শিক্ষক দিবস-2021 (দ্বিতীয় পর্ব)
তথ্য সংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
1. প্রিয় শিক্ষক, আমাকে জীবনের প্রতিটি পদে এতখানি উৎসাহিত করার জন্য আমার পাশে থাকার জন্য আর আমাকে ভরসা দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ আমি। আপনার বৃহত্তর আস্থার কারণেই আমি এতখানি আসতে পেরেছি। আজ শিক্ষক দিবনে আপনাকে নতজানু হয়ে প্রণাম করি।
2. আপনি এই বিশ্বে আমার সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক। আমার উপর এতখানি বিশ্বাস রেখেছেন আপনি, আপনার ভরসার কারণেই আমি এতখানি পথ আসতে পেরেছি।
3. আপনার শিক্ষা কেবল ক্লাসে সীমাবদ্ধ নয়, আমাদের জীবনের প্রতিটি ধাপে আমাদের সাহায্য করেছে আপনার শিক্ষা। এমন শিক্ষক পেয়ে আমি গর্বিত!
4. ধৈর্য এবং উদারতা সঙ্গে, আপনি সবচেয়ে জটিল তত্ত্ব সহজ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন আমাকে। আপনার মত শিক্ষক পেয়ে আমার জীবন সার্থক।
5. আপনার শিক্ষার আলো না পেলে আমার পৃথিবী অন্ধকার হত। আপনার ভালোবাসা, সমর্থন এবং উৎসাহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শুভ শিক্ষক দিবস!
আগামীকাল ৫ সেপ্টেম্বর ‘শিক্ষকদিবস’। ডঃ সর্বপল্লিরাধাকৃষ্ণণের জন্মজয়ন্তী। দেশের অগণিত শিক্ষকদের আদর্শগত মহান কর্মকাণ্ডের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁদের পেশাগত অবদানকে স্মরণে-বরণে শ্রদ্ধায় পালন করার জন্য সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মহান শিক্ষক পালন করার রীতি রয়েছে। নির্দৃষ্ট দিনটি বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালন করা হয়ে থাকে। যেমন বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ৫ অক্টোবর, ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। UNICEF থেকেও, ৫ অক্টোবর দিনটিই ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবসের’ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের সর্বমোট ১৯টি দেশে অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ ‘টিচার্স ডে’ পালিত হয়। দেশগুলি হল—কানাডা, জার্মানি, বুলগেরিয়া, আর্জেবাইজান, ইস্তোনিয়া, লিথোনিয়া, ম্যাকেডোনিয়া, মলদ্বীপ, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কুয়েত, কাতার, রাশিয়া, রোমানিয়া, সার্বিয়া, ইংল্যান্ড, মাউরেটিয়াস, মলদোভা। আবার বিশ্বের অন্য ১১টি দেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনটিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস চালু। দেশগুলি হল মরক্কো, আলজেরিয়া, টিউনেশিয়া, লিবিয়া, ইজিপ্ট, জর্ডন, সৌদিআরব, ইয়েমেন, বাহরেইন, ইউ এ ই, ওমান। ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর থেকে ইউনেস্কো দ্বারা ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ দিনটি সূচিত হয়। এটি সারা দেশ-বিদেশে ‘শিক্ষক’ পেশাজীবীদের জন্য সেরা সম্মান। পরবর্তী প্রজন্মও যাতে কার্যকরী ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে এই দিনটি পালন করে সেটাও উদ্দেশ্যা। এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, জাতীয় স্তরে সমগ্র বিশ্বেই একটি বিশেষ দিনকে স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি—যেটি সমাজ-সংস্কার-শিক্ষায় শিক্ষকদের উপযুক্ত মাণ্যতা দান করার যোগ্য দিন।
আমাদের দেশে ভারতের ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণ এর জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসাবে পালিত হয়। ‘ভারতরত্ন’ উপাধি বিভূষিত প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ। মহান দার্শনিক, আদর্শবান বিচারক ছিলেন ডঃ রাধাকৃষ্ণণ। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি। তিনি ছিলেন বাগ্মী, অধ্যাপক, রাজনীতিবিদ এবং অদ্বৈত বেদান্ত বাদ রচয়িতা দার্শনিক।
শোনা যায়, তাঁর কিছু প্রিয় ছাত্র ও অধ্যাপক বন্ধুবান্ধব, তাঁর জন্মদিন পালন করতে আগ্রহান্বিত হলে—রাধাকৃষ্ণণ তাঁদের বলেছিলেন, ‘‘আমার জন্মদিন পৃথক ভাবে পালন না করে আমি গর্বিত হব, দিনটি যদি দেশের সমস্ত শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে পালন করা হয়।’’
পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু বলেছিলেন, ‘‘He has served his nation in many capacities. but above all he is a great teacher from whom all of us have learnt much and will continue to learn.’’
সমাজে শিক্ষকদের সম্মান ও অবদানের জন্য ১৯৬২ সাল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের পঞ্চম দিনটি নির্দৃষ্ট করে, স্কুল-কলেজে নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয়। প্রধানত ছাত্রছাত্রীরা তাদের প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাকে উপহার দেয়। শিক্ষকরাও তাদের আশীর্বাদ স্বরূপ মিষ্টিমুখ করান। বস্তুত একজন ছাত্রছাত্রীর জীবনে যোগ্য শিক্ষকের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষ শিক্ষকই পারেন তার ছাত্রকে নিশ্চিত রূপে আদর্শগত ভাবে রূপান্তর করতে। একজন যথার্থ শিক্ষকই পারেন তাঁর ছাত্রের মধ্যে যথাযথ মনন বুদ্ধি চিন্তাকে বাস্তব রূপে প্রতিফলিত করতে। এবং আগামী জীবনযাত্রায় প্রতিটি উপযুক্ত জীবিকা ও সৎ নাগরিক তথা মানুষ গড়ার কারিগর তাঁরাই।
রচনাকাল : ৪/৯/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।