দেশ, এদেশ মঙ্গলপান্ডের দেশ। এদেশ এক মহামানবের দেশ।১৫ই আগষ্ট ভারত স্বাধীন হল, ঘরে ঘরে উড়ল তেরাঙ্গা জাতীয় পতাকা। এক কন্ঠে সবাই গেয়ে উঠলাম জনগণমনাধিনায়ক জয় হে, ভারত ভাগ্য বিধাতা। অনেক আশা নিয়ে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে আমরা অঙ্গীকার করলাম,
জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এই দেশকে গড়ে তুলব এক মহান দেশ রূপে। গণতন্ত্রের ভিত্তিতে সকলকে দিতে হবে সমান অধিকার - বাঁচার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতার অধিকার। ছোট বড় থাকবে না, ভেদাভেদ থাকবে না, হানাহানি থাকবে না, ঈর্ষা দ্বেষ থাকবে না, রেষারেষি থাকবে না। শিক্ষক, চাকরি জীবি, কৃষক, মজুর, শাসক, বুদ্ধিজীবী সকলে থাকবে এক সাম্যের কাঠামো ছত্রছায়া। গড়ব এমন দেশ যা সমগ্র বিশ্বের কাছে এক আদর্শ দেশ, এ আমাদের ছিল দৃঢ় অঙ্গীকার। তৈরী হল প্রজাতন্ত্র, ভোটের ভিত্তিতে গঠিত হয় শাসক দল। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ভোট, জনগণের রায় হয় নির্বাচিত সরকার। খুব ই সদ্ ভাবনা। কিন্তু আজ স্বাধীনতার দীর্ঘ বছর পেরিয়ে এসে ভাবুন তো সত্যিই কি রাখতে পেরেছি আমাদের অঙ্গীকার নাকি কালের কপততলে তলিয়ে যাচ্ছি অতল অন্ধকারে। আজও কেন রাজনীতির এত দলাদলি, কেন মাতাকে হারাতে হয় পুত্রকে, স্বামীকে। পুত্রকে হারাতে হয় পিতাকে, হারাতে হয় স্বজনকে, কেন মাতা, পিতা, পুত্র, কন্যার হাহাকার আকাশ, বাতাসকে করে তোলে বিষাক্ত। কেন ধর্ষিতা হতে হয় নারীকে, মাতার সামনে কন্যাকে, কন্যার সামনে মাতাকে। কেন বৃদ্ধ পিতা-মাতার স্হান হয় বৃদ্ধাশ্রমে, কেন উপযুক্ত যুবক ঘোরে পথে পথে হতাশায়, পায় না চাকরি। আসুন আর একবার আমরা মুক্ত কন্ঠে বলি, 'আমি সেই দিন হব শান্ত,যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন - রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না।'
ভেঙেগ ফেলুন এই অচলায়তন। সবাই মিলে ঝংকার তুলি স্বাধীনতার সত্য মূল্যায়ন চাই।
রচনাকাল : ৮/১/২০২১
© কিশলয় এবং মোনালিসা রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।