অপরুপা কেয়ারটেকারকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলো "নতুন শ্রমিক কাকে রেখেছো? দেখছি না তো কোনো নতুন মুখ এখানে?কাজে আসেনি আজকে সে?নাকি তুমি তাকে এটা বলোনি যে আমাদের এখানে কার কাজের এক বছর সম্পূর্ণ হয়েছে সেটা দেখে দেখে বোনাস দেওয়া হয় না?যে এক সপ্তাহ আগে এসেছে তাকেও দেওয়া হয়?"।
কেয়ার টেকার উত্তর দিলো "আসলে ম্যাডাম তাড়া হুড়োতে এটা আলাদা করে বলতে একদম ভুলে গেছি"।
এবার অপরুপা বললো "ভুলে গেছি বললেয় সাত-খুন মাপ তাই না?তোমার এই ভুলে যাওয়া রোগ টা যে কবে তোমায় ছেড়ে যাবে তা তুমিই জানো"।
কেয়ার টেকার কোনো পাল্টা উত্তর দিলো না কারণ সে জানে ম্যাডাম যা বলছে তা মিথ্যা নয়,ভুলে যাওয়া রোগ টা তার আছে বৈকি।
অপরুপা এবার সব শ্রমিকদের হাতে বোনাসের সাথে সাথে জামাকাঁপড় গুলো তুলে দিয়ে সবাইকে বললো "চলো আমার সাথে সবাই দু-তলার ছাঁদে,নতুন কাজে লেগেছে যে তাকে বোনাস দিয়ে আসি আর ছাঁদের কাজ কতদূর এগালো দেখে আসি,নতুন কাজে লেগেছে তাই হয়তো জানে না সে আমাদের এখানকার নিয়ম,ভেবেছে তার তো এখনো একবছর হয়নি বোনাস পাবে না,তাই হয়তো নীচে আসেনি"।
এমনি তে শ্রমিকরা সারাক্ষণ খুব হই-হুল্লোড় করে কাজ করে এতে তাদের কষ্ট কিছুটা কম হয়।আনন্দে মেতে থাকলে সারাদিনের কাজের ভারটা তাদের মালুম হয় না,কিন্তু অপরুপা আসলে তারা চুপচাপই থাকে তাদের ম্যাডাম কে সন্মান দিতে।শ্রমিকরা অপরুপার পেছন পেছন ছাঁদে গেল চুপচাপ নিঃশব্দে।গিয়ে দেখলো নতুন শ্রমিকটি ছাঁদে ওঠার শিঁড়ির দিকে পেছন করে একটা ছোটো হাত আয়নায় নিজের মুখ দেখছে মগ্ন হয়ে,যেন আয়নায় নিজেকে চিনতে চেষ্টা করছে সে।আয়নায় নিজের মুখ দেখতে সে এতোটাই মগ্ন যে তখনো খেয়াল করেনি প্রোমোটার এবং অন্যান্য শ্রমিকরা ছাঁদে এসেছে।অপরুপার চোখ গেল নতুন শ্রমিকের সেই হাত আয়নার দিকে। পেছন থেকে দেখলে আন্দাজ করায় যায় না তাকে যাকে সে আয়নায় দেখতে পাচ্ছে। শ্রমিকদের মধ্যে একজন ডাকতে যাবে তাকে তার আগেয় অপরুপা ডাক দিলো "পাঁপড়ি" শ্রমিকরা তো সব এটা ভেবেয় অবাক যে পাঁপড়ির সাথে তাদের ম্যাডামের এটা প্রথম আলাপ ,ম্যাডাম তার নাম জানলো কি ভাবে?
রচনাকাল : ৬/১/২০২০
© কিশলয় এবং সাথী ঘোষ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।