• সংকলন

    হঠাৎ দেখা


হঠাৎ দেখা (৩য় পর্ব)
বৈশাখী রায়
দেশ : India , শহর : কোলকাতা

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , জানুয়ারী
প্রকাশিত ১৪ টি লেখনী ৩৮ টি দেশ ব্যাপী ১৩৮০৯ জন পড়েছেন।
রিক্তা ঘরে ঢুকতেই শুনলো মাম ছবি দেখিয়ে ওর বাবা মা কে চেনাচ্ছে তার এই নতুন আঙ্কল টিকে। ওর পা আর চলছিল না। হাতের লুচির ট্রে টা টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখলো। ঋভু অবাক চোখে চেয়ে আছে ওর দিকে। চারদিকে এত বিস্ময়। কিছুই মেলাতে পারছেনা ও। এগিয়ে আসে ঋভু। কাঁপা কাঁপা গলায় রিক্তা কে জিজ্ঞেস করে …”রিম, মাম কি তবে আমার…..?”

রিক্তা উত্তর দিতে পারেনা।

“বিশ্বাস কর রিম আমি ফিরে এসেছিলাম। তোর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার খবরটা মা আমাকে হয়তো রাগ করেই অনেক দিন পর দিয়েছিল। আমাদের দূরত্বের আঁচ মাও পেয়েছিল বোধ হয়। তোকেই বেশি ভালোবাসতো কিনা। বিশ্বাস কর রিম কাকুর স্ট্রোক, কাকিমার শরীর খারাপ, তারপর তোর জেঠার ছেলেরা ওবাড়ি বিক্রি করে চলে গেল। আমি এসব কিছু চাইনি। সব কেমন হারিয়ে গেছিলো। আলেয়ার মায়া বেশিদিন টেকেনারে। তোর ঋভুদা তোর কাছেই ফিরে এসছিল। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে জানি। আজ ও আমি পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে চলেছি রিম। বিশ্বাস কর আমায় একবার।।“ এক নিঃস্বাস এ কথা গুলো বলে থামলো ঋভু।

রিক্তা ঠিক কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছিলনা। দুজনেই এক অন্য পৃথিবীতে হারিয়ে গেছে। এ কোন পৃথিবী? যে পৃথিবীর স্বপ্ন তার অধরা? যে পৃথিবীর মায়া সে কোনোদিন ও ত্যাগ করতে পারেনি?

“সেবার তুমি চলে গেলে ঋভুদা। আর তার কদিন পরেই আমি বুঝতে পারলাম আমি আর একা নই। তার পরেও তোমায় বহুবার ফোন করেছিলাম। পেরেছিলে এতটা অবহেলা করতে?আমার মনের অবস্থা বোঝার ক্ষমতা তখন কারোর নেই।বেরিয়ে গেছিলাম বাড়ি থেকে।সাথে শুধু ওই ছবিটা।ট্রেন ধরে সোজা বোলপুর। স্টেশন এ অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। একজন সহৃদয় ব্যক্তি তুলে নিয়ে এসেছিলেন আমায়। আশ্রয় দিয়েছিলেন। তার ও সাতকুলে কেউ ছিলনা।হয়তো ভগবান ঠিকই আছেন। তিনিই সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের খোঁজ দিয়ে দেন। পিসিমা বলে ডাকতাম। এখানকার ই একটা স্কুল এ পড়াতেন। তার কাছেই থেকে গেলাম। কিন্তু পারিনি ঋভুদা। পারিনি তোমার স্মৃতি কে বাঁচিয়ে রাখতে। সাত মাসে মিসক্যারেজ হয়ে গেল।জীবন কে এতটা অন্ধকার আর কখনো লাগেনি আগে। সবটা শেষ হয়ে গেল। বেশ কয়েকদিন পর বাবার মারা যাওয়ার খবরটা পেয়েছিলাম। তারপর মাও বেশিদিন থাকেনি আর। বছর চারেক পর পিসীমাও মারা গেলেন। জীবন কে এতবার অন্ধকার দেখেছি না…..ততদিনে আমিও ওই স্কুলেই জয়েন করেছি। তবুও জীবনের অভাব বোধ টা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমার ছোট্ট ফুটফুটে একটা মেয়ের লোভ থেকেই গেছিলো। আর তারপরই মাম কে এডপ্ট করার সিদ্ধান্ত নিলাম।“

রিক্তার চোখ ছাপিয়ে যাচ্ছে ।।ঋভুর ও। কিছুই যেন থামছে না। আপন গতিতে এগিয়ে চলেছে সবকিছু। এমনটাই যেন হওয়ার ছিল।রিক্তা কাছে এলো ঋভুর।চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,” তোমার স্মৃতি ধরেই আজ ও বেঁচে আছি। আমাদের একটা মেয়েই হবে। তাইনা ঋভুদা?”

ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে দুটো হৃদয়।। দুটো ছিটকে যাওয়া জীবন।
রচনাকাল : ৪/১/২০২০
© কিশলয় এবং বৈশাখী রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger
সমাপ্ত



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 5  China : 23  Europe : 2  France : 1  Germany : 3  India : 162  Iran, Islamic R : 1  Ireland : 14  Japan : 11  
Saudi Arabia : 15  Sweden : 9  Ukraine : 6  United Kingdom : 7  United States : 229  Vietnam : 2  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 5  China : 23  Europe : 2  
France : 1  Germany : 3  India : 162  Iran, Islamic R : 1  
Ireland : 14  Japan : 11  Saudi Arabia : 15  Sweden : 9  
Ukraine : 6  United Kingdom : 7  United States : 229  Vietnam : 2  


© কিশলয় এবং বৈশাখী রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
হঠাৎ দেখা (৩য় পর্ব) by Baishakhi Roy is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.