অ্যাপ্রিসিয়েটিং ফিডব্যাক
আনুমানিক পঠন সময় : ৭ মিনিট

লেখক : Punnag
দেশ : India , শহর : Howrah

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৭ , এপ্রিল
প্রকাশিত ২ টি লেখনী ১৪ টি দেশ ব্যাপী ১২৬৭ জন পড়েছেন।
।।১।।

-অনির্বাণ বাবু?

-কে ভাই? কি চাই?

-আমি কচি, স্যার। আপনার জন্যে এই রবিবাসরীয়টা এনেছি স্যার।

-রবিবাসরীয়? গত রোববারের?

-আজ্ঞে স্যার, গত রবিবারের।

-আহহহহ! বাঁচালে ভাই! গিন্নীর সাথে সারাদিনের নামে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়েছিল, বুঝলে কিনা, তা ওঁরা তো যাকে বলে কট্টর ইংরেজপন্থী, 
বুঝলে কিনা, হিন্দু ছাড়া নাকি কোনো খবরেরকাগজ নিউজপেপারই নয়! সেই চক্করেই মিস হয়ে গেছিল, বুঝলে কিনা, নাহলে রবিবারের 
বাজারে খাসীর মাংস ফলোড বাই রবিবাসরীয়, এই শিডিউল চেঞ্জ করানোর মুরোদ হিটলারের বাবারও নেই, হ্যাঁ! নেহাত গিন্নীর বাপের 
বাড়ি, হেঁহেঁ, বুঝলে কিনা?

-হেঁহেঁ, এই নিন স্যার। সিগারেট চলবে তো স্যার?

-বাহবাহবাহবাহবাহ! এদ্দিন কোথায় ছিলে সোনা চাঁদ আমার! এমনিতে খুব একটা বিড়ি-সিগারেট আমি খাইনা, বুঝলে কিনা, শুধু 
ওই একটু-আধটু হেভি খাওয়াদাওয়া হয়ে গেলে এক-আধটা। গিন্নীর চ্যাঁচামেচি কাঁহাতক আর সহ্য করা যায়, বুঝলে কিনা?

-হেঁহেঁ, তা যা বলেছেন স্যার। এই নিন, অ্যা...

-এহে! আগুন তো নেই আমার কাছে, একটা মিনিট বস ভাইটি, আমি টুক করে রান্নাঘরের গ্যাস থেকে জ্বালিয়ে আসি। 
আসলে ওই অভ্যাস নেই না, বুঝলে কিনা, তাই লাইটার রাখা হয়না। একটু বস ভাইটি...

-এবাবা স্যার, আপনি উঠছেন কেন, বসুন বসুন, আগুন আছে আমার কাছে। অ্যা...অ্যাইযে।

-বাহবাহবাহবাহবাহ! দাও ভাই দাও... আঃহ! হ্যাঁ, তো তোমার নামটা যেন কি বলছিলে?

-আজ্ঞে স্যার, আমার নাম কচি, স্যার।

-বাহবাহবাহবাহবাহ! বেশ মিষ্টি নামখানা। আচ্ছা ভাই কচি, একখান কথা বল তো, আমার বাড়ির তো দরজা বন্ধ, তুমি 
ভেতরে ঢুকলে কিকরে? তুমি কি চোর, ভাই আমার? উফফফফফ! আমার বাড়িতে চোর এসেছে! বিশ্বাস কর ভাইটি, সেই 
নাইনটি-এইটে যখন বাড়িটা বানানো হয়, তখন আমি ওই ক্লাস সেভেন কি এইট, বুঝলে কিনা সেই তখন থেকে আমার একটা 
স্বপ্ন ছিল, আমার বাড়িতেও একদিন চোর আসবে, বুঝলে কিনা, এদ্দিনে তুমি পায়ের ধুলো দিলে। থ্যাঙ্ক ইউ ভাই, বেটার লেট 
দ্যান নেভার, বুঝলে কিনা। তা যাও ভাই যাও। ওই ঘরে আলমারি, তার পাশে আমার প্যান্ট ঝুলছে, বুঝলে কিনা, কালোটা নয়, 
নেভিব্লুটা, তার পেছনের পকেটে চাবি আছে, সব নিয়ে যাও ভাই, সব নিয়ে যাও। গিন্নীর শ’খানেক শাড়ি আছে, প্রায় নতুনই সব, 
বুঝলে কিনা, মাসে মাসে গুচ্ছের টাকা খরচ করে নতুন নতুন শাড়ি কেনে, পড়ার নামে নাম নেই, সব নিয়ে যাও ভাইটি।

-এবাবা, ছিঃছিঃ, না স্যার না, আমি চোর নই স্যার। আমি...

-যাহ! চোর নও? তবে?

-স্যার আসলে আমি একটা ফিডব্যাক ফর্ম এনেছিলাম স্যার, যদি দুটো মিনিট সময় দেন স্যার, মানে আমার একটা গতি হয়ে যায় স্যার।

-ফিডব্যাক ফর্ম? অ এমবিএ করছ বুঝি। বেশ বেশ। কোন কলেজ ভাই? ইন্টার্নশিপ চলছে তো এখন, ভালো করে কাজ শেখ, 
বুঝলে কিনা, এটাই শেখার বয়েস তোমার।

-ইয়ে, মানে স্যার আমি চোর, এমবিএ স্টুডেন্ট কোনোটাই নই। আমি স্যার, যাকে বলে ভূত, যদিও টেকনিকালি এখনও ভূত হইনি, 
ওই কাছাকাছি কিছু একটা ধরে নিন আরকি। আজকের ডিনারের যে কচি পাঁঠার ঝোলটা খেলেন না? আমি সেই কচি পাঁঠা – কচি, স্যার।

-ওহ! কচি! তাই কিরকম যেন চেনা চেনা ঠেকছিল, এতক্ষণ ঠিক ঠাহর করতে পারছিলামনা। আচ্ছা ভাই কচি, তুমি তো ছিলে পাঁঠা, 
জাহিদ ভাই-এর দোকান থেকে স্ট্রেট গেলে আমার পেটে, এখন তুমি বলছ তুমি ভূত, তা ভাই এই মানুষরূপ ধারণ করলে কিকরে ভাই?

-হেঁহেঁ, ইয়ে মানে স্যার আপনারা মানুষজন গরু, ছাগল, পাঁঠা, গাধা হতে পারেন, তাও নিজেদের লাইফটাইমে, 
আমি নাহয় পটল তুলে মানুষ হয়েছি। ওই যে আইনস্টাইন বাবু বলেছেন না, মাস থেকে এনার্জি, এনার্জি থেকে মাস, আগে বুঝতাম নাকি! 
এখন দিব্যি বুঝি স্যার, এই দেখুন না, আমার হাড়মাস আপনি কঞ্জিউম করলেন, আর আমি টপ করে স্পিরিট হয়ে গেলাম, 
দিয়ে কত্ত এনার্জি এখন আমার!

-ও ভাই কচি! তোমার কচকচি নিঃসন্দেহে সুস্বাদু ছিল, বিশ্বাস কর, ফিজিক্সের কচকচি বড় ক্যাচক্যাচ করে ভাই, বুঝলে কিনা, আর 
ফিজিক্স কপচিয়োনা ভাই, দোহাই তোমার। কি ফিডব্যাক ফর্ম বলছিলে যেন?

-হ্যাঁ স্যার। আসলে আমাদের এখন ওই পারফর্মেন্স রিভিউ চলছে, বুঝতেই পারছেন, আপনাদের মত আমরাও প্রোমোশানের দিকে তাকিয়ে স্যার। 
আর আমার প্রোমোশান এখন পুরোপুরিই আপনার হাতে স্যার।

-হেঁহেঁ, আমায় ম্যানেজার বানাচ্ছ কচি? বাহবাহবাহবাহবাহ! আমার অনেকদিনের সখ ম্যানেজার হওয়া, বুঝলে কিনা। গত বছর তো 
আমার প্রোমোশান প্রায় পাকাই ছিল, মাঝখান থেকে মিত্তির পেয়ে বেড়িয়ে গেল। সব ত সেই জুতো পরিষ্কার করেই, বুঝলে কিনা, 
এবছরের প্রোমোশানটাও একরকম ঝুলছেই আমার।

-ইয়ে, মানে স্যার, আপনি ঠিক ম্যানেজারিয়াল ফিডব্যাক দেবেন না স্যার, আপনি ওই ক্লায়েন্ট ফিডব্যাক দেবেন স্যার।

-আরিব্বাস! একদম ক্লায়েন্ট! তা এরকম ফিডব্যাক নিতে এতদিন কেউ আসেনি কেন?

