আশ্চর্য নয় সত্য......অবাক হলেও সত্য ঘটনা
চতুর্থ খণ্ড (চতুর্থ পরিচ্ছেদ)
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
শীত এলেই বিয়ের জন্য নড়েচড়ে বসে সবাই। অর্থাৎ আমাদের এখানে শীত যে বিয়ের মৌসুম, এটা একপ্রকার প্রতিষ্ঠিত হয়েই গেছে। মা, বাবা ও ঘটকরা এই সময়টাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন খুব। কিন্তু আমরা কি জানি, কীভাবে বিয়ে প্রথা শুরু হয়েছিল ? কিংবা কী এর শুরুর ইতিহাস? আরো আছে সারা বিশ্বে বিচিত্র সব বিয়ের আয়োজন। চলুন, সেইসব বিয়ের খবরগুলো জানি।
বিয়ে প্রথার শুরুর খবর
সমাজ বিশেষজ্ঞরা বিয়েটাকে মোটামুটি তিনটি পর্বে ভাগ করেছেন। শুরুর পর্বটা মোটেই সুখকর ছিল না। জোরপূর্বক বিয়েই তখনকার দিনের প্রধান আকর্ষণ ছিল। কোনো গোত্রের মেয়েকে পছন্দ হলে, বাহুবলে তাকে উঠিয়ে এনে রাখা হতো নিজের কাছে। এ নিয়ে খুনোখুনি হতো অবশ্য। কিন্তু সবশেষে আত্মীয়তার মাধ্যমে মীমাংসা হতো বিষয়টার। মেয়ে অপহরণ করে বিয়ে করার উদাহরণ আমরা দেখতে পাই, ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ, মহাভারতে। গ্রিক সাহিত্যেও ভুরিভুরি নজির আছে। তবে প্রাচীন কালে যারা বাহুবলে পারত না, তাদের মধ্য থেকে অনেকে মেয়েকে গোপনে উঠিয়ে এনে নির্জন পাহাড়ে লুকিয়ে রাখত। তারপর পরিস্থিতি শান্ত হলে, গোপন স্থান থেকে বেরিয়ে আসত। আজকের দিনে দূরে, নির্জনে হানিমুন করাও কিন্তু প্রাচীন পদ্ধতির আধুনিকায়ন। আদি কালে বীর ও শক্তিশালী যোদ্ধারা সৈন্য-সামন্ত নিয়ে বাজনা বাজিয়ে কনেকে জোর করে উঠিয়ে আনতে যেত। যুদ্ধে জিতেই তবে মেয়েকে ঘরে আনত। আজও কিন্তু বর- কনের বাড়িতে গেলে কনে পক্ষ গেট আটকে দাঁড়ায়। তবে এ যুদ্ধ মধুর। কিছু বকশিস নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় পর্বটা একটু অপমানকর।
এ পর্বে বিয়ের কনেকে হাটেবাজারে তোলা হতো, ঠিক গরু-ছাগলের মতো। আজকের দিনেও আফ্রিকার কোনো কোনো স্থানে এ প্রথা রয়ে গেছে। আধুনিকভাবে এটাকে বলা হয়, বউবাজার। কনের বাবাকে নগদ অর্থ, গবাদি পশু ও শস্যাদি দিয়ে বউ কিনে আনা হতো। বিয়ের যে ইংরেজি শব্দ সেখানেও এই দেনাপাওনার ব্যাপার আছে। যেমন, ওয়েডিং (wedding) শব্দটি এসেছে অ্যাংলো স্যাকসন শব্দ ওয়েড (wedd) থেকে। এর অর্থই হলো, টাকা-পয়সা, গবাদি পশু যা বিয়ের রাতে কনেকে উপহার দিত তার জীবনের আর্থিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে। ইংল্যান্ডে এই প্রথার চল বহুদিন পর্যন্ত ছিল। তবে আজকের দিনে পদ্ধতি পরিবর্তন হয়েছে। এখন কনের বাবাকে বরং উল্টো কনের সঙ্গে টাকাও দিতে হয়। এটার আধুনিকায়ন হলো যৌতুক প্রথা।
বিয়ের তৃতীয় পর্ব
বিয়ের তৃতীয় পর্বটা এখনও পর্যন্ত তেমন জাঁকিয়ে বসতে পারেনি। তবে দিন দিন এই প্রথার প্রচলন বাড়ছে। সমাজ বিশেষজ্ঞরা তৃতীয় পর্ব বলতে বোঝাচ্ছেন, বর বা কনের পরিবারের কোনো মতামত থাকবে না। এখানেই বর আর কনেই প্রধান। তারা নিজেরা পরস্পরকে পছন্দ করবে এবং মা-বাবাদেরও সেটা মেনে নিতে হবে।
রচনাকাল : ৪/৯/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।