“কিরে মমতা? কাজে আসছিস না কেনো তিনদিন ধরে? তোর ফোনটাও বন্ধ। কি ব্যাপার?”
“বৌদিমণি তুমি এসেছ! ভেতরে এসো। ওম্মা, জিনিয়া সোনাও এসেছে যে। কি কপাল আমার। জ্বর হয়েছিল বৌদিমণি। মাথা তুলতেই পারিনি এ ক'দিন। ফোনটা চলছেনা। পয়সা ভরতে হবে। কাল থেকে যাবো কাজে।”
“এই নে দেখি। মাস পরে গেছে। তোর মাইনেটা নিয়ে এসেছি। আমি তো ভাবলাম তুই কি কাজ ছেড়ে দিলি নাকি?”
“মিনুর পুতুলটা আমি নেবো মা। আমার ওটাই চাই মা। দে না মিনু আমায়। দেখো না মা, মিনু দিচ্ছেনা। দে না, দে মিনু?”
“কাঁদেনা জিনিয়া। ওটা ওর। ওর তো ঐ একটাই পুতুল।তোমার তো কত খেলনা আছে বাড়িতে।”
“দেখতো মমতা, কি বাজে মেয়ে আমার। খালি বায়না করে, যা দেখে তাই চাই।”
“এই মিনু, দে তাড়াতাড়ি পুতুলটা জিনিয়াদিদিকে। মারবো এবার তোকে।”
“মমতা ওকে মারবি কেনো? মিনুর কোনো দোষ নেই। আমার জিনিয়াটার বড্ড বায়না।
সেই যে সেদিন মমতা মনে আছে তোর? তুই মিনুকে নিয়ে কাজে এসেছিলি আমাদের বাড়িতে। জিনিয়া তখন স্কুলে। মিনুকে আমি জিনিয়ার ক'টা খেলনা দিয়ে খেলতে দিয়েছিলাম। তুই যখন কাজ শেষে ওকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলি, আমি মিনুকে বললাম, ‘বার্বিডলটা বাড়ি নিয়ে যা। নিবি?’
কি সুন্দর বলল, ‘নেবোনা। মা বলেছে যার জিনিস তার বাড়িতে থাকবে। এই পুতুলটার এটাই বাড়ি।ও তো এখানেই থাকে। আমি কেনো নেবো? এখানে বসে খেলে রেখে যাবো’। মিনু আর জিনিয়া প্রায় সমবয়সী। কি করে মিনুকে এমন শিক্ষা দিলি তুই মমতা? আমি যে জিনিয়াকে এমন কিছু শেখাতেই পারলামনা। যা চায় তাই পায় তবুও চাওয়ার শেষ নেই, পাওয়ার ও মূল্য নেই।”
রচনাকাল : ১২/৬/২০২২
© কিশলয় এবং অর্পিতা চক্রবর্তী কণ্ঠ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।