-হ্যাঁ স্যার, আসলে আমাদের চিত্রগুপ্তবাবুর ডেটাবেস সিস্টেমে ক্লায়েন্ট ফিডব্যাকটা জেনারেলি অটো-আপডেট হয়ে যায়, কয়েকটা স্পেশাল 
কেসে এরকম ফিজিকালি গিয়ে ফিডব্যাক চাইতে হয়। এই যেমন ধরুন, মাংসটা খাওয়ার পর, হাড়টা ঠোঁটের ফাঁকে রেখে সুড়ুত করে 
চোষার আওয়াজটা আঠার ডেসিবেল পেরলেই প্রোমোশান বাঁধাধরা, খাওয়ার পর শুধু গুনগুনিয়ে মান্না দে ধড়লে আমাদের থার্টি পারসেন্ট হাইক। 
আর হাতেগোনা কয়েকজন এক্সেপ্সনালি ট্যালেন্টেড কচি পাঁঠা যদি এই দুটোই একসাথে ইন্ডিউস করতে পারে, তাহলে স্যার, সোজা মোক্ষলাভ।

-বাহবাহবাহবাহবাহ! ভারি সুন্দর প্ল্যানিং তো! তা তোমাদের কি এখনও বেল কার্ভে এভালুয়েশন চলছে নাকি?

-না না স্যার, চিত্রগুপ্তস্যার সেদিক দিয়ে ভীষণ অ্যাডভানসড। ইনফ্যাক্ট, আপনাদের এখানে চিত্রগুপ্তস্যারের মডেলই ফলো করা হয়। 
আমাদেরও তাই ইন্ডিভিজুয়াল টার্গেট ফুলফিল করতে হয়, অন্যের ছড়ানোর ওপর ভরসা করে বসে থাকা যায়না স্যার।

-বাহবাহবাহবাহবাহ! তা ভাই, তোমার প্রোমোশানের পর স্ট্রেট মোক্ষলাভ তো নাকি?

-কোথায় আর স্যার! আপনি তো ফিডব্যাকই দেননি স্যার। কত এফরট দিয়ে নিজেকে ফিট রেখেছিলাম স্যার, রীতিমত পেটানো চেহারা 
বানিয়েছিলাম স্যার, প্রোটিন পাওডারড ঘাস ছাড়া কিচ্ছুটি দাঁতে কাটতাম না স্যার। আর আপনি স্যার, 
হাড্ডিখানা একটি বারের জন্যে চুষেও দেখলেননা স্যার? কি বাকি রেখেছিলাম চেষ্টায় স্যার, যে আপনি খেয়ে দেয়েই ডাইরেক্ট ল্যাপ্টপ খুলে বসে গেলেন?

-আহা! ও কচি! না ভাই না, কাঁদেনা ভাইটি। কি করব বল ভাই, তোমারও প্রোমোশান নিয়ে টানাটানি, আমারও সেম কেস। 
বসকে হালকা তেল মারতে হালকা তেলে কচি পাঁঠার, ইয়ে মানে তোমার আরকি, ঝোলটা বানালাম ডিনারে, তোমার আধা কিলো 
সাঁটিয়ে হতচ্ছাড়া বলে কিনা এইবছর সেনগুপ্ত ফাটিয়ে কাজ করেছে, আমার নাকি ওর মত আরও প্রোএকটিভ হওয়া উচিৎ ছিল! 
আসলে আমি সেনগুপ্তর মত নিজের ট্যাঁকের কড়ি খসিয়ে রোজরোজ মাল খাওয়াইনি তো, বুঝলে কিনা, তাই সেনগুপ্তর জন্যে গোলাপের বোকে, 
আমার জন্যে গোলাপ কাঁটা। আচ্ছা, তুমিই বল ভাই, এরপর কি আর হাড় চোষা যায় আয়েস করে?

-সেটা তো স্যার আপনার ব্যাপার, আমার জীবনে লাথিটা মাড়তেই হত? আমি তো আপনার কোনও পাকা ধানে কোনোদিন মই দিইনি স্যার।

-আহা, ওই দেখ! কেঁদেকেটে আমার সোফাটাই ভিজিয়ে দিচ্ছ যে! আরে গিন্নী দেখলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ভাইটি! এমনিই প্রোমোশান প্রায় বন্ধ, 
এরপর ভাতরুটিও বন্ধ হয়ে যাবে! বলছি, কান্নাকাটি থামিয়ে বল অন্য কোনও উপায় আছে কিনা, লেটার অফ রেকমেন্ডেশন লিখে দিলে চলবে?

