ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখিকা : অর্পিতা চক্রবর্তী কণ্ঠ
দেশ : India , শহর : কোলকাতা

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , মে
প্রকাশিত ১৭ টি লেখনী ৩৯ টি দেশ ব্যাপী ১৭৬১৬ জন পড়েছেন।
Chakraborty Arpita Kantha
২১ বছর ধরে, অনিতা এই দিনটায় বাড়ির উঠোনে পতাকা উত্তোলন করতে ভোলেনা, এই অভিশপ্ত দিনটা ভোলার নয় ।সেদিন 1999 সালের 26 শে জুলাই ।মমতার একমাত্র সন্তান শহীদ হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর "অপারেশন বিজয় " সম্পন্ন করতে গিয়ে ।প্রথমবার টেলিভিশনের পর্দায় ষাট দিন ব্যাপী দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে চলা এই যুদ্ধ দেখেছিল সারা বিশ্ব ।

কাশ্মীরের সুউচ্চ পার্বত্য এলাকা কার্গিলের দ্রাস সেক্টরে মে মাস থেকে জুলাই মাস অবধি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ চলেছিল।পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা উভয় দেশের নিয়ন্ত্রণরেখা বা লাইন অফ কন্ট্রোল অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করলে এই যুদ্ধ শুরু হয় ।পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীরা প্রতারণা করে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ভারতে প্রবেশ করে।ভারতীয় সেনাবাহিনী বীর বিক্রমের সাথে লড়াই করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করেছিল। দেশের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই বীর জওয়ানদের অসামান্য অবদান ভোলার নয় ।ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে এই দিনটি "কার্গিল বিজয় দিবস" হিসেবে পালন করা হয় । ১৩০০ জন জওয়ান আহত হয়েছিল।শহীদ হয়েছিল প্রায় ৬০০ বীর। তার মধ্যেই অনিতার একমাত্র সন্তানও শহীদ হয়েছিল। জানপ্রাণ দিয়ে লড়েছিল সে, হাতে গুলি লেগেছিল,বেল্ট দিয়ে হাত জড়িয়ে রেখে লড়াই চালিয়েও শেষরক্ষা হয়নি ।বিপক্ষের শত্রুর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেছিল ২০বছরের যুবকের তরোতাজা দেহটা । মায়ের মুখটা, নাকি উচ্চে ওড়া ভারতীয় তেরঙ্গা, নাকি ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার মুখে নরম পানীয়ের বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন "ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর" যা, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে উদ্বুদ্ধ করেছিল আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে কোনটা তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সময় মনে হয়েছিল ? আজও তা অজানা রয়ে গেলো ।

বিগত কুড়ি বছর ধরে গ্রামের সবাই জানে আজ এবাড়িতে পুজো।ঘরের ছেলের ছবিতে মালা পড়িয়ে দিয়ে পতাকা উত্তোলন করে শঙ্খ ও উলুধ্বনি দিয়ে পুষ্পবৃষ্টি করে এই বীর এবং সমস্ত শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে গ্রামের সবাই । পুজোর উপাচার পতাকা,সাদা ফুল মোমবাতি। পাঁচালি পড়েন মা, ছেলের বীরগাথার গল্প পাঁচালীর বিষয়বস্তু । যাতে গ্রামের বাকী মায়েদের সন্তানরাও অনুপ্রাণিত হয়ে দেশসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করতে আগ্রহী হয় তাই এই প্রচেষ্টা ।

সন্তানশোক সহ্য করে বুকে পাথর রেখেও ছেলের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য অনিতা এই দিনটাকে চোখের জলে নয়, গর্বের সাথে স্মরণ করে।ছেলে বলেছিল ,আমার জন্মদিন নিয়ে মাতামাতি পছন্দ নয়, কোন ভালো কাজ করতে পারলে সেদিন মনুষ্যত্বের জন্মলাভ হয়। প্রত্যেক মানুষ নিজের কর্তব্য দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশ ,জনগন,মানুষের সেবায় ভালো কোন কাজ করতে পারলেই তখন তার নতুন জন্ম হয়, সেটাই তার প্রকৃত জন্মদিন । ছেলের জন্মদিনে মায়ের চোখে কি জল মানায়?? তাই অনিতার মুখে আজ শুধুই "জয় হিন্দ " আর চোখ জুড়ে ঐ দূর আকাশের বুকে ছেলের হাসিমুখখানি।
রচনাকাল : ১৬/৭/২০২০
© কিশলয় এবং অর্পিতা চক্রবর্তী কণ্ঠ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Australia : 1  Canada : 14  China : 29  Europe : 4  France : 4  Germany : 5  Iceland : 1  India : 288  Iran, Islamic R : 1  Ireland : 23  
Japan : 3  Latvia : 1  Malaysia : 1  Romania : 1  Russian Federat : 7  Saudi Arabia : 28  Sweden : 12  Ukraine : 7  United Kingdom : 18  United States : 318  
Vietnam : 3  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Australia : 1  Canada : 14  China : 29  Europe : 4  
France : 4  Germany : 5  Iceland : 1  India : 288  
Iran, Islamic R : 1  Ireland : 23  Japan : 3  Latvia : 1  
Malaysia : 1  Romania : 1  Russian Federat : 7  Saudi Arabia : 28  
Sweden : 12  Ukraine : 7  United Kingdom : 18  United States : 318  
Vietnam : 3  
© কিশলয় এবং অর্পিতা চক্রবর্তী কণ্ঠ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর by Chakraborty Arpita Kantha is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১১০০৯৪৫১