আশ্চর্য নয় সত্য......অপ্রিয় হলেও সত্য ঘটনা (অষ্টম পরিচ্ছেদ)
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
যে জঙ্গলে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ, নারীরা যান পোশাক খুলে
শিরোনাম পড়েই রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে নিশ্চয়ই! এমনও জঙ্গল আছে না-কি বিশ্বে? সত্যিই এমন এক জঙ্গলের অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় টোনোটিওয়াট ম্যানগ্রোভে। খুবই সুন্দর এই ম্যানগ্রোভ বনটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এক স্থান।
জানা-অজানা অসংখ্য প্রজাতির গাছ, পশু-পাখিসহ ছোট ছোট খাল আছে এই জঙ্গলে। তবে এই জঙ্গলের বিশেষত্ব হলো নারীরা এখানে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারেন। কারণ টোনোটিওয়াট নামক এই জঙ্গলে চাইলেই যে কেউ প্রবেশ করতে পারে না।
পুরুষদের এই জঙ্গলে প্রবেশ নিষেধ। আর নারীরা ঢুকেন পোশাক খুলে নগ্ন হয়ে। টোনোটিওয়াট অর্থ হচ্ছে নারীদের অরণ্য। অবশ্য টোনোটিওয়াটের অর্থ ম্যানগ্রোভে স্বাগতও হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় এই ম্যানগ্রোভটি তাই নারীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় এক স্থান।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জয়পুরার ক্যামপাং এনগ্রোসের মাঝামাঝি ওই ম্যানগ্রোভ অরণ্যটি ছড়িয়ে আছে প্রায় ৮ হেক্টর এলাকা জুড়ে। জানা যায়, পাপুয়াবাসীর পছন্দের খাবার ঝিনুক এবং নানা রকম ফলের জোগান দেয় এই অরণ্য।
আর এসব খাবার ও ফল সংগ্রহ করতেই নারীরা পোশাক খুলে নগ্ন হয়ে ঢুকেন টোনোটিওয়াট বনে। জঙ্গল ও জলাভূমিতে তারা দল বেঁধে ঘুরে বেড়ান। জঙ্গলে প্রবেশের পর একত্রিত হয়ে শপথ নেন জঙ্গলে থাকাকালীন কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না।
সমুদ্র ঘেঁষা এ জঙ্গলের জলাভূমিতে নেমে ঝিনুক সংগ্রহ করেন নারীরা। কাদা-পানিতে পোশাক নষ্ট হওয়ার কারণেই হয়তো তারা নগ্ন হয়ে বনে ঢুকেন। তবে এই অদ্ভূত নিয়ম কবে চলমান তা জানেন না কেউ।
স্থানীয়দের মতে, তারাও মা-নানীর কাছ থেকে একই কাহিনী শুনে আসছেন। এ জঙ্গলের সঙ্গে স্থানীয়দের সখ্যতা ১৮০৮ সাল থেকে। আরও অবাক করা বিষয় হলো, এ বনে যতক্ষণ নারীরা থাকেন; তারা গলা ছেড়ে গান ধরেন। তাদের এই গান শুনেলে পুরুষরা টের পান জঙ্গলে নারীরা আছেন।
ভুল করে ঢুকে যাতে পুরুষরা জঙ্গলে ঢুকে না পড়েন সে কারণেই নারীরা তাদের সুমধুর কণ্ঠে গান গেয়ে ও কাজ করে সময় কাটান। যদি কোনো পুরুষ ভুলবশত ঢুকেও পড়েন, তবে তাকে জরিমানা বাবদ গুনতে হয় ১০ লাখ টাকা।
এই অরণ্যে পুরুষরা প্রবেশ করতে পারে শুধু কাঠ সংগ্রহের জন্য। তবে পুরুষরা চাইলেই প্রবেশ করতে পারবেন না। আগে তাদের নিশ্চিত হতে হয় যে জঙ্গলে কোনো নারী নেই। নারী থাকাকালীন পুরুষরা জঙ্গলে প্রবেশ করলে তার চরম শাস্তি ও জরিমানা নিশ্চিত করে উপজাতি আদালত।
সূত্র: বিবিসি/ গ্লোবাল নিউজ ইনসাইডার
যে শহরের মানুষ-পশু সবাই পাথর হয়ে গিয়েছিল
সাধারণত এমন ঘটনা শুধুমাত্র গল্পে শোনা যায়। যেখানে মানুষ থেকে পশু সবাই পাথর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ইতালিতে এমন একটি প্রাচীন শহর আছে যেখানে এমন ঘটনা বাস্তবে ঘটেছিল।
একটি ছিমছাম শহর। গোটা কয়েক মানুষের বাস। তবে হঠাৎ করেই এক দুর্যোগ নেমে এসেছিল ইতালির সেই শহরটিতে। সেই দুর্যোগে শেষ হয়ে গিয়েছিল পুরো শহরই। শুধু পড়েছিল সেই শহরে বাস করা মূর্তিগুলোই।
কথা বলছি পম্পেই শহরের কথা। প্রায় ১৯৪০ বছর আগে এই শহরে এমন একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যার জেরে শহরটি ধূলিসাৎ হয়ে যায়।
এই জায়গা থেকে বৈজ্ঞানিকরা এমন কিছু প্রমাণ পেয়েছে যার ভিত্তিতে বলা হয় সেই সময় একটা মানুষও বাঁচতে পারেনি। এই শহর প্রায় ৭০ একর জমির ওপর ছড়িয়ে ছিল। এই শহরের গুহা দেখে অনুমান করা হয় যে শহরটিতে প্রায় ১১ থেকে ১৫ হাজার লোক বসবাস করত। কয়েক বছর আগে এই এলাকায় একটি ঘোড়ার দেহের অংশ পাওয়া গিয়েছে।
যে অংশটি সম্পূর্ণভাবে পাথর হয়ে গিয়েছে। এমন অনেক পাথরের অংশ এই এলাকা থেকে প্রায়শই উদ্ধার হয়ে থাকে। উদ্ধার হওয়া এই অংশগুলো দেখে মনে হয় যেন, তাদের মধ্যে কোনোদিনই প্রাণ ছিল না, এগুলো কোনো পাথরের মূর্তি। কিন্তু এই পাথরের মূর্তিগুলোর পেছনের সত্য ঘটনা মানুষ জানতে পেরে ভয়ে আঁতকে ওঠে।
পম্পেইয়ের কাছে নেপাল্সের খাড়িতে একটি আগ্নেয়গিরি আছে। যার নাম মাউন্ট বিউবিয়াস। অনেক বছর আগে হঠাৎ এই আগ্নেয়গিরিটি ফেটে যায়। যার ফলে ভারী মাত্রায় লাভা এবং বিভিন্ন ধরনের জৈব পদার্থ বের হয়। যার ফলে বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
পম্পেই শহরের বাসিন্দারা শহর ছেড়ে পালানোর আগেই এই আগ্নেয়গিরির লাভা এসে শহরটিকে তছনছ করে দেয়। এই কারণেই এই এলাকা এতটাই গরম হয়ে যায় যার জেরে মানুষের রক্ত ফুটন্ত হয়ে পড়ে এবং মাথার ঘিলু ফেটে যায়। এই জৈব পদার্থের সম্পর্কে আসার ফলে এই শহরের বাসিন্দাদের ভয়াবহ মৃত্যু হয়। পরবর্তী সময়ে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার ফলে লাভা শক্ত হয়ে যায়। যার কারণেই মানুষের শরীর পাথর হয়ে যায়।
রচনাকাল : ২৫/৮/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।