কিছু চ্যাংড়া ছেলে রাত্তির হলেই
ভীড় জমায় রাস্তার রুটির দোকানে।
শূন্য পকেটের নিষেধাজ্ঞায়
সবজিহীন রুটির স্বাদ ওরা জানে।
শিশুশ্রমের বিরোধ-মিছিল
হয়ত ওদের আসেনি ত্রিসীমানায় !
ওরা থাকে একপ্রান্তে ইস্যু হয়ে
অন্যপ্রান্ত ব্যস্ত থাকে ভোট গোণায়।
ওদের কেউ হয়ত অনাথ , আবার
কেউ চালচুলোহীন বাউন্ডুলে;
কারো বাবা রিক্সা চালায়,
কারো বাবা পেপার বেচে সাইকেলে।
কারো আবার বাপ-মায়ের হদিশই নেই
কারো আবার রাত কাটে প্রত্যাশায়,
কারো মা সকালবেলায় ফুল বেচে
রাতে ব্য়স্ত থাকে দেহব্যবসায়ে।
কারো বাবা থাকে নেশায় মেতে ;
কারো বাপের সময় কাটে ক্লাবঘরে তাস খেলে;
কারো বাপের ফূর্তি মেটায় নিষিদ্ধপল্লি,
কারো প্রতিবেশী জ্যোৎস্না ঘরে এলে ।
কোন্ কাগজে নোট হয়?কোন্ কাগজে সিলেবাস?
ওদের জানার কোনো নেই প্রয়োজন।
দিনের শেষে ভিক্ষা ক’রে বা বাসন মেজে
খুচরো দশেক টাকাটাই ওদের উপার্জন।
কেউ স্বপ্ন দ্যাখে বিলেত যাবে ভবিষ্যতে,
কেউ টাটা-বিড়লা ফুটপাথের বিছানায় !
কেউ হতে চায় ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার
কেউ মত্ত থাকে নিশ্চিন্তে গাঁজা টানায়।
কেউ চ্যাংড়া ব’লে ডাকে,কেউ শুয়োরের বাচ্চা,
কেউ ভালোবেসে ডাকে কাঙাল ভোজনে।
ওরা জড়ো হয় সমস্ত অপমানগুলো ভুলে
বাড়তি দু’মুঠো ডাল ভাতের সন্ধানে।
ওরা থাকে এভাবেই,মাথার চুল না আঁচড়ে,
ছেঁড়া গেঞ্জি আর হাফপ্যান্টে কাটে উৎসব।
ওদের বাপ-মায়েরাও খোঁজ রাখে না
ওদের প্রতি,শীত-গ্রীষ্ম বা নতুন প্রসব।
কেউ কেউ বাবা-মায়ের নামই জানেনা,
কেউ জানেনা তার ধর্মটা কী?
কেউ পরিচিত শিবু নামে বা ইসফাক,
কেউ নাজায়াস হলেও,সবটাই পোশাকি !
ওরা যতই চেষ্টা করুক সহানুভুতি পেতে,
দামী পরিহিতের কাছে ওরা নোংরা!
ওরা যতই কাতর কন্ঠে ভালোবাসা চা’ক,
সমাজ বলবে নাক সিটকে “যতসব চ্যাংড়া”!
রচনাকাল : ৯/৩/২০১৭
© কিশলয় এবং সৈকত আঢ্য কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।