আশ্চর্য নয় সত্য......অবাক হলেও সত্য ঘটনা
দ্বিতীয় খণ্ড (ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ)
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
জাপানে বিচিত্র কিছু ব্যাংক আছে। জাপানে টিনএজার মেয়ে এবং বিয়েবহির্ভূত নারীদের সন্তান জম্মের পর মেরে না ফেলে গোপনে রেখে আসার ব্যাংক আছে। সেখানে লালন-পালন করার সব রকম ব্যবস্থা আছে। মায়ের দুধ সংরক্ষণ করার ব্যাংকও আছে। ইচ্ছা করলে কোনো মা তার বুকের দুধ ব্যাংকের মাধ্যমে অন্য শিশুকে দিতে পারেন। জাপানে পুরুষের স্পার্ম সংরক্ষণ করার জন্যও ব্যাংক আছে। একই সঙ্গে আছে জাপানে বিদেশি পিতার সন্তানের অধিকার ফিরে পাওয়ার নিরলস প্রচেষ্টা। এমনকি অনশন ধর্মঘটেরও উদাহরণ রয়েছে। টোকিওতে অলিম্পিক শুরুর সময় ফ্রান্সের এক নাগরিক একটানা ২০ দিন অনশন ধর্মঘট পালন করেন। তার অসুস্থ হয়ে পড়ার সংবাদ অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তার এ অনশনে যাওয়ার কারণ দুই সন্তানকে নিয়ে জাপানি স্ত্রীর (সাবেক) গায়েব হয়ে যাওয়া। কোথায় কী অবস্থায় আছে, সে তা জানে না। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রন (ফ্রান্স) অলিম্পিক উপলক্ষে তখন জাপানে ছিলেন। অনশন ধর্মঘট পালন করা লোকের সঙ্গে তিনি নিজে দেখা না করলেও সে দেশের কর্মকর্তাদের কেউ কেউ দেখা করে সহানভূতি জানান। জাপানের পত্রপত্রিকায় প্রায়ই অন্য সংবাদ আসে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ছোট সন্তান নিয়ে নারীদের অন্য পুরুষের সঙ্গে থাকা ও মর্মান্তিক সব ঘটনা। জাপানে বিদেশি পুরুষের সঙ্গে জাপানি নারীদের বিয়ে-শাদি, সন্তান জম্ম নেওয়া ও শেষে সন্তান নিয়ে গায়েব হওয়ার ঘটনা কত আছে, তা জানা না গেলেও বিদেশি নাগরিকদের সন্তানের দাবি করার ঘটনা প্রায়ই জানা যায়। আমেরিকাসহ অনেক দেশ সে দেশের নাগরিকদের পক্ষ নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়ায়। সব দেশেই আইনের শাসন বলে যেমন কথা আছে, আবার আইনের মারপ্যাঁচ বলেও একটা কথা আছে। তবে, জাপানের আইন এ দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা বেশি দেয়। আইনের মারপ্যাঁচ কোন দেশে বেশি আছে এবং বেশি প্রভাবিত হয়, তা সহজেই অনুমেয়।
জাপানের পত্রিকার সংবাদ থেকে জানা যায়, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাঙালি পুরুষের প্রতি জাপানি নারীদের আকর্ষণ বেশি থাকার কারণ- যেহেতু বাঙালিরা স্ত্রীর প্রতি আন্তরিক; অন্য নারীর প্রতি কৌতূহল দেখায় না। কাজ শেষে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসে ইত্যাদি। সমকাল পত্রিকার ২৩ আগস্ট শরীফ ইমরান নামে এক বাঙালি পিতা ও তার জাপানি স্ত্রীর ঘরের তিন কন্যা সন্তানকে ঢাকায় কোর্টে হাজির করা নিয়ে এক সংবাদ পড়ে জাপানের যৎসামান্য বাস্তবতা জানা যায়। শেষে জাপান প্রবাসী জনৈক মিলনের কথা বলে লেখা শেষ করা যাক। সংক্ষেপে- জাপান প্রবাসী মিলন বিয়ে করার পর এক কন্যা সন্তান হয়। জাপানি স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার সময় এ দেশের আইনের লোকজন ছোট মেয়েটাকেই জিজ্ঞাসা করে- সে কার সঙ্গে থাকতে চায়? মেয়েটা তার বাবাকে পছন্দ করে। বাবাও তার মেয়ের জন্য জীবনের সুখ-শান্তি বিলিয়ে দেয়। বিরল যেটা, বড় হয়ে মেয়েটা তার বাবাকে জানায়, আমার কোনো প্রেমিক নেই। তুমি যে ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেবে, আমি তাকেই বিয়ে করব। মিলন রংপুরে তার ভাগ্নের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। বলছে, মেয়ের জন্য দেশেও আমি অনেক কিছু করে রেখেছি। এখন ওদের ইচ্ছা জাপানে- থাকবে, নাকি বাংলাদেশে থাকবে।
রচনাকাল : ২৭/৮/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।