আশ্চর্য নয় সত্য......অবাক হলেও সত্য ঘটনা
দ্বিতীয় খণ্ড (সপ্তম পরিচ্ছেদ)
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
গ্রামটির অনেকেই অদ্ভুত সব আচরণ করছিল। কারো কারো ঘুমই ভাঙছিল না। তো কেউ চোখের সামনে অদ্ভুত এবং ভয়ঙ্কর সব দৃশ্য দেখতে পাচ্ছিলেন।
এভাবে তিন বছর কেটে যায়। তারপর সারাবিশ্বের কাছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের আচরণ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। টানা তিন বছর পর এভাবে কাটানোর পর জানা যায়- তাদের অদ্ভুত আচরণের কারণ।
জানা গেছে, গ্রামটি কাজখস্তানে। ছোট গ্রামটির নাম কালাচি। গ্রামটির শিশু থেকে বয়স্ক- সবার মধ্যেই এই লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল।
২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঘটনাটি ঘটেছিল। গ্রামের ১৬০ জন বাসিন্দা অদ্ভুত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। কারো কারো ঘুমই ভাঙছিল না। এমনও হয়েছে যে টানা ৬ দিন ঘুমিয়েছে কেউ কেউ। তারপর যখন ঘুম ভেঙেছে- যৌন চাহিদা অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল।
আবার কারো চোখের সামনে সারাক্ষণ অদ্ভুত সব দৃশ্য ঘুরে বেড়াত। কখনো বিছানার মধ্যে বিষধর সাপ দেখতে পেতেন, তো কখনো ঘোড়া উড়ে যেতে দেখতে পেতেন কেউ কেউ।
এছাড়া খাবারে অনীহা, মাথা ঘোরানোসহ নানা শারীরিক দুর্বলতা ছিল তাদের মধ্যে। ২০১৪ সালে প্রথম এ নিয়ে সংবাদপত্রে খবর প্রকাশ হয়। সেই খবর সারাবিশ্বের নজর কাড়ে। ওই গ্রামের অসুস্থদের নিয়ে গবেষণা শুরু হয়।
এই রোগের নাম দেওয়া হয় ‘স্লিপি হলো’। রোগের কারণ নিয়ে নানা মতবাদ সামনে আসতে থাকে। পরবর্তীতে এর প্রকৃত কারণ জানা যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, গ্রামটির কাছেই ছিল ইউরেনিয়ামের খনি। খনির বিষাক্ত পদার্থ মিশে জল দূষণের ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে।
২০১৫ সালে কাজাখস্তানের প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। তাতে কারণ হিসেবে বলা হয়, বাতাসে কার্বন মনো-অক্সাইডের অতিমাত্রা এর কারণ।
পরীক্ষায় দেখা যায়, বাতাসে স্বাভাবিক পরিমাণের তুলনায় ১০ গুণ বেশি ছিল কার্বন মনো-অক্সাইডের পরিমাণ। এই রিপোর্ট সামনে আসার পরই এই গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এখন ওই গ্রামে ১২০টি পরিবারের বাস। তারা সকলেই পুরোপুরি সুস্থ আছেন।
সূত্র: আনন্দবাজার
রচনাকাল : ২৭/৮/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।