ফুলমনির একটা ছোট্ট সংসার ছিলো।
ছোটো ছোটো রঙিন নুড়ির মতো জীবন।
তার ঘরের মেঝে ধূসর মাটির হলেও জীবনটা ছিলো/ বসন্তে ফুটে থাকা একগুচ্ছ পলাশের মতো।
বর্ষাদিনে তার বাড়ির পিছন থেকে ভেসে আসত
থোকা থোকা হাসনুহানার গন্ধ।
সেই গন্ধ মেখে চাঁদের আলোয় সে আর তার বর সোহাগ করত ভারি।
দুপুরে পদ্মপাতার মতো চিকন জলে ডুবসাঁতার দিয়ে/ রান্না করত পুঁইশাকের চচ্চড়ি আর কুচো মাছের ঝাল।
পুজোর সময় তার জনমজুর বর তার জন্য
একটা লাল ফুল ছোপানো শাড়ি এনে দিত।
শীতের দিনে দুজনে শিশির ভেজা বারান্দাতে বসে
গুড়পিঠে বানাত আয়েশ করে।
খালি মাঝেমাঝে ফুলমনির চোখ মুখ
বন্ধ হয়ে আসত অসম্ভব ধোঁয়ায়!
তার বরের ছিলো বিড়ির ভারি নেশা।
নেশা তাকে ছাড়ল না।
তারপর সে একদিন ফুলমনির হাত ছেড়ে এত্তদূরে চলে/ গেল যে যেখান থেকে আর চাঁদের আলো মেখে
সোহাগ করা যায় না।
বাগানের হাসনুহানাটা একই আছে আজো,
কিন্তু একটা আস্ত লাল-নীল সংসার চলে গেছে
একটা করাল ধোঁয়ার হাত ধরে অনেকটা দূরে।
রচনাকাল : ১৫/৬/২০২০
© কিশলয় এবং ঋত্বিকা গায়েন কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।