করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বিগত বছরগুলিতে কাজ হারিয়ে দলে দলে গাঁয়ের মাটিতে ফিরে এসেছে বহু শ্রমিক। তাদের সেই অসহায় ছবি প্রতিনিয়ত ভেসে উঠেছিল সংবাদ মাধ্যমের পর্দায়। অনেকে আবার ফিরতে না পেরে আটকে ছিল বিভিন্ন রাজ্যে। কোনও রকমে সামান্য সাহায্যে তাদের মুখে জুটছিলো আহার, সেটাও অনিশ্চিত, কারোর কারোর হয়তো সেটাও জুটেনি নিয়মিত।
একদিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবী আবার শান্ত হবে। আসবে আবার নতুন সকাল, কিন্তু এই শ্রমিকদের জীবনে যে আঁধার নেমে এসেছে সেটা তারা কাটিয়ে উঠবে কীভাবে! তাঁদের জীবন থেকে যদি কলকারখানা, হাতুড়ি পেটানোর আওয়াজ চলে যায়, তাহলে মে দিবস পালনের ওই মুষ্টিবদ্ধ হাত আর কখনও উপরে উঠবে না।
আসুন, আমরা সকলেই আজ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে, কৃষক, শ্রমিক, দুনিয়ার মজদুর সকলের পাশে এসে দাঁড়াই। তবেই এই মেহনতী মানুষের দল আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেন। সমাজ দাঁড়াতে পারবে। আমরা পালন করতে পারব মে দিবস। মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে উঠবে। শ্রমদিবসের লড়াইও সার্থক হবে। দুনিয়ার মজদুর এক হবে। সফল হবে মেহনতী মানুষের সংগ্রাম।
গাহি মে দিবসের গান (বিদ্রোহের গান)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
কবিতার পাতায় বিদ্রোহ আজি,
গাহি মে দিবসের গান,
কৃষক শ্রমিক এগিয়ে এসো
কাস্তে হাতুড়িতে দাও শান।
বিদ্রোহ আজ দিকে দিকে
তাই জ্বলে আগুন চারিদিকে,
লালে লাল হয়ে উদিছে সূর্য
কৃষক শ্রমিকের খুন মেখে।
মশালের লাল আলো জ্বলিছে
ঐ চেয়ে দেখো রাজপথে,
দুনিয়ার মজদুর এক হও আজি
বলো সবাই একসাথে।
জনতার মুখে ফুটে উঠুক শ্লোগান
বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক,
কত শত প্রাণ হলো বলিদান
জানাই তাদের প্রতি শোক।
বিপ্লবের আগুন দিকে দিকে
জ্বলুক জাগো কৃষকের দল,
শ্রমিকের খুনে কল কারখানা
হোক আজিকে অবিচল।
আট ঘন্টার লড়াই শেষ হলো
যখন সূর্য ঢলে অস্তাচলে,
কৃষক শ্রমিক মেহনতী মজদুর
সবে সংগ্রামের কথা বলে।
কবিতার পাতায় বিদ্রোহ আজি,
গাহি মে দিবসের গান,
আমাদের দাবী আট ঘন্টার লড়াই
হোক আজি অবসান।
টাকা দিয়ে যারা শ্রম কিনে নেয়
তারাই হয়ে উঠে ধনী,
কৃষক ও শ্রমিক ঘরে বসে কাঁদে
মহাজনের কাছে ঋণী।
শিক্ষা জাগায় চেতনা আর চেতনা
নিয়ে আসে বিপ্লব,
কল-কারখানা বন্ধ হলো আজি,
শুনি শ্রমিকদের কলরব।
কৃষক ও শ্রমিকের সাথী আমি,
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী নাম,
এস করি সবাই আটঘন্টার লড়াই
জীবনের এক নাম সংগ্রাম।
রচনাকাল : ৩০/৪/২০২২
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।