-হেঁহেঁ, অত কষ্ট করতে হবেনা স্যার। এই যে ফিডব্যাক ফর্ম, এটা ভরে দিলেই চলবে। আচ্ছা স্যার, বলছি, মানে প্লিজ সহানুভূতি দেখিয়ে 
ভালো ফিডব্যাক দেবেন না, একদম অনেস্টলি ফিডব্যাকটা দেবেন, তাতে যা হয় আমি মেনে নেব, নাহলে বেকার বদনাম হবে 
ওপরমহলে আমার, বুঝতেই পারছেন।

-কই দাও দাও, দেখি... এই... অ্যা... হ্যাঁ, একবার পড়ে দেখ, কিছু তোমার বক্তব্য থাকলে ডিসকাস করে নিতেই পারো আরকি।

-হ্যাঁ হ্যাঁ স্যার, থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ জানাব স্যার। বাঁচালেন আপনি।

-বেশ বেশ বেশ। তা খুশি তো তুমি এবার? প্রোমোশানটা তাহলে হচ্ছেই নাকি? হেঁহেঁ...

-সবই আপনার দয়া স্যার। আপনার আশীর্বাদ সাথে থাকলে আর ভয় কিসের। আচ্ছা স্যার, তাহলে আমি উঠি?

-হ্যাঁ হ্যাঁ, এস ভাই এস। আচ্ছা ভাই কচি, একটা লাস্ট প্রশ্ন করব ভাই?

-হ্যাঁ স্যার, বলুন না।

-বলছি, ধর তোমার প্রোমোশনটা যদি হয়েই যায়, কথার কথা ধর, বুঝলে কিনা, তাহলে তোমার নেক্সট রোল কি হবে ভাই?

-পাঁঠা থেকে গরু হব স্যার! গত দু-জন্মের ইচ্ছে স্যার গরু হওয়ার। অনেক সেফ পজিশন স্যার। পে-স্কেলও অনেক বেশি। 
প্রায় আড়াইগুণ, জানেন স্যার। কাজের নামে তো নাম নেই, শুধু সকালে একবার করে এক-দু’ লিটার দুধ দিয়ে দাও, ব্যাস, 
তারপর সারাদিন ঠ্যাঙের ওপর ঠ্যাঙ তুলে জাস্ট জাবড় কেটে যাও। তার জন্য আবার সিকিউরিটিরও ব্যবস্থা আছে স্যার! 
একদম খোদ সেন্ট্রাল-গরমেন্ট নিযুক্ত গৌ-রক্ষক স্কোয়াড। এলাহি কাণ্ড, বুঝলেন তো স্যার।

-বাহবাহবাহবাহবাহ, বেশ ভাল ব্যাপারস্যাপার। আচ্ছা, তাহলে ফিডব্যাকটা নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই তো তোমার?

-না স্যার, থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। আমি আসি তাহলে? নাহলে আবার এভালুয়েশন মীটিং শুরু হয়ে গেলে পাঙ্কচুয়ালিটি নিয়ে 
খোঁটা দেবে বাকিরা। আসি স্যার। ভালো থাকবেন।
 

।।২।।

-ওই দেখ, লাঞ্চের পর অনির্বাণদা আবার ঘুমাচ্ছে!

-উঁহু, ঘুমাচ্ছেনা, গভীর ভাবনাচিন্তা করছে। হিহি! ফোনটা বের কর ঝটপট ছবি তুলে রাখ।

-লাঞ্চের পর কাকার ঘুমানোর ছবিতেই আমার গ্যালারী ফুল হয়ে গেল। ওহ কাকা! কি ভাবছ এত চোখ বন্ধ করে? 
নাকি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের প্রস্তুতিতে পাওয়ারন্যাপ নিচ্ছ?

-উঁহু, ঘুমাইনি রে ঘুমাইনি, ভাবছি। আজ কোন কোন ডেটাগুলো পাওয়ারপয়েন্টে দেখালে ইংরেজটা বুঝতে পারবে, সেটাই ভাবছিলাম। 
দিলি আমার কনসেন্ট্রেশনটা ব্রেক করে, টুক করে একখানা হজমোলা কিনে আনিস তো! দুপুরের মাটন বিরিয়ানিটা ডাইজেস্ট হয়নি এখনো। 
যা ভাই যা, কুইক যা, এসে বসছি ডেটাগুলো নিয়ে।
রচনাকাল : ১৫/৪/২০১৭
© কিশলয় এবং Punnag কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger
সমাপ্ত



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 10  France : 2  Germany : 2  India : 211  Ireland : 15  Russian Federat : 4  Saudi Arabia : 3  Ukraine : 34  United Kingdom : 2  
United States : 235  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 10  France : 2  Germany : 2  
India : 211  Ireland : 15  Russian Federat : 4  Saudi Arabia : 3  
Ukraine : 34  United Kingdom : 2  United States : 235  


© কিশলয় এবং Punnag কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
অ্যাপ্রিসিয়েটিং ফিডব্যাক by Punnag is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৩৭৬৫০৪
fingerprintLogin account_circleSignup