সূর্যী মামা ও সূর্যী মামা,
তোমায় আমি বলি শোনো -
মা আমার রোজ সকালে
চুপটি করে পাশে বসে
প্রাণ ভরে দুই গালে
দেয় শুধু শুধুই হামা ।
মুহূর্তে সাথে সাথে আমিও
জড়িয়ে ধরি আমার মাকে
হামি দিই মায়ের দুই গালে
একনাগাড়ে ধারাপাত ভুলে ।
সূর্যী মামা, তুমি মায়ের মতো
ওঠো রোজ রোজ একইসাথে
যখন ঘুটঘুটে ঘন আঁধার
ফিকে হয়ে আসে আকাশে।
তখন তুমি, সূর্যী মামা
হামা দাও রাঙা আলো দিয়ে
মোদের প্রাণের বসুন্ধরাকে।
সর্বত্র তখন প্রাণের ফুটন্ত ধারা
ছুটে চলে ফুটন্ত লাভার মতো
জেগে উঠে ঘুমন্ত পৃথিবী।
সূর্যীমামা, তোমার মতো মা আমার
চুপ করে আমার পাশে বসে
ঘুমন্ত আমিকে ডেকে তুলে
খোকন খোকন বলে বলে।
মুছিয়ে দেয় মনের যত গ্লানি
আলতো করে আঁচল দিয়ে।
হামি দিয়ে দেয় মা তখন
সারা মুখটি আমার জুড়ে।
রাঙা হয় তখন আমার মুখ
তোমারই মুখের মতন যে।
সূর্যীমামা,তোমার মতো মা আমার
হামা দেয় যখন আলতো করে
তুলতুলে আমার দুই গালে
জাগে তখন অবাক শিহরণ।
মুহূর্তে বুঝি প্রাণের ধারা
বইছে দ্রুত গতিতে
আমার প্রতি শিরায় শিরায়।
যেমন করে লজ্জাবতী লতা
লজ্জা ছেড়ে জেগে ওঠে
হঠাৎ কিছুর স্পর্শ পেয়ে।
সূর্যীমামা, আবার যেমন তুমি
রেগে গিয়ে ভরদুপুরে
তপ্ত কর ধরনীর ধূলি
বালি, আকাশ বাতাস
ধরনী তখন ছুটে বেড়ায়
প্রাণ নিয়ে এদিক ওদিক।
তেমন করে মা যখন
হঠাৎ রেগে আমায় মারে
মারের চোটে সারা পাড়া
ছুটি আমি তখন প্রাণ নিয়ে।
পরিশেষে, পশ্চিমের পড়ন্ত বিকেলে
সূর্যীমামা যেমন করে
শান্ত স্নিগ্ধ রাঙা মুখে
ডাকে ধরনীরে ঘুমের দেশে
চুপি চুপি নিয়ে যেতে,
তেমন করে মা আমার
ক্লান্ত শান্ত ছোট্ট আমিকে
নিয়ে যায় ঘরে হাত ধরে।
ঘুম পাড়ায় আমায় শান্ত মুখে
যখন সন্ধে নামে আকাশ হতে।
রচনাকাল : ৩০/১/২০২০
© কিশলয় এবং দেবাশিস পাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।