আগে গ্রামের ছিল না কারো খারাপ স্বভাব।
জনসংখ্যা কম ছিল প্রচুর খাবারের অভাব।।
সেই সময় জন্মে ছিলাম আমি ।
বাবা ছিল মায়ের প্রিয় স্বামী।।
নিজে না খেয়ে ,ভালো খাবার, খাওয়াতো মাকে।
জাতে সুস্থতার সাথে আলো দেখাতে পারে আমাকে।।
অস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসবকালীন নাড়ি জড়ালো আমার গলায়।
বাঁচানোর জন্য বাবা-মা থাকে ছিল কত ঠাকুর তলায়।।
বাবার একজোড়া জামাতে চলতো সারাবছর।
আমাকে কিনে দিতে জোড়া জোড়া পরপর।।
আমার মা মমতাময়ী নিজে না খেয়ে খাওয়াতো আমাকে।
সবার থেকে অনেক বেশি ভালোবাসি আমি আমার মাকে।।
দশ দিন, দশ মাস ,গর্ভে ধারণ করে, জন্ম আমায় দিলো।
চোখে জল, মুখে হাসি ,নিয়ে বাবা বলে প্রাণ যে জোরালো।
ভাদ্র মাস, তেইশ তারিখ, বৃহস্পতিবার ,অমাবস্যা তিথি।
কথায় কথায় মা বলতো ,পুরনো সেই সুখের স্মৃতি।।
আমি জন্মানোর বছরই হয়েছিল কারগিল যুদ্ধ।
দেশবাসী হয়েছিল পাকিস্তানের প্রতি খুব ক্ষুব্ধ।।
বড়ো হনু আমি ,সবার সাথে আস্তে আস্তে।
হাটতে শিখেই ,বাবার সাথে ধরনু কাস্তে ।।
সমাজের কারণে ছোট্ট থেকেই হনু নেশাখোর।
বদনাম দিয়ে সকলে মিলে বানালো বড়ো চোর।।
বড় হয়ে নেশা করা ছেড়ে দিই ,মা-বাবার বারণে।
শুধু তাদেরকে ভক্তি দিয়ে ,পুজো করার কারণে।।
মাধ্যমিক দিয়ে ছাড়বো ভাবি পড়াশোনা।
ভর্তি হওয়ার জন্য মা শুরু করে হেঁয়ালিপনা।।
মায়ের কথায়, তখন থেকেই ,বই নিয়ে বসতাম , শুরু করি পড়া ।।
মুখে হাসি ফোটানোর জন্য উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করা ।।
প্রথম শিক্ষক বাবা,মা, দ্বিতীয় কাকু , জেঠুরা।
আমায় পড়াতো ,ইংরেজি পড়াতো না এরা।।
তারপর যতদূর মনে পড়ে হোটো গুরুর কথা ।
শেখাতো বেশ, মাঝে মাঝে বেতের ব্যাথা।।
একদিন হোটো হঠাৎ করে গেল মরে।
তারপর পড়াশোনা মাথায় গেল চোরে।।
চতুর্থবার পাঠশালা পড়ি যার কাছে মিলন কান্তি ঘোষ ।
মানছি ভালোবাসতো কিন্তু তার ছিলো একটু বেশি রোষ।।
একদিন সে ধান ব্যবসার সব টাকা নিয়ে মেরে।
কোথায় যে চলে গেলেন সমস্ত কিছু ছেড়ে।।
তারপর পাঠশালা পরি রনজিৎ মশায়ের কাছে।
পরে বুঝতে পারি ইংরেজি অজানা তার আছে।।
বিদায় বেলায় বলেছিল বাড়ি যেতে চাইছে না মন।
তারা আছে তাই, না হলে থাকতাম বেশ কিছুক্ষণ।।
সে চলে যাওয়াই ,পাড়ার বৌদির কাছে, নাম তার জানিনি।
বারবার বলতো সারাদিন এত কাজ ,একটু বসতে পারিনি।।
তারপর বাংলা দর্শন ইতিহাস পড়ি পার্থ নন্দীর কাছে।
শিক্ষক হিসেবে ছিলেন পরিশ্রমী, পড়ানোর সূত্র তার আছে।।
একই সময় সংস্কৃত পড়তাম স্যার সুব্রত হাউলীর কাছে।
শিক্ষক হিসেবে ছিলেন সাদামাটা পড়াতেন অন্য ধাঁচে।।
কার্তিক বাবুর কাছে পড়তুম শারীর শিক্ষা।
শিক্ষক হয়েও বলে দিতেন বন্ধুত্বের দীক্ষা।।
বারো ক্লাসে ইংরেজিতে ভালো ফলাফল করিনি।
কারণ ছিল কারোর কাছে পাঠশালা আমি পড়িনি।।
মেজ জেঠু আছে ভগবানের ভক্ত।
বাবা আছে সবেই মানসিকভাবে শক্ত।।
পরিবারে যতবেশি প্যাঁচ আছে বড় জেঠুর মনে।
তাই, প্রায়ই ঝগড়া হতো হিংসুটে কাকিমার সনে।।
বড় জেঠু করতোনা পরিবারের কোনো কিছুর সমাধান।
ফালতু জেদে আমার দিদির মন করতো শুধু আনচান।।
চরিত্রে যাইহোক ছোট কাকার মন ভালো
কাকিমা সবার থেকে মাগুরা কালো।।
আমার দাদার নাম রাহুল বৌদির নাম মৌ।
দাদার কাছে মা বাবার থেকেও প্রিয় তার বউ ।।
বৌদি শুধু চালাকি করে উঠ+বস করায় তার কথায়।
দাদা গরুর মত কেটে চলে ,দিন চলে বৌদির চিন্তায়।।
ছোট কাকিমার এক ছেলে ও এক মেয়ে নেই মনে কাদা।
আমার নিজের বোন আমায় কোনদিন বলেনি দাদা।।
আমার মা সবার থেকে ভালো।
দুঃখের অন্ধকারে জ্বালায় আলো।
রচনাকাল : ২৩/১/২০২০
© কিশলয় এবং রাকেশ বাগ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।