আজ শুভ মকর সংক্রান্তি। দেশের নানা প্রান্তে এই দিনটি পালন করা হয় শস্যোৎসব হিসাবে। কিন্তু তার বাইরেও এর অন্য একটি গুরুত্বও রয়েছে। এই দিনটিতেই শেষ হচ্ছে সূর্যের দক্ষিণায়ন। এবার শুরু সূর্যের উত্তরায়ন। অর্থাৎ শীতের শেষের সূচনা হচ্ছে এই দিনে।
• বলা হয়, সংক্রান্তি দেবী নাকি এই দিনই শঙ্করাসুর নামের দানবকে বধ করেন।
• মহাভারতেও এই দিনটির উল্লেখ আছে। এদিন নাকি ভীষ্ম ইচ্ছামৃত্যু বরণ করেছিলেন।
• সূর্যদেবতার কথাও আছে পুরানে। সেখানে বলা হয়েছে এই দিনই নাকি তিনি শনির গৃহে এক মাসের জন্য ঘুরতে যান।
• এদিন নাকি দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের যুদ্ধ শেষ হয়েছিল। যুদ্ধে দেবতাদের বিজয় হয়। মৃত অসুরদের মাথা মন্দিরা পর্বতের তলায় পুঁতে দেওয়া হয়।
• এই দিনটিতে নাকি অশুভ শক্তির শেষ হয়ে শুভ শক্তির সূচনা হয়।
• সংক্রান্তির অর্থ গমন করা। সূর্য এদিন মকর রাশিতে গমন করে বলে, এই দিনটিকে আর এক হিসাবেও শুভ বলে ধরা হয়।
• তবে এই দিনটির সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব ফসল তোলার ক্ষেত্রে। নতুন ফসল ঘরে তোলার সূচনা হয় এ দিনই।
• বাঙালি বাড়িতে এদিন পৌষ পার্বণ পালন করা হয়। বানানো হয় পিঠেপুলি, পাটিসাপটা।
• এদিন নিজের গৃহে রাত্রিবাসের নিয়ম মানেন অনেক বাঙালিই।
• পৌষ পার্বণ ছাড়াও মকর সংক্রান্তির সময়ে বাংলায় নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়। গঙ্গাসাগর মেলা তো আছেই, বীরভূমের কেন্দুলি গ্রামে এদিন জয়দেবের মেলাও হয়।
পৌষ মাস মকর সংক্রান্তির কবিতা
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
মকর সংক্রান্তিতে পৌষ মাস শেষ,
নদীঘাটে জমে ভিড় লোকজন বেশ।
রাঙাপথে সারি সারি আসে গরুগাড়ি,
স্নান সারি কেহ কেহ চলে নিজ বাড়ি।
আজি হতে নদীঘাটে বসে পৌষমেলা,
বসেছে দোকানপাট সার্কাসের খেলা।
খোকাখুকি বুড়োবুড়ি সকলেই আসে,
জোকারের খেলা দেখে মুখটিপে হাসে।
নদীঘাটে এসে দেখি সবে স্নান করে,
বাউলেরা গান গায় বসি নদীচরে।
টুসু নিয়ে আসে দেখি যুবতীর দল,
টুসুর ভাসান আজি শুনি কোলাহল।
সারাদিন কাটে ভাল আজি নদীঘাটে,
দিনশেষে পশ্চিমেতে সূর্য বসে পাটে।
দিবা অবসানকাল হয়ে আসে সন্ধ্যে,
লিখিল লক্ষ্মণ তাঁর কবিতার ছন্দে।
রচনাকাল : ১৪/১/২০২২
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।