আমার জীবনের সেরা শিক্ষক
আনুমানিক পঠন সময় : ৩ মিনিট

লেখিকা : পারমুন সেনগুপ্ত
দেশ : India , শহর : Kolkata

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , আগষ্ট
প্রকাশিত ৩ টি লেখনী ১৫ টি দেশ ব্যাপী ১২৬০ জন পড়েছেন।
                       ছোট শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় কোনো শিক্ষা নিয়ে পৃথিবীতে আসে না। শিশুটিকে সমাজের উপযোগী করে তুলতে প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন মানুষ নানা ভাবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমার জীবনেও বহু মানুষ বিভিন্ন ভাবে আমাকে প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। যাদের মধ্যে কারোর কাছ থেকে আমি পেয়েছি প্রথাগত শিক্ষা, তো কারোর কাছ থেকে পেয়েছি সংস্কার, সহবত বা আনুগত্যের শিক্ষা। আমার জীবনে প্রতি মুহূর্তে কেউ না কেউ কোনো না কোনোভাবে শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে। প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে যাদের কথা না বললেই নয়, তাঁরা হলেন আমার মা, বাবা এবং পরিবারের ছোট-বড় প্রতিটি সদস্য। এছাড়া ঘরের বাইরে, পথ চলতি বহু মানুষের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, যা অভিজ্ঞতা স্বরূপ প্রতি পদক্ষেপে আমাকে ভীষণ ভাবে সাহায্য করেছে। এবার আসি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিষয়ে। বিদ্যালয়ে থাকাকালীন কর্মজীবনে সফলতা অর্জন করার শিক্ষা যেমন পেয়েছি, তেমনি একসাথে অনেক শিশুকে কিভাবে সন্তান স্নেহে পরম মমতায় আগলে রাখতে হয়, সেই শিক্ষাও পেয়েছি  শ্রদ্ধেয়া শিক্ষিকাদের থেকে। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের থেকে পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার শিক্ষাও পেয়েছি। আমি আমার জীবনের প্রতিটি শিক্ষক শিক্ষিকাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আমার জীবনের পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করার জন্য। সকলের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা রেখে বিশেষ একজনের কথা না বললে আমার শিক্ষক দিবসের শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আমার জীবনে সেই শিক্ষককে প্রথম পাই অষ্টম শ্রেণীতে আমার গৃহ শিক্ষিক হিসেবে। জ্ঞানের অগাধ ভান্ডার নিয়ে যিনি খুব অল্প সময়েই হয়ে ওঠেন আমার জীবনের বিস্ময় পুরুষ। প্রতিটা বিষয়ে যেন তার অবাধ বিচরণ। ওনাকে যতই দেখতাম ততই মুগ্ধ হয়ে ভাবতাম, একজন মানুষ কি করে এত জ্ঞানী হতে পারে! প্রথম প্রথম অসম্ভব ভয় পেতাম কিন্তু ধীরে ধীরে ভালোবেসে ফেললাম আমার সেই শিক্ষককে, যেই ভালোবাসা ছিল একজন শিক্ষকের প্রতি ছাত্রীর শ্রদ্ধামিশ্রিত ভালোবাসা। ওনার কাছ থেকে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি পেলাম বিষয়কে ভালোবাসার শিক্ষা। প্রতি মুহূর্তে মনে হতো এই মানুষটার সান্নিধ্য আগে পেলে আমার জ্ঞানের পরিধি অনেক বেশি বিস্তার লাভ করতো। আমার সেই কিংশুক স্যারের সান্নিধ্যে এসেই প্রথমবার জীবনপথে এগিয়ে যাওয়ার একটা দীশা খুঁজে পেলাম। এরপর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি কখনো, কারণ ততদিনে ওনার কাছ থেকে আমি পেয়ে গেছিলাম এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষা। এরপর কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু শিক্ষককে আমি পেয়েছি, যাদের অনেকেই আমার এগিয়ে যাওয়ার পথে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। জীবনের প্রতিটি স্তরে পাওয়া প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষকেরা প্রত্যেকেই আমার মনের মণিকোঠায় বিশেষ স্থান অধিগ্রহণ করে রয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। তবে সর্বপ্রথম যার হাত ধরে নিজেকে খুঁজে পেয়েছি, সেই কিংশুক স্যারই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের আসনে বিরাজমান ছিলেন, আছেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থাকবেন। দূর থেকে কিংশুক স্যারের প্রতি এবং আমার জীবনের সমস্ত শিক্ষক- শিক্ষিকার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ এবং শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি। ওনাদের সকলের চলার পথ মসৃণ হোক, জীবনে কোন বাধা যেন আমার শিক্ষক- শিক্ষিকাকে স্পর্শ করতে না পারে, সকলের জীবন রৌদ্রজ্জ্বল দিনের প্রতিটি কিরণের ছটায় সর্বদা উজ্জ্বল হয়ে থাকুক এটুকুই প্রার্থনা।
রচনাকাল : ৩১/৮/২০২০
© কিশলয় এবং পারমুন সেনগুপ্ত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 4  China : 16  France : 3  India : 137  Ireland : 26  Russian Federat : 15  Sweden : 10  Ukraine : 7  United States : 100  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 4  China : 16  France : 3  
India : 137  Ireland : 26  Russian Federat : 15  Sweden : 10  
Ukraine : 7  United States : 100  
লেখিকা পরিচিতি -
                          পারমুন সেনগুপ্ত ৫ ই অক্টোবর কলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি একজন গৃহবধূ এবং গুজরাটে থাকেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষায় স্নাতকোত্তর করেন। এরপর গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে স্নাতক স্তরে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণ পদক লাভ করেন। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্য চর্চায় আগ্রহী ছিলেন। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের গল্প পড়ে তিনি ভীষণ ভাবে অনুপ্রাণিত হন এবং ২০১৯ সালে প্রথম লেখিকা হিসাবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে সোসাল মিডিয়ার একটি গ্রুপে। সেই থেকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তিনি লেখালেখি করেন। গল্প লেখা ছাড়া রন্ধন বিষয়েও তিনি সমান আগ্রহী। 
                          
© কিশলয় এবং পারমুন সেনগুপ্ত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
আমার জীবনের সেরা শিক্ষক by Parmun Sengupta is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৩৮১০২৩
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী