জীবনের ছন্দময় চলার পথটা হঠাৎ-ই কেন যেন কৃত্রিমতার মোড়কে ধীরে ধীরে
মুড়ে যাচ্ছে।সব থেকেও যেন কিছু নেই। শুরু করতে গিয়েও কেন যেন কিছু শুরু
করা যায়না। সর্বত্রই যেন একটা অনুপস্থিতির অদ্ভুত উপস্থিতি। হয়ত এটাই হওয়ার
ছিল। সম্পর্কটা ভেঙে যাওয়ার পর যখন মনে হয়েছিল, “যা হয়েছে ভালোই হয়েছে”
এই ভেবে নতুন করে নতুন কাজে পূর্ণ উদ্যমে কিছু করা গেছে, কিন্তু এখন আর সেই
উদ্যমটা নেই। এখন মনে হচ্ছে শুধু ভুলই হয়েছে। জীবনের পাতাটা, ভবিষ্যতের হিসাবের
খাতার সাথে তুলনা করতে গিয়ে সে শুধু নিজেকেই বড় করে তুলতে চেয়েছে কিন্তু বাস্তবে
তার সেই জীবনের পাতাটা বৃথাই ক্ষয়ে যাচ্ছে আর যাকে একদিন তার উপরে উঠার পথ
বলে মনে হয়েছে প্রকৃতপক্ষে সে নীচের দিকেই নেমে যাচ্ছে।
গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় কিংশুক এই সবই ভাবছে। আজ হঠাৎই তার
সেই কৈশরের প্রেমিকার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সেদিন সে আর কাঁদবে না বলেছিল মনে
মনে, প্রতিজ্ঞা করেছিল যে তাকে ভুলে যাবে বলে। কিন্তু একটাও সে রাখতে পারেনি।
দেখতে দেখতে কয়েকটা বছর কেটে গেল।
তার ডাইরীর পাতাগুল সেই ফাঁকাই রয়েগেছে। অনেকদিন সে কিছু লেখেনি।
কিইবা লিখবে? দিনগুলো শুধু কেটে যাওয়ার জন্যই যেন কেটে যাচ্ছে। দিন রাত তার বই,
মোবাইল , কম্পিউটার এর মাঝেই কেটে যায়। এক সময় তো সে মনে করত “যন্ত্রকে
বিশ্বাস করা যায় কারন সে তার নিয়ম মেনে চলে কিন্তু মানুষকে নয় কারন সে কোন
নিয়ম মানে না”। সে নিজেই বা কোন নিয়ম মেনে চলেছে? সে তো নিজেও মানুষ?...
যা হয়েগেছে তা তার এতদিনে ভুলে যাওয়া উচিত ছিল। সে ভুলেও ছিল কিন্তু
হঠাৎ আবার বারে বারে সেই পুরানো স্মৃতি মনে করার কোন মানে হয়না। কিন্তু তবু সে
করে। কিংশুকের মনটা হঠাৎই কেমন করে ওঠে, সে বলে “...তোমাকে আজও
ভালোবাসি...”! তারপরই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে, সে নিজেই ভাবে থাকনা পুরানো
কথা, সে না হয় স্মৃতির কাছেই রইল। নতুন সময়কে নতুন ভাবেই এগিয়ে নেওয়া যাক।
স্মৃতি না হয় কারো কাছে বন্দী হয়ে থাকে কিন্তু সময়কে আটকাবে কার সাধ্যি। তবু ... সে
তো মানুষ ...
রচনাকাল : ১১/৬/২০১১
© কিশলয় এবং তন্ময় সